ঢাকার সেন্ট্রাল হাসপাতালে নবজাতক ও প্রসূতির মৃত্যুতে তোলপাড়ের মধ্যে কুমিল্লা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে একই কারণে আরেক প্রসূতির মৃত্যুর অভিযোগ উঠেছে।
চিকিৎসকদের দায়িত্বহীনতার কারণে প্রসূতির মৃত্যু হয়েছে বলে স্বজনদের অভিযোগ।
মারা যাওয়া পারুল আক্তার জেলার বরুড়া উপজেলার মোগগাঁও গ্রামের কৃষক মোস্তফা কামালের স্ত্রী। তবে পারুলের সন্তান বেঁচে আছে।
গত মঙ্গলবার দুপুরে তার মৃত্যু বিষয়টি বুধবার জানাজানি হয়; এ ঘটনা তদন্তে পাঁচ সদস্যের কমিটি গঠন করেছে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ।
হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ জানায়, তদন্তে অবহেলার প্রমাণ পাওয়া গেলে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
হাসপাতালে পারুলের স্বামী ও স্বজনরা জানান, গত সোমবার কুমিল্লা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে অস্ত্রোপচারের মাধ্যমে পারুলের সন্তান হয়। আধঘণ্টা পর হঠাৎ তার পেট ফেঁপে উঠলে আবার তাকে অপারেশন থিয়েটারে নেওয়া হয়। এরপর রাখা হয় আইসিইউতে। পরদিন মঙ্গলবার মারা যান পারুল।
ভুল চিকিৎসায় পারুলের মৃত্যু হয়েছে বলে অভিযোগ করছেন তারা।
পারুলের স্বামী মোস্তফা কামাল বলেন, “ওইদিন দ্বিতীয়বার ওটিতে নিয়ে ডাক্তাররা সেলাই খুলে পারুলের পেটে পানি ঢেলে ওয়াশ করেছিলেন। তবে কী কারণে করেছিল আমরা জানি না। ওয়াশ করার পর আবার সেলাই করেন তারা। এরপর প্রায় ৩/৪ ঘণ্টা তাকে ওখানে রাখেন।”
তখন সরকারি কোনো ওষুধও পাওয়া যায়নি উল্লেখ করে তিনি বলেন, “আমাদের মনে হচ্ছে, পারুলের পেটে কিছু রেখেই প্রথমবার সেলাই করা হয়েছিল। আমরা এর সঠিক তদন্ত ও বিচার চাই।”
এদিকে, হাসপাতালে খোঁজ নিয়ে জানা যায়, ওইদিন পারুলের অস্ত্রোপচারটি করার কথা ছিল হাসপাতালের গাইনি বিভাগের প্রধান ডা. শিরিন আক্তারের। কিন্তু তার পরিবর্তে অস্ত্রোপচার করেন সহকারী রেজিস্ট্রার ডা. আফরোজা খানম।
এ বিষয়ে জানতে চাওয়া হলে কোনো কথা বলতে রাজি হননি ডা. আফরোজা খানম।
তবে দক্ষ হাতেই অস্ত্রোপচার করা হয়েছে বলে দাবি করেন ডা. শিরিন আক্তার।
তিনি বলেন, “যিনি অপারেশনটি করেছেন তিনি আমার সবচেয়ে এক্সপার্ট ও এক্সপেরিয়েন্সড ট্রেইনি। সাধারণত এই ধরনের অপারেশনগুলো তারাই করে থাকেন। আমরা আপ্রাণ চেষ্টা করেছি ব্লিডিং বন্ধ করার। কিন্তু শেষ পর্যন্ত রোগীকে বাঁচাতে পারিনি। এখানে আমাদের কোন অবহেলা ছিল না।”
বুধবার এ প্রসঙ্গে কুমিল্লা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের পরিচালক ডা. মো. আজিজুর রহমান সাংবাদিকদের বলেন, “প্রসূতির মৃত্যুর ঘটনায় স্বজনদের অভিযোগের ভিত্তিতে এরই মধ্যে আমরা পাঁচ সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করেছি। তিন কর্ম দিবসের মধ্যে আমরা রিপোর্ট জমা দিতে বলেছি। দায়িত্বে অবহেলা পেলে অবশ্যই ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”
আরও পড়ুন
সংযুক্তা সাহার নামে রোগী ভর্তি হয়নি: সেন্ট্রাল হাসপাতাল
নওগাঁ হাসপাতাল পেল সেন্ট্রাল অক্সিজেন প্ল্যান্ট
সেন্ট্রাল হাসপাতালের এক চিকিৎসকের জামিন ফের নাকচ
আঁখির চিকিৎসায় গাফিলতি ছিল, স্বীকার সেন্ট্রাল হাসপাতালের
সেন্ট্রাল হাসপাতালে সন্তান হারানো আঁখিও চলে গেলেন