“একটি বড় ব্যবসায়ী প্রতিনিধিদল নিয়ে ঢাকায় আসছেন। এই সফরের মাধ্যমে ব্রাজিলের সাথে আমাদের বাণিজ্যিক সম্পর্ক, আমাদের কূটনৈতিক সম্পর্ক দুটোই শক্তিশালী হবে,” বলেন মন্ত্রী।
Published : 03 Apr 2024, 09:45 PM
আর্জেন্টিনার পর এবার ফুটবলের আরেক পরাশক্তি ব্রাজিলের সঙ্গে খেলাধুলায় সহযোগিতার সমঝোতা স্মারক সই করতে যাচ্ছে বাংলাদেশ।
ব্রাজিলের পররাষ্ট্রমন্ত্রী মাউরো ভিয়েরার আসন্ন সফরে এই সমঝোতা স্মারক সই হবে বলে বুধবার পররাষ্ট্রমন্ত্রী হাছান মাহমুদ জানিয়েছেন।
পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে সাংবাদিকদের প্রশ্নে তিনি বলেন, ব্রাজিলের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ৭ ও ৮ এপ্রিল বাংলাদেশ সফর করবেন।
“একটি বড় ব্যবসায়ী প্রতিনিধিদল নিয়ে ঢাকায় আসছেন। এই সফরের মাধ্যমে ব্রাজিলের সাথে আমাদের বাণিজ্যিক সম্পর্ক, আমাদের কূটনৈতিক সম্পর্ক দুটোই শক্তিশালী হবে।”
ব্রাজিলের পররাষ্ট্রমন্ত্রীর সফরে একটি চুক্তি ও তিনটি সমঝোতা স্মারক সই হওয়ার কথা জানিয়ে হাছান মাহমুদ বলেন, “কারিগরি সহযোগিতা চুক্তি সই হবে। খেলাধুলা, কৃষি এবং প্রতিরক্ষা সহযোগিতার বিষয়ে সমঝোতা স্মারক সই হওয়ার কথা রয়েছে।”
প্রথমবারের মত উচ্চ পর্যায়ের সফরে ঢাকা আসছেন দক্ষিণ আমেরিকার দেশ ব্রাজিলের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ভিয়েরা। পররাষ্ট্রমন্ত্রী হাছান মাহমুদের সঙ্গে দ্বিপক্ষীয় বৈঠকের পাশাপাশি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে সাক্ষাৎ করবেন তিনি।
গত বছরের ফেব্রুয়ারিতে আর্জেন্টিনার পররাষ্ট্রমন্ত্রী সান্তিয়াগো কাফিরোর ঢাকা সফরে দেশটির সঙ্গে ফুটবলে সহযোগিতার ক্ষেত্রে একটি সমঝোতা স্মারক সই করেছিল বাংলাদেশ।
ফুটবল সহযোগিতার বিষয়ে চুক্তির বিষয় তুলে ধরে তখনকার পররাষ্ট্রমন্ত্রী মোমেন বলেছিলেন, “তারা ফুটবলে বিশ্ব চ্যাম্পিয়ন, আমাদের ছেলেমেয়েরা ওখানে যাবে, ট্রেইনিং নেবে এবং সলিড সম্পর্ক গড়ে তুলতে পারব।”
তিনি বলেন, “সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ হচ্ছে, তারা আমাদের লোকদের প্রশিক্ষণ দিতে সম্মত হয়েছে, কীভাবে ফুটবল খেলতে হবে, এটা আমাদের জন্য প্লাস প্লাস।
“এর মাধ্যমে আমরা টেকনিক জানতে পারব। আশা করি, তাদের মত না হলেও তাদের কাছাকাছি রকমের খেলতে পারব আমরা। আমি সেটার অপেক্ষায় আছি।”
এবার ব্রাজিলের পররাষ্ট্রমন্ত্রীর সফরে একই রকমের একটি চুক্তি হওয়ার কথা বুধবার জানান পররাষ্ট্রমন্ত্রী হাছান মাহমুদ।
তার সফরকে ‘অত্যন্ত তাৎপর্যপূর্ণ’ হিসাবে বর্ণনা করে তিনি বলেন, “সফরে ২৪ জনের একটি বড় বিজনেস ডেলিগেশন আসছে। আমাদের এফবিসিসিআই তাদের সাথে বৈঠক করবে।
“ব্রাজিল থেকে আমরা ভোজ্যতেল ও অন্যান্য পণ্য আমদানি করি। দক্ষিণ আমেরিকায় আমাদের রপ্তানি অনেকটাই 'আনএক্সপ্লোরড' রয়ে গেছে। ব্রাজিল বড় দেশ, তাদের ক্রয়ক্ষমতাও বেশি, ফলে তাদের সাথে বাণিজ্য সম্পর্ক বৃদ্ধির ব্যাপক সুযোগ রয়েছে।”
ব্রাজিল থেকে চিনি, ভোজ্যতেল ও গমসহ বিভিন্ন নিত্যপণ্যের পাশাপাশি তৈরি পোশাক শিল্পের জন্য বিপুল পরিমাণ তুলাও আমদানি করে বাংলাদেশ।
ব্রাজিলের তুলা কেনার ক্ষেত্রে বাংলাদেশ রয়েছে বিশ্বে চতুর্থ স্থানে। ২০২২-২৩ সালে ব্রাজিল থেকে ২৩৩ টন তুলা আমদানি করেছে বাংলাদেশ; ২০২৩-২৪ সালে এখন পর্যন্ত ১৩২ টন আমদানি হয়েছে।
বাংলাদেশ ব্যাংকের হিসাবে ২০২২-২৩ সালে ব্রাজিল থেকে ৬ হাজার ৬৩ কোটি টাকার তুলা আমদানি করেছে বাংলাদেশ। তার আগের বছর এই অঙ্ক ছিল তিন হাজার ৯৫৩ কোটি টাকা।
নিজ দেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রীর এই সফরকে দুদেশের দ্বিপক্ষীয় সম্পর্কের ‘মাইলফলক’ হিসাবে বর্ণনা করে ফেব্রুয়ারিতে এক অনুষ্ঠানে ঢাকায় ব্রাজিলের রাষ্ট্রদূত পাওলো ফার্নান্দো দিয়াস ফেরেস বলেছিলেন, “এর মাধ্যমে আমরা সম্পর্ককে আরো মজবুত করতে পারব।”