ঝালকাঠির পুলিশ সুপার জানান, জেলায় নিহত তিন জনই বৃষ্টির মধ্যে গবাদি পশুকে ঘরে আনতে গিয়ে বজ্রপাতের কবলে পড়েছেন।
Published : 07 Apr 2024, 03:59 PM
বজ্রপাতে দেশের তিন জেলায় নারী-শিশুসহ প্রাণ হারিয়েছেন পাঁচ জন। এর মধ্যে ঝালকাঠিতে তিন জন এবং নেত্রকোণা ও যশোরে এক জন করে মৃত্যুর খবর পাওয়া গেছে।
রোববার সকাল থেকে দুপুরের মধ্যে বজ্রপাতের এসব ঘটনায় আহত হয়েছেন আরও একজন।
আমাদের প্রতিনিধির পাঠানো খবর:
ঝালকাঠি: রোববার সকাল ১০টার দিকে হঠাৎ করে ঝড় শুরু হলে ঝালকাঠির আকাশ মেঘে অন্ধকারাচ্ছন্ন হয়ে আসে। সেই সাথে বৃষ্টি ও দমকা বাতাসে জেলার বিভিন্ন স্থানে গাছপালা ভেঙে পড়ে।
বেলা ১১টার দিকে জেলার পৃথক এলাকায় বজ্রপাতে দুই নারী ও এক শিশু নিহত হয়েছেন। আহত হয়েছেন আরও একজন।
নিহতরা হলেন, হেলেনা বেগম (৪০), মিনারা বেগম (৩৫) ও মাহিয়া আক্তার ঈশানা (১১)।
ঝালকাঠি পুলিশ সুপার আফরুজুল হক টুটুল জানান, সকালে বৃষ্টির মধ্যে মাঠে থাকা গবাদি পশুকে ঘরে আনতে যাওয়ার সময় বজ্রপাতের কবলে পড়ে পৃথক স্থানে তিনজন নিহত হয়েছেন।
১১ বছরের নিহত শিশু মাহিয়া আক্তার ঈশানার বাড়ি সদর উপজেলার ইছালিয়া গ্রামে। সে ওই গ্রামের রিকশাচালক বাচ্চু হাওলাদের মেয়ে এবং স্থানীয় আফছার মোমরিয়াল মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের ষষ্ঠ শ্রেণির ছাত্রী।
স্থানীয় ভ্যান চালক রুবেল হাওলাদার বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, রোববার সকাল সোয়া ১০টার দিকে আকাশ কালো মেঘে ঢেকে গুঁড়িগুঁড়ি বৃষ্টি শুরু হলে বাড়ির কাছেই বাধা গরু আনতে যায় মেয়েটি।
“এসময় বজ্রপাতের কবলে পড়ে ঘটনাস্থলেই সে মারা যায়। গরুর বাছুরটিও ওই বজ্রপাতে মারা যায়।”
একই এলাকায় বজ্রপাতে আহত হন জলিল মুন্সির ছেলে ওয়াদুদ মুন্সি (২৯)। তাকে স্থানীয়রা উদ্ধার করে ঝালকাঠি সদর হাসপাতালে নেওয়া হয়।
হাসপাতালের আবাসিক চিকিৎসক টিএম মেহেদী হাসান সানি জানান, বজ্রপাতে আহত এক ব্যক্তিকে ঝালকাঠি সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। তিনি শঙ্কামুক্ত আছেন।
অপর নিহত দুই গৃহবধূর মধ্যে হেলেনা বেগমের বাড়ি ঝালকাঠি সদর উপজেলার শেখেরহাট এবং মিনারা বেগমের বাড়ি জেলার কাঠালিয়া উপজেলার উত্তর তালগাছিয়া গ্রামে।
তারাও বৃষ্টিতে মাঠে থাকা গবাদি পশুকে বাড়ি আনতে গিয়ে বজ্রপাতে নিহত হয়েছেন বলেছেন পরিবারের সদস্যরা।
নেত্রকোণা: বজ্রপাতে নেত্রকোণায় খালিয়াজুরী উপজেলার হাওরে এক কৃষক নিহত হয়েছেন।
রোববার বেলা পৌনে ১২টার দিকে উপজেলার রাজঘাট হাওরে বজ্রপাতে এই নিহতের ঘটনা হয়।
নিহত ৫২ বছর বয়সী শহীদ মিয়া উপজেলার মেন্দীপুর ইউনিয়নের জগন্নাথপুর গ্রামের কফিল উদ্দিনের ছেলে।
নিহতের ভাই স্থানীয় ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক রেজাউল করিম জানান, সকালে বাড়ি থেকে বের হয়ে গ্রামের সামনে রাজঘাট হাওরে মরিচ ক্ষেতের পরিচর্যা করছিলেন তার ভাই। দুপুরের দিকে হঠাৎ বজ্রসহ বৃষ্টি শুরু হয়।
“এ সময় বজ্রপাতে ঘটনাস্থলেই মারা যান আমার ভাই। এতে আমাদের গ্রামে শোকের ছায়া নেমে এসেছে।”
খালিয়াজুরী থানার ওসি উত্তম কুমার সাহা জানান, ঘটনাস্থলে পুলিশ পাঠানো হয়েছে। নিহত শহীদ মিয়ার পরিবারের সদস্যদের সাথে কথা বলে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
যশোর: যশোরের ঝিকরগাছা উপজেলায় ধান ক্ষেতে কাজ করতে গিয়ে বজ্রপাতে এক কৃষকের মৃত্যু হয়েছে।
রোববার সকালে উপজেলার বড়পোদাউলিয়া গ্রামের বিলে এ ঘটনা ঘটে বলে জানান ঝিকরগাছার শংকরপুর ইউনিয়নের সাবেক ইউপি সদস্য পোদাউলিয়া গ্রামের জাহান আলি।
নিহত আব্দুল মালেক পাটোয়ারী (৬০) উপজেলার বড়পোদাউলিয়া গ্রামের মৃত ওমর আলি পাটোয়ারীর ছেলে।
জাহান আলি বলেন, সকালে বাড়ির পাশের বিলে নিজের ধানক্ষেতে কাজ করতে গিয়েছিলেন আব্দুল মালেক। এ সময় বৃষ্টিপাতের সঙ্গে হঠাৎ বজ্রপাত হলে ঘটনাস্থলেই তার মৃত্যু হয়।
“বৃষ্টি থামার পর অন্য কৃষকরা বিলে গেলে তাকে মৃত অবস্থায় পড়ে থাকতে দেখে উদ্ধার করে বাড়িতে নিয়ে আসে।”