সব প্রতিযোগিতা মিলিয়ে ২০১৪ সালের পর এই প্রথম কোনো আসরের ফাইনালে উঠল সাদা-কালো জার্সিধারীরা।
Published : 09 May 2023, 07:06 PM
গত মার্চের শুরুতে বড্ড টালমাটাল পরিস্থিতিতে মোহামেডান স্পোর্টিং ক্লাবের হাল ধরেন আলফাজ আহমেদ। মাস দুয়েকের মাথায় তার ধরে ২০১৪ সালের পর কোনো প্রতিযোগিতার ফাইনালে উঠল সাদা-কালো জার্সিধারীরা। তাও আবার ঘরোয়া ফুটবলের শক্তিশালী দল বসুন্ধরা কিংসের বাধা ডিঙিয়ে। স্বাভাবিকভাবে দারুণ তৃপ্তি অনুভব করছেন আলফাজ। ছেলেরা সামর্থ্যের সবটুকু নিংড়ে দেওয়ায় জয় এসেছে বলে মনে করেন এই সাবেক তারকা ফরোয়ার্ড।
গোপালগঞ্জের শেখ ফজলুল হক মনি স্টেডিয়ামে মঙ্গলবার ফেডারেশন কাপের প্রথম সেমি-ফাইনালে কিংসকে ২-১ গোলে হারায় মোহামেডান। এমানুয়েল সানডে ও সুলেমানে দিয়াবাতে তাদের জয়ের নায়ক।
ফেডারেশন কাপে ১০ ট্রফির সবশেষটি ২০০৯ সালে জিতেছিল মোহামেডান। সব প্রতিযোগিতা মিলিয়ে সবশেষ তারা শিরোপার স্বাদ তারা পেয়েছিল ২০১৪ সালে, স্বাধীনতা কাপ জিতে। এরপর কোনো আসরে ফাইনাল খেলতে পারেনি তারা। তাই মোহামেডানের সঙ্গে সেঁটে গিয়েছিল ‘ঐতিহ্যের কঙ্কাল’ শব্দযুগল। কিংসকে হারিয়ে যেন ব্যর্থতার সেই বৃত্ত থেকে বেরিয়ে আসার ইঙ্গিতই দিচ্ছে মোহামেডান।
ফাইনালে ওঠার পথে তৃতীয় মিনিটে এমানুয়েলের গোলে এগিয়ে যায় মোহামেডান। কিংস ঘুরে দাঁড়ালেও দ্বিতীয়ার্ধে দিয়াবাতের লক্ষ্যভেদে জয়ের বন্দরে নোঙর ফেলে তারা। ম্যাচ শেষে বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে আলফাজ জানালেন রক্ষণাত্মক ও প্রতি-আক্রমণ নির্ভর খেলার ছক পুরোপুরি বাস্তবায়নের তুষ্টির কথা।
“অনেক দিন টিমের সাথেই ছিলাম, কিন্তু (শফিকুল ইসলাম মানিকের বিদায়ের পর) মাঝপথে এসে দলের হাল ধরেছি। ওই সময় থেকে দলকে পথে ফেরানোর চেষ্টা করেছি। খেলোয়াড়রা সবাই কমিটেড ছিল। সবাই জান-প্রাণ দিয়ে খেলেছে; এই সাফল্য আসলে ওদের প্রচেষ্টার ফল।”
“খেলোয়াড়দেরকে যে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছিল, তারা প্রত্যেকে নিজেদের দায়িত্বটুকু শতভাগ পূরণ করেছে। আজকে অনেক বেশি এফোর্ট দিয়ে খেলেছে এবং ছেলেরা আমার পরিকল্পনা থেকে বের হয়নি। আমার কথার বাইরে যায়নি। পরিশ্রম করেছে, আল্লাহ পরিশ্রমের ফল দিয়েছে।”
দোরিয়েলতন গোমেস নাসিমেন্তোর গোলে প্রথমার্ধেই সমতায় ফিরেছিল কিংস। কিন্তু দ্বিতীয়ার্ধে তাদের আটকে রেখে লক্ষ্যপূরণের আনন্দে মাতে মোহামেডান। আলফাজের মনে হচ্ছে মনোযোগ ধরে রাখার ফলে সম্ভব হয়েছে সবকিছু।
“গোল যেকোনো সময়ই আসতে পারে, ফুটবল ৯০ মিনিটের খেলা। তাই ওরা সমতা ফেরালেও আমরা খেই হারায়নি। ছেলেরা সবসময় সিরিয়াস ছিল; মনোযোগ ধরে রেখেছিল। এ কারণেই জিততে পেরেছি।”
দ্বিতীয় সেমি-ফাইনালে আগামী ১৬ মে কুমিল্লার শহীদ ধীরেন্দ্রনাথ দত্ত স্টেডিয়ামে মুখোমুখি হবে প্রতিযোগিতার রেকর্ড ১২ বারের চ্যাম্পিয়ন আবাহনী ও শেখ রাসেল ক্রীড়া চক্র। এ ম্যাচের জয়ীর দলের বিপক্ষে ৩০ মে শিরোপা লড়াইয়ে নামবে মোহামেডান। আলফাজ জানালেন যে কোনো প্রতিপক্ষের জন্যই প্রস্তুত তিনি।
“ফেডারেশনের কাপের ফাইনালে ওঠা আমার হাত ধরে হয়েছে বলব না। তবে এটা কোচ, খেলোয়াড়, অফিসিয়াল সবার প্রচেষ্টার ফল। এখন সামনে আমাদের ফাইনাল, প্রতিপক্ষ আবাহনী কিংবা শেখ রাসেল ক্রীড়া চক্র যেই হোক, আমরা শিরোপার জন্য লড়ব।”