বাংলাদেশ ফুটবল ফেডারেশন, ফিফা
একই ঘটনায় বাফুফের সাবেক ফিন্যান্স কমিটির চেয়ারম্যান ও সিনিয়র সহ-সভাপতি সালাম মুর্শেদিকে জরিমানা করেছে ফিফা।
Published : 23 May 2024, 07:46 PM
আর্থিক কেলেংকারির দায়ে আগে থেকেই নিষেধাজ্ঞায় থাকা বাংলাদেশ ফুটবল ফেডারেশনের (বাফুফে) সাবেক সাধারণ সম্পাদক আবু নাঈম সোহাগের শাস্তির মেয়াদ বেড়েছে। অধিকতর তদন্তের পর সাবেক এই ফুটবল কর্মকর্তাকে নতুন করে তিন বছরের জন্য নিষিদ্ধ করেছে ফিফা।
অভিযোগ প্রমাণিত হওয়ায় গত বছর এপ্রিলে সোহাগকে দুই বছরের নিষেধাজ্ঞা দিয়েছিল বৈশ্বিক ফুটবলের নিয়ন্তা সংস্থাটি। সেই অভিযোগের অধিকতর তদন্তের পর বৃহস্পতিবার তাকে তিন বছরের নিষেধাজ্ঞা দিল ফিফার এথিকস কমিটি। এদিন থেকে কার্যকর হবে এই শাস্তি।
এছাড়া চিফ ফিন্যান্সিয়াল অফিসার আবু হোসেন ও ম্যানেজার (অপরারেশন্স) মিজানুর রহমানকে নিষিদ্ধ করেছে ফিফা। আর সেসময়কার বাফুফের ফিন্যান্স কমিটির চেয়ারম্যান ও সিনিয়র সহ-সভাপতি সালাম মুর্শেদিকে করা হয়েছে জরিমানা।
ফিফার পাঠানো মেইলে উল্লেখ করা হয়েছে, ফুটবলের সব ধরণের কর্মকাণ্ড থেকে নিষিদ্ধ থাকবেন সোহাগ এবং পাশাপাশি তাকে জরিমানা দিতে হবে ২০ হাজার সুইস ফ্রাঁ। প্রথম শাস্তির ঘোষণাও তাকে জরিমানা করা হয়েছিল, ১০ হাজার সুইস ফ্রাঁ।
তাদের বিরুদ্ধে মূল অভিযোগ ছিল, ২০১৭ সাল থেকে ২০২০ সাল পর্যন্ত সময়ে ফিফার ফান্ডের অপব্যবহার করা হয়েছে। গত বছর এপ্রিলে ফিফার বিবৃতিতে বলা হয়, বাফুফেকে দেওয়া ফিফার ফান্ডের খরচের হিসাব দিতে ভুয়া কাগজপত্র দাখিল করা হয়েছে। ফান্ডের অর্থ খরচ সংক্রান্ত বিষয়ে বাফুফের দেওয়া তথ্য পর্যালোচনা করে তদন্তে ও শুনানিতে গলদ ধরা পড়ে।
গত বছর ফেব্রুয়ারিতে ফিফার সদরদপ্তরে ডাক পড়েছিল সোহাগসহ বাংলাদেশ ফুটবল ফেডারেশনের আরও তিন কর্মকর্তার। এর বেশ কিছুদিন আগে ফিফা বাফুফেতে তাদের প্রতিনিধি বসিয়ে অডিট প্রতিবেদনগুলো তদন্ত করেছিল। সেই তদন্ত করতে গিয়ে ওই ফান্ডের ব্যয়ের হিসাবে নানা অসংগতি মেলে।
ওই কাণ্ডের পর আবু হোসেন ও মিজানুর রহমান পদত্যাগ করেন। দুজনকেই ফিফার এথিকস কমিটি ফুটবলের সব ধরণের কর্মকাণ্ড থেকে দুই বছরের জন্য নিষিদ্ধ করা হয়েছে। পাশাপাশি দুজনকেই জরিমানা গুণতে হবে ১০ হাজার সুইস ফ্রাঁ করে।
আর আব্দুস সালাম মুর্শেদীকে শুধু আর্থিক জরিমানা করা হয়েছে ১০ হাজার সুইস ফ্র্যাঁ।
অভিযোগ থেকে মুক্তি মিলেছে বাফুফের প্রকিউরমেন্ট ও স্টোর অফিসার ইমরুল হাসান শরিফের। তবে ফিফা তাকে ভবিষ্যতের জন্য সতর্ক করে দিয়েছে এবং তাকে ফিফার অধীনে ক্রয় সংক্রান্ত বিষয়ে ট্রেনিংয়ে অংশ নিতে হবে।
ভিন্ন ভিন্ন শুনানি এবং সবকিছু সতর্কতার সাথে বিশ্লেষণ করে সিদ্ধান্তগুলো এথিকস কমিটি নিয়েছে বলেও উল্লেখ করা হয়েছে মেইলে।
বাফুফে তাদের ক্রয়সংক্রান্ত কমিটি করে ২০২১ সালে ডিসেম্বরের। নিষিদ্ধ হওয়ার কিছুদিন পর গত বছর মে মাসে সংবাদ সম্মেলন করে সোহাগ নিজেকে নির্দোষ দাবি করে বলেছিলেন আপিল করার কথা। বলেছিলেন, ‘সময়ই সকল কিছুর উত্তর দেবে।”
সোহাগের দাবি ছিল, এই কমিটি গঠনের আগ পর্যন্ত যে কোনো ক্রয় সংক্রান্ত বিষয়ে ফিফাকে আগে থেকে অবহিত করে এবং তাদের ‘অনুমোদন’ নিয়ে সিদ্ধান্ত বাস্তবায়ন করতেন তারা। এই যুক্তিতে নিজের কোনো দায় ছিল বলে মানতে নারাজ ছিলেন তিনি। তবে, আইনি বাধ্যবাধকতার কারণে নিজেকে সরাসরি ‘নির্দোষ’ দাবিও করেননি সোহাগ।