কুমিল্লায় শিক্ষকের বেত্রাঘাতে মাদ্রাসা শিক্ষার্থীর মৃত্যুর অভিযোগ

পরিবারের ভাষ্য, হুজুর বেত্রাঘাত করেছেন জানালে তাকে আবার মারবেন বলে হুমকি দিয়েছেন, তাই ভয়ে প্রথমে হুজুরের নাম জানায়নি এই শিক্ষার্থী।

আবদুর রহমান, কুমিল্লা প্রতিনিধিবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 5 August 2022, 02:55 PM
Updated : 5 August 2022, 02:55 PM

কুমিল্লার বরুড়ায় শিক্ষকের বেত্রাঘাতে এক মাদ্রাসা শিক্ষার্থীর মৃত্যুর অভিযোগ পাওয়া গেছে।

শুক্রবার দুপুরে বরুড়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স থেকে কুমিল্লা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়ার পথে তার মৃত্যু হয় বলে পরিবার জানিয়েছে।

১৩ বছর বয়সী ওই শিক্ষার্থীর বাড়ি উপজেলার ঝলম ইউনিয়নের শশইয়া গ্রামে। সে ওই ইউনিয়নের মেড্ডা আল মাতিনিয়া নুরানী মাদ্রাসার ছাত্র ছিল।

ওই মাদ্রাসার শিক্ষক আবদুর রবের তত্ত্বাবধানে নুরানী শিক্ষা নিচ্ছিল এই শিক্ষার্থী। আবদুর রবের বিরুদ্ধেই তাকে বেত্রাঘাতের অভিযোগ ওঠে।

মৃত ছাত্রের ভাবি সাংবাদিকদের বলেন, “আমার দেবরকে কয়েকদিন আগে মেড্ডা মাদ্রাসার শিক্ষক আবদুর রব অসংখ্য বেত্রাঘাত করেন। এরপর সে অসুস্থ হয়ে পড়লে শিক্ষকরা তাকে ওষুধ এনে খাওয়ান।”

তাতেও সুস্থ না হওয়ায় বৃহস্পতিবার মাদ্রাসা থেকে ফোন করে বাড়িতে তার অসুস্থতার খবর জানানো হয় বলে ঝুমুর জানান।

“পরে আমার শ্বশুর মাদ্রাসায় গিয়ে তাকে বাড়ি নিয়ে আসেন। অবস্থা খারাপ হওয়ায় শুক্রবার সকালে তাকে বরুড়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নেওয়া হয়। সেখান থেকে কুমিল্লা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়ার পথে দুপুর ১টা ১২ মিনিটে তার মৃত্যু হয়।”

তার ভাবি আরও বলেন, তার দেবর প্রথমে বিষয়টি পরিবারকে জানায়নি। সে বলেছে এমনিতেই তার শরীরে জ্বর এসেছে। পরে শুক্রবার বরুড়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স থেকে যখন তাকে কুমিল্লায় পাঠানো হচ্ছিল তখন তার কাছে অসুস্থতার কারণ আবার জানতে চাইলে সে বলে, আবদুর রব হুজুর তাকে মেরে এই অবস্থা করেছে।

তিনি বলেন, হুজুর বেত্রাঘাত করেছেন বললে তাকে আবার মারবেন বলে হুমকি দিয়েছেন, তাই ভয়ে হুজুরের নাম বলেনি।

এদিকে, শিক্ষকের ‘২০০ বেত্রাঘাতে’ ওই শিক্ষার্থীর মৃত্যু হয়েছে – এমন খবর সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়েছে। ঘটনার পর থেকেই শিক্ষক আবদুর রবের মোবাইল ফোন বন্ধ পাওয়া যাচ্ছে।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে মেড্ডা আল মাতিনিয়া নুরানী মাদ্রাসার প্রধান আহমেদ শফি বলেন, “আমি তার পরিবারের সঙ্গে কথা বলছি বিষয়টি নিয়ে। এছাড়া বিষয়টি নিয়ে এখন কোনো কথা বলতে চাই না।”

স্থানীয় ঝলম ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান নুরুল ইসলাম বলেন, “আমি স্থানীয় মেম্বারের [ইউপি সদস্য] কাছে শুনেছি মাদ্রাসার একজন শিক্ষক ওই শিক্ষার্থীকে আঘাত করেছেন। এর বাইরে বিস্তারিত জানি না। প্রকৃত ঘটনা জানার চেষ্টা করছি।”

এ ব্যাপারে বরুড়া থানার ওসি ইকবাল বাহার মজুমদার বলেন, “খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে পুলিশ পাঠানো হয়েছে। তবে ওই শিক্ষার্থীর পরিবার এ ঘটনায় এখনও কোনো অভিযোগ করেনি। আমরা বিষয়টি তদন্ত করে দেখছি।”