স্প্যানিশ ফুটবল
আর্জেন্টাইন মহাতারকার সঙ্গে তুলনা ভালো লাগলেও নিজের মতো হতে চান স্প্যানিশ এই তরুণ উইঙ্গার।
Published : 13 Sep 2024, 03:59 PM
ইতিহাসের সেরা ফুটবলারের সঙ্গে তুলনায় নাম এলে কার না ভালো লাগে। লামিনে ইয়ামালের ক্ষেত্রেও ব্যতিক্রম নয়। লিওনেল মেসির সঙ্গে তার যে মিল খোঁজা হয়, সেটা উপভোগ করেন বার্সেলোনার এই তরুণ সেনসেশন। তবে মেসি নয়, নিজের মতো হতে চান তিনি।
একই সঙ্গে ইয়ামাল বললেন, আর্জেন্টাইন মহাতারকার পর্যায়ে পৌঁছানো অসম্ভব।
মেসির মতোই বার্সেলোনার বিখ্যাত একাডেমি লা মাসিয়ায় বেড়ে উঠেছেন ইয়ামাল। নিজের সামর্থ্য দেখিয়ে কাতালান ক্লাবটির মূল দলে জায়গা করে নিয়েছেন ১৫ বছর বয়সেই। বার্সেলোনার সুদীর্ঘ ইতিহাসে সর্বকনিষ্ঠ (১৫ বছর ২৯০ দিন) ফুটবলার হিসেবে মূল দলের হয়ে মাঠে নামার রেকর্ড তার! স্পেনের শীর্ষ ফুটবলে তার চেয়ে কম বয়সে খেলেছেন আর স্রেফ চার জন।
গত অক্টোবরে গ্রানাদার বিপক্ষে জালের দেখা পেয়ে রেকর্ডের আরেকটি পাতায় নিজের নাম লেখান ইয়ামাল। লা লিগার ইতিহাসে সবচেয়ে কম বয়সে গোল করার কীর্তি গড়েন তিনি (১৬ বছর ৮৭ দিন)।
এরপর একের পর এক ম্যাচে দারুণ পারফরম্যান্স করতে থাকেন ইয়ামাল। তার মোহনীয় ড্রিবলিং, দুর্দান্ত সব স্কিল ও বাঁ পায়ের কারুকাজ ফুটবল বিশ্বে ছড়ায় মুগ্ধতা। শুরু হয় বার্সেলোনা ও আর্জেন্টিনার ইতিহাসের সেরা ফুটবলারদের একজন মেসির সঙ্গে তার তুলনা।
২০২৪ ইউরোয় চোখধাঁধানো পারফরম্যান্স উপহার দিয়ে নিজেকে আরও উচ্চতায় তুলে নেন ইয়ামাল। এই টুর্নামেন্টের সর্বকনিষ্ঠ খেলোয়াড় হিসেবে মাঠে নামার রেকর্ডও গড়েন তিনি। স্পেনের চতুর্থবার ইউরোপ সেরার মুকুট জেতায় রাখেন বড় অবদান। একটি গোলের পাশাপাশি ৪টি অ্যাসিস্ট করে আসরের সেরা উদীয়মান খেলোয়াড়ের পুরস্কার জেতেন এই উইঙ্গার।
বিশ্বকাপ জয়ী মেসির সঙ্গে তুলনা নিয়ে সম্প্রতি স্প্যানিশ টিভি স্টেশন ‘আন্তেনা ত্রি’ তে ইয়ামাল বলেন, “তারা (মানুষ) আমাকে ইতিহাসের সেরা ফুটবলারের সঙ্গে তুলনা করে, আমার ভালোই লাগে। তবে আমি নিজের মতো হতে চাই। আর মেসির পর্যায়ে পৌঁছানো অসম্ভব।”
ইয়ামাল আরও বেশি আলোচনায় আসেন ছয় মাস বয়সে মেসির সঙ্গে তার কিছু ছবি নেট দুনিয়ায় ছড়িয়ে পড়ার পর। ২০০৭ সালে তোলা ছবিগুলোর সময় ইয়ামালের বয়স ছিল ৬ মাস। ইউনিসেফের সঙ্গে যৌথ উদ্যোগে কাতালান পত্রিকা দিয়ারো স্পোর্তের একটি চ্যারিটি ক্যালেন্ডারের জন্য তোলা অনেক ছবির মধ্যে ছিল সেগুলোও।
কে জানত, মেসির সঙ্গেই এত বছর পর সেই ইয়ামালের মিল খোঁজা হবে। সেটি নিয়ে কিছুটা মজাও করলেন ১৭ বছর বয়সী স্প্যানিয়ার্ড।
“তিনি (মেসি) তার কিছু ক্ষমতা আমাকে দিয়েছেন। আমার এখনও অনেক কিছু দেওয়ার আছে।”
ইউরোতে যে একটি গোল করেছেন ইয়ামাল, সেটিই জায়গা করে নিয়েছে টুর্নামেন্ট সেরা গোল হিসেবে। ফ্রান্সের বিপক্ষে সেমি-ফাইনালে তার অবিশ্বাস্য গোলে সমতা টানার পর দানি ওলমোর গোলে ২-১ গোলে জেতে স্প্যানিশরা। একই ব্যবধানে ফাইনালে ইংল্যান্ডকে হারিয়ে শিরোপা ঘরে তোলে তারা।
ইংলিশদের বিপক্ষে শিরোপার মঞ্চেও আলো ছড়ান ইয়ামাল। নিকো উইলিয়ামসের করা প্রথম গোলে দারুণ এক পাস দিয়েছিলেন তিনি। ইউরোর পারফরম্যান্সের পর ট্রান্সফারমার্কেট নানা কিছু বিবেচনায় নিয়ে ইয়ামালের ট্রান্সফার ফি ধরেছে ১২ কোটি ইউরো। তবে বিশাল এই অঙ্কের অন্য বার্সেলোনা ছাড়তে রাজি নন এই ফুটবলার।
“আমি এই ১২ কোটি ইউরো চাই না, কারণ এর জন্য আমাকে বার্সা ছাড়তে হবে। আশা করি, আমাকে কখনই এই ক্লাব থেকে চলে যেতে হবে না। আমি (বার্সেলোনার) কিংবদন্তি হতে চাই।”
২০২৩ সালে ১৫ বছর বয়সে বার্সেলোনার হয়ে অভিষেকের মুহূর্তের কিছু স্মৃতিও তুলে ধরেন ইয়ামাল।
“আমার মনে আছে, আমি সবার আগেই পৌঁছেছিলাম এবং আমার নাস্তা খেতে হতো, কিন্তু আমি যাইনি। সাইকেল নিয়ে অপেক্ষা করছিলাম, সবাই চলে না যাওয়া পর্যন্ত বের হইনি।”