খালেদা জিয়া তো মুক্ত, বিএনপি কেন মুক্তি চায়: আইনমন্ত্রী

বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়াকে আদালত মুক্তি দেয়নি, বিশেষ ক্ষমতাবলে প্রধানমন্ত্রী তাকে মুক্ত করে দিয়েছেন, তিনি বাসায় আছেন, চিকিৎসা নিচ্ছেন; অথচ বিএনপি নেতারা তার মুক্তি চেয়ে বক্তৃতা করে চলেছেন বলে মন্তব্য করেছেন আইনমন্ত্রী আনিসুল হক।

বৃহস্পতিবার রাতে জেলা আইনজীবী সমিতির নবনির্মিত ভবনের উদ্বোধন অনুষ্ঠানে তিনি এসব কথা বলেন৷

সাবেক প্রধানমন্ত্রীর মামলার প্রসঙ্গ টেনে আইনমন্ত্রী বলেন, “২০০৭-০৮ সালে যখন তত্ত্বাবধায়ক সরকার ছিল তখন খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে দুটি দুর্নীতির মামলা হয়েছিল৷ সে মামলার তদন্ত হয়, এফআইআর ও চার্জশিট হয়৷ প্রতিটা সময় খালেদা জিয়ার আইনজীবীরা আদালতের শরণাপন্ন হন৷ নিম্ন আদালত থেকে আপিল বিভাগ পর্যন্ত যান তারা৷ আদালত তাকে সাজা দেয়৷

“জেলে থাকাবস্থায় তার পরিবার থেকে খালেদা জিয়ার শরীর অত্যন্ত খারাপ বলে দরখাস্ত করা হয়৷ আইনের যেকোনো প্রক্রিয়ায় তাকে জেল থেকে ছাড়ার প্রার্থনা করা হয়৷ তখন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা তার মহানুভবতায় ৪০১ ধারায় দণ্ডাদেশ স্থগিত রেখে দুই শর্তে তাকে মুক্তি দিয়েছেন। তারপরও বিএনপির লোকেরা বলে তাকে ‘বেইল’ দিতে হবে।“

উপস্থিত আইনজীবীদের উদ্দেশে মন্ত্রী প্রশ্ন রাখেন, “আপনারাও বলেন, মুক্ত মানুষকে কোর্ট ক্যামনে ‘বেইল’ দেয়? মনে রাখতে হবে, হাই কোর্ট, আপিল বিভাগে তাকে মুক্তি দেয়নি, তাকে বেইল দেওয়া হয়নি, মুক্ত করে দেওয়া হয়েছে৷”

গণমাধ্যমের উদ্ধৃতি দিয়ে আনিসুল হক বলেন, “খবরের কাগজে দেখছি, খালেদা জিয়াকে মুক্তি দিতে বলছেন দলের নেতারা৷ উনি তো মুক্ত, উনি উনার বাসায় আছেন, প্রায় সময় চিকিৎসা নেওয়ার জন্য এভারকেয়ার হাসপাতালে যান, চিকিৎসা নিয়ে আবার বাসায় ফেরেন। উনাকে মুক্তি দেওয়ার আর কী আছে?”

এ সময় ১০ ডিসেম্বর বিএনপির ঢাকার বিভাগীয় গণসমাবেশের প্রসঙ্গ টেনে আইনমন্ত্রী বলেন, “১০ ডিসেম্বর উনাকে (খালেদা জিয়া) দিয়ে বক্তৃতা দেওয়াবেন৷ উনাকে মুক্তি দেওয়ার সময় উনি রাজনীতি করতে পারবেন না- এমন কোনো শর্ত দেওয়া হয়নি৷ কিন্তু উনি হাঁটাচলাও করতে পারেন না- এমন কথা বলে চিকিৎসার জন্য মুক্তি চাওয়া হয়েছিল৷ তিনি যদি সমাবেশে বক্তৃতা করেন, তার মানে আবেদনে মিথ্যা বলা হয়েছিল৷”

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ‘দেশে আইনের সুশাসন’ দিয়েছেন মন্তব্য করেন আনিসুল বলেন, “স্বাধীনতা পেয়েছি বলেই উচ্চস্বরে আইনের শাসনের জন্য লড়াই করতে পারছি৷ বঙ্গবন্ধুকে অনেকবার আদালতের দ্বারস্থ হতে হয়েছে৷ জেলগেইট থেকেও তাকে গ্রেপ্তার করা হতো৷ আমরা এখন স্বাধীন৷ আমাদের মুখ মলিন হওয়ার মতো কিছু হয়নি। আমরা আইনের শাসনে বিশ্বাস করি৷ বঙ্গবন্ধুর সুযোগ্য কন্যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সেই আইনের সুশাসন দিয়েছেন৷”

স্বাধীনতাবিরোধী শক্তি সোচ্চার জানিয়ে এর বিরুদ্ধে ঐক্যবদ্ধ থাকারও আহ্বান জানান আইনমন্ত্রী৷

অনুষ্ঠানে আরও উপস্থিত ছিলেন অ্যাটর্নি জেনারেল এ এম আমিন উদ্দীন, স্থানীয় সংসদ সদস্য শামীম ওসমান, সেলিম ওসমান, লিয়াকত হোসেন খোকা।