অতিরিক্ত পুলিশ সুপারের বিরুদ্ধে মামলাটি করেন বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ের এক নারী কর্মকর্তা।
Published : 25 Apr 2024, 08:48 PM
বিয়ের নামে প্রতারণা ও ধর্ষণের অভিযোগে বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ের এক নারী কর্মকর্তার করা মামলায় এক অতিরিক্ত পুলিশ সুপারের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করা হয়েছে।
বৃহস্পতিবার বরিশালের নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালের বিচারক মো. ইয়ারব হোসেন অভিযোগ গঠন করেছেন বলে জানিয়েছেন আদালতের বেঞ্চ সহকারী কাজী হুমায়ুন কবির।
বিবাদী অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মাহমুদুল হাসান ফেরদৌস (৪০) দশম বরিশাল আমর্ড ব্যাটালিয়ন পুলিশে কর্মরত ছিলেন। বর্তমানে তিনি পুলিশ হেডকোয়ার্টার্সে কর্মরত আছেন।
হুমায়ুন কবির বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, বাদী (৩৭) এবং বিবাদী মাহমুদুল হাসানের উপস্থিতিতে মামলার অভিযোগ গঠন করা হয়েছে। বিবাদীর বিরুদ্ধে ধর্ষণের অভিযোগ আমলে নিয়ে অভিযোগ গঠন করা হয়। ৩০ জুন সাক্ষ্য গ্রহণের দিন ধার্য করেছে আদালত। ওইদিন বাদীর সাক্ষ্য নেওয়া হবে।
বেঞ্চ সহকারী বলেন, “মামলার বাদীকে হুমকি দেওয়ার অভিযোগে একইদিন বিবাদীর জামিন বাতিলের আবেদন আমলে নিয়েছেন বিচারক। এ ছাড়া মামলা প্রত্যাহারের জন্য বাদীকে হুমকি দেওয়ার অভিযোগে করা আবেদন তদন্ত করে প্রতিবেদন জমা দেওয়ার জন্য পিবিআইকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। প্রতিবেদন পাওয়ার পর পরবর্তী সিদ্ধান্ত দেবেন বিচারক।”
নালিশি মামলার বরাতে তিনি বলেন, বাদী এবং বিবাদী এক সময় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়াশোনা করতেন। সেই সূত্রে তারা পূর্বপরিচিত। বরিশাল এসে তাদের মধ্যে সুসম্পর্ক গড়ে উঠে। সম্পর্কের বিষয়টি নারী কর্মকর্তার স্বামী জানতে পেরে গত বছরের জানুয়ারিতে তাকে ডিভোর্স দেন।
অভিযোগে দাবী করা হয়, এরপর ২০২২ সালের ৬ ফেব্রুয়ারি দশম আর্মড পুলিশ ব্যাটালিয়নের বাংলোতে ‘ইসলামী শরিয়া অনুযায়ী’ ওই নারীর সঙ্গে ফেরদৌসের বিয়ে হয়। বিয়ের পর বিভিন্ন সরকারি ও বেসরকারি অনুষ্ঠানে উভয়ে স্বামী-স্ত্রী পরিচয়ে অংশ নেন। একই বছরের মার্চে ফেরদৌসের প্রথম স্ত্রী সন্তানসহ ওই বাংলাতো আসেন, তখন বাদীও সেখানে যান। বিয়ে নিবন্ধনের জন্য চাপ দিলে তাকে মারধর করা হয়।
অভিযোগে আরও বলা হয়, “২০২২ সালের ২২ জুলাই পুলিশ কর্মকর্তা ওই নারীকে নিয়ে ঢাকার ইস্কাটনে পুলিশ অফিসার্স মেসে যান। পরে ২৫ জুলাই গুলশানের এক বন্ধুর বাসায় তাদের বিয়ে নিবন্ধন হয়। পরে তারা বরিশালে ফিরে আসেন।
তবে এরপর কাবিননামা চাইলেও তা পাননি জানিয়ে বাদী বলছেন, “একই বছরের ৮ অক্টোবর ফেরদৌস বরিশাল থেকে চলে যান। এরপর যোগাযোগ করা হলে তিনি বিয়ের কথা ‘ভুলে যেতে’ বলেন এবং বাড়াবাড়ি না করার হুমকি দেন।”
বেঞ্চ সহকারী কাজী হুমায়ুন কবির বলেন, ২০২২ সালের ২০ নভেম্বর স্ত্রীর মর্যাদা চেয়ে ওই নারী আইনি নোটিশ পাঠান। জবাব না পেয়ে ২৭ ডিসেম্বর কোতোয়ালি মডেল থানায় অভিযোগ দেন। তখন পুলিশ আদালতে মামলার পরামর্শ দেয়। আদালত নালিশি অভিযোগটি বিচার বিভাগীয় তদন্তের নির্দেশ দেন।
চলতি বছরের মার্চে বরিশাল মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আল ফয়সাল তদন্ত প্রতিবেদন ট্রাইব্যুনালে জমা দেন বলে জানান তিনি।
আরও পড়ুন:
বরিশালে পুলিশ কর্মকর্তার বিরুদ্ধে বিয়ের নামে প্রতারণা ও ধর্ষণের অভিযোগ