কঠিন সময়ের মধ্যে দিয়ে যাওয়া বার্সেলোনা তৃতীয় সারির এই দলের বিপক্ষেও শুরুতে গোল খেয়ে বসেছিল।
Published : 19 Jan 2024, 01:30 AM
নামে-ভারে কিংবা শক্তি-সামর্থ্যে, দুই দলের মাঝে পার্থক্য অনেক। তবে, বল মাঠে গড়াতেই তা যেন ভুলিয়ে দিতে চাইল তৃতীয় স্তরের দল ইউনিয়নিস্তাস দে সালামানকার। চমৎকার এক গোলে এগিয়েও যায় উজ্জীবিত দলটি। পরে অবশ্য ঘুরে দাঁড়িয়ে জয় তুলে নেয় বার্সেলোনা।
প্রতিপক্ষের মাঠে বৃহস্পতিবার ৩-১ গোলে জিতে কোপা দেল রের কোয়ার্টার-ফাইনালে উঠেছে শাভি এর্নান্দেসের দল। আলভারো গোমেসের গোলে বার্সেলোনা পিছিয়ে পড়ার পর সমতা টানেন ফেররান তরেস। তাদের পরের গোল দুটি করেন জুল কুন্দে ও আলেহান্দ্রো বাল্দে।
চলতি মৌসুমে খুব একটা ভালো সময় কাটছে না বার্সেলোনার। দলটিকে সবচেয়ে বেশি ভোগাচ্ছে পারফরম্যান্সের অধারাবাহিকতা। গত রোববার যেমন তারা স্প্যানিশ সুপার কাপের ফাইনালে রেয়াল মাদ্রিদের বিপক্ষে উড়ে গেছে ৪-১ গোলে। তাতে বিশেষ করে কোচ শাভির দিকে ধেয়ে আসছে সমালোচনার তির।
তাই পুঁচকে ইউনিয়নিস্তাসের বিপক্ষে শেষ পর্যন্ত জয় মিললেও, বার্সেলোনার পারফরম্যান্স নিয়ে উদ্বিগ্ন হওয়ার যথেষ্ট কারণ আছে।
তারকা ফরোয়ার্ড রবের্ত লেভানদোভস্কি এবং গুরুত্বপূর্ণ দুই মিডফিল্ডার পেদ্রি ও ইলকাই গিনদোয়ানকে বেঞ্চে রেখে নামা দলটি ম্যাচ শুরু হতেই গোল খেতে বসেছিল। প্রথম মিনিটে নিজেদের অর্ধে ফাউল করে বসে তারা। এরপর ফ্রি কিকে বল ধরে ক্ষিপ্র গতিতে আক্রমণে উঠে বক্সের বাইরে থেকে জোরাল শট নেন মারিও লোসাদা। পোস্ট ঘেঁষে বল বাইরে চলে গেলে হাফ ছাড়ে লা লিগার বর্তমান চ্যাম্পিয়নরা।
এরপর অবশ্য দ্রুতই নিজেদের গুছিয়ে নেয় বার্সেলোনা। একচেটিয়া বল দখলে রেখে একের পর এক আক্রমণ করতে থাকে তারা; কিন্তু পাচ্ছিল না জালের দেখা।
এর মাঝেই ৩১তম মিনিটে অসাধারণ এক গোলে বার্সেলোনাকে স্তম্ভিত করে দেয় স্বাগতিকরা। বাঁ দিকের সাইডলাইন থেকে সতীর্থের ক্রস ডি-বক্সে পেয়ে ডান পায়ের দুর্দান্ত ভলিতে বল জালে পাঠান স্প্যানিশ মিডফিল্ডা গোমেস।
৪৪তম মিনিটে বার্সেলোনার রক্ষণে ফের ভীতি ছড়ায় ইউনিয়নিস্তাস। এবার অবশ্য হোর্হে রাস্ত্রোহোর শট ঠেকিয়ে ব্যবধান বাড়তে দেননি গোলরক্ষক ইনাকি পেনা।
পরের মিনিটেই দারুণ এক গোলে দলকে স্বস্তিতে ফেরান তরেস। প্রতিপক্ষের একটি আক্রমণ সামলে দ্রুত পাল্টা আক্রমণ শাণায় তারা। জোয়াও ফেলিক্সের পাস ধরে সবাইকে পেছনে ফেলে ডি-বক্সের মুখ থেকে কোনাকুনি শটে ঠিকানা খুঁজে নেন স্প্যানিশ ফরোয়ার্ড।
বিরতির পরও একইভাবে পজেশন ধরে রেখে আক্রমণের চেষ্টা করতে থাকে বার্সেলোনা। কিন্তু প্রতিপক্ষের তেমন পরীক্ষা নিতে পারছিল না কেউ।
অবশেষে কুন্দের একক নৈপুণ্যে এগিয়ে যায় বার্সেলোনা। সতীর্থের ছোট পাস পেয়ে প্রায় ৩৫ গজ দূর থেকে বুলেট গতির শটে গোলটি করেন ফরাসি এই ডিফেন্ডার।
দুই মিনিট পর আরেক ডিফেন্ডার বাল্দের গোল; দারুণ ক্ষিপ্রতায় বাঁ দিক দিয়ে ডি-বক্সে ঢুকে দুরূহ কোণ থেকে জোরাল শট নেন তরুণ এই লেফট-ব্যাক, বল ক্রসবারের নিচের দিকে লেগে জালে জড়ায়।
পরপর দুই গোল খেয়ে কিছুক্ষণের জন্য যেন খেই হারিয়ে ফেলে ইউনিয়নিস্তাস। তবে শেষ দিকে আবারও চাপ দেয় তারা।
নির্ধারিত সময়ের শেষ মিনিটে তো দারুণ দুটি সুযোগও তৈরি করে তারা; কিন্তু দুর্দান্ত ডাবল সেভে বার্সেলোনাকে জয়ের পথে রাখেন পেনা। প্রথমে স্লাভির নিচু শট ঝাঁপিয়ে ফেরানোর পর অন্যপাশ থেকে গোমেসের বুলেট গতির শট আবার ঝাঁপিয়ে কোনোমতে এক হাত দিয়ে বাইরে পাঠান এই স্প্যানিয়ার্ড।
পাঁচ মিনিট যোগ করা সময় কাটিয়ে জয়ের স্বস্তিতে মাঠ ছাড়ে কোপা দেল রের রেকর্ড চ্যাম্পিয়নরা।