১৫০টি বস্তায় ভর্তি করে সেসব বর্জ্য দু্’টি ট্রলারে করে টেকনাফে নিয়ে আসা হয়।
Published : 13 Oct 2023, 04:56 PM
পর্যটন মৌসুমের শুরুতেই প্রবাল দ্বীপ সেন্ট মার্টিন থেকে সাত হাজার কেজির বেশি প্লাস্টিক বর্জ্য সরিয়েছেন এক স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনের সদস্যরা।
কেওক্রাডং বাংলাদেশ নামের সংগঠনটির স্বেচ্ছাসেবীরা জানান, ৯ অক্টোবর থেকে ১১ অক্টোবর পর্যন্ত দ্বীপের অলিগলি ও সৈকত থেকে সাত হাজার ২০০ কেজি প্লাস্টিক বোতল, খাদ্য দ্রব্যের প্যাকেট, পলিথিনসহ নানান ধরনের অপচনশীল ময়লা-আবর্জনা সংগ্রহ করা হয়।
১৫০টি বস্তায় ভর্তি করে সেসব বর্জ্য দু্’টি ট্রলারে করে টেকনাফে নিয়ে আসা হয়। পরে ট্রাকে করে সেগুলো টেকনাফ পৌরসভার বর্জ্য ডাম্পিং স্টেশনে নিয়ে যাওয়া হয়।
কেওক্রাডং বাংলাদেশের সমন্বয়কারী এবং ওশান কনজারভেন্সির বাংলাদেশের সমন্বয়কারী মুনতাসির মামুন বলেন, “সামুদ্রিক আর্বজনা বা মেরিন ডেবরিজ বর্তমান দুনিয়াতে বহুল আলোচিত। মেরিন ডেবরি থেকে যে মাইক্রোপ্লাস্টিক/মাইক্রোফাইবার বা যে কোনো ধরনের প্লাস্টিকের কণা সামুদ্রিক পরিবেশ তথা যেকোনো পরিবেশের সঙ্গে যে হারে মিশে যাচ্ছে তাতে আমাদের খাদ্যশৃঙ্খলে প্লাস্টিকের উপস্থিতি, মানবদেহে, রক্তে, মলে এমনকি মাতৃদুধেও প্লাস্টিক কণা পাওয়া যাচ্ছে। এর ভয়াবহতার পরিমাপ আমাদের এখনও পুংখানুপঙ্খভাবে করা সম্ভব হয়নি।”
তিনি আরও বলেন, সেন্ট মার্টিনের মতো ছোট দ্বীপে পড়ে থাকা প্লাস্টিক যদি মূল ভূখণ্ডে নিয়ে আসা না হয় তবে এর পরিণাম শুধু এই দ্বীপের মধ্যেই সীমাবদ্ধ থাকবে না। ছড়িয়ে পড়বে বঙ্গোপসাগরে। আমাদের এই ক্ষুদ্র প্রয়াস ছিল আমাদের সামর্থ্য অনুযায়ী সেই পরিণামকে যতটা সম্ভব সীমিত করা।
সেন্ট মার্টিনের স্থানীয় সাংবাদিক নূর মোহাম্মদ বলেন, “প্রতি বছর হাজার হাজার পর্যটক প্রবাল দ্বীপ সেন্ট মার্টিনে বেড়াতে এসে নানা রকম প্লাস্টিক বর্জ্য ফেলে যান। সঙ্গে যোগ হয় স্থানীয়দের ব্যবহৃত বিভিন্ন পলিথিন বর্জ্য।
“অপচনশীল এসব বর্জ্যের ভারে হুমকিতে পড়েছে ছোট্ট এই দ্বীপের প্রাণ-প্রকৃতি। ভ্রমণ মৌসুম শুরুর ঠিক আগে এসব প্লাস্টিক বর্জ্য সরানোর মতো মহৎ কাজ করছেন কেওক্রাডং বাংলাদেশের সদস্যরা।”
গত বছরও পর্যটন মৌসুম শুরুর আগে প্লাস্টিক বর্জ্য সরানোর নেতৃত্ব দিয়েছিল কেওক্রাডং বাংলাদেশ। এ ছাড়া সংগঠনটি ২০১০ সাল থেকে প্রতি বছর নভেম্বর/ডিসেম্বর মাসে সেন্ট মার্টিন দ্বীপে আন্তর্জাতিক সংস্থা ওশান কনজারভেন্সি ও কোকাকোলার সহযোগিতায় বড় ধরণের আরও একটি পরিচ্ছন্নতা অভিযান পরিচালনা করে আসছে।
দ্বীপকে পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রাখার এ উদ্যোগটি খুবই প্রশংসনীয় জানিয়ে সেন্টমার্টিনের প্যানেল চেয়ারম্যান আক্তার কামাল বলেন, সবাই নিজ নিজ অবস্থান থেকে এগিয়ে আসার জন্য চেষ্টা করলে অবশ্যই সফল হওয়া সম্ভব হবে। আগামীতেও সেন্ট মার্টিনে এ ধরনের কর্মসূচির আয়োজন করলে দ্বীপের পরিবেশের জন্য তা খুবই উপকার বয়ে আনবে।