রূপপুর প্রকল্পের গাড়িচালক হত্যায় মামলা, গ্রেপ্তার নারী রিমান্ডে

মামলায় নিহতের বন্ধু ও তার স্ত্রী ছাড়াও অজ্ঞাতনামা ৩/৪ জনকে আসামি করা হয়েছে।

পাবনা প্রতিনিধিবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 26 March 2023, 02:50 PM
Updated : 26 March 2023, 02:50 PM

পাবনার রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎ প্রকল্পের গাড়িচালক সম্রাট খান হত্যায় মামলা হয়েছে। মামলায় গ্রেপ্তার এক নারীকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য দুদিনের রিমান্ড মঞ্জুর করে আদালত।

এর আগে নিহতের বাবা আবু বক্কার বাদী হয়ে শনিবার রাতে ঈশ্বরদী থাকায় মামলাটি করেন বলে ঈশ্বরদী থানার ওসি অরবিন্দ সরকার জানান।

মামলায় সম্রাটের বন্ধু আব্দুল মমিন ও তার স্ত্রী সীমা খাতুন ছাড়াও অজ্ঞাতনামা ৩/৪ জনকে আসামি করা হয়েছে।

এর আগে শনিবার ভোরে ঈশ্বরদী উপজেলার বাঁশেরবাধা গ্রামের বাড়ি থেকে সীমা খাতুনকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ।

রোববার দুপুরে তাকে আদালতে তোলে পাঁচদিনের রিমান্ডের আবেদন করেন মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা ঈশ্বরদী থানার এসআই তহিদ হোসেন। শুনানি শেষে পাবনা আমলী আদালত-২ এর বিচারক শামসুজ্জামান দুদিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন।

নিহতের স্বজন ও স্থানীয়দের বরাতে পুলিশ জানায়, সম্রাট ও তার বন্ধু আব্দুল মমিন দুজনই আরবিডি কোম্পানির মাধ্যমে রূপপুর পারমাণবিক প্রকল্পে নিকিমথ কোম্পানির গাড়িচালক ছিলেন।

মমিনের স্ত্রী আটক সীমা খাতুনের দেওয়া তথ্যে শনিবার সকালে কুষ্টিয়ার কুমারখালী থানার চরসাদীপুর ইউনিয়নের সাদীপুরস্থ পাবনার সীমান্তবর্তী পদ্মা নদীর পাড় থেকে সম্রাটের মরদেহ উদ্ধার করে ঈশ্বরদী থানা পুলিশ।

Also Read: রূপপুর প্রকল্পের গাড়ি থেকে চালকের বস্তাবন্দি মরদেহ উদ্ধার

যে জিপটি থেকে সম্রাটের মরদেহ উদ্ধার করা হয় সেটির মালিক আনিসুর রহমান বলেন, “বৃহস্পতিবার সকালে গাড়ি নিয়ে সম্রাট অফিসে না গেলে নিকিমথ কোম্পানি থেকে ফোনে আমাকে জানানো হয়। আমি ফোনে চেষ্টা করেও সম্রাটকে না পেয়ে শুক্রবার বিকালে তার বাবা আবু বক্কারকে সঙ্গে নিয়ে ঈশ্বদী থানা পুলিশকে মৌখিকভাবে জানাই। পুলিশ সম্রাটের ফোনের সবশেষ অবস্থান নিশ্চিত হয় যে, তিনি (সম্রাট) বন্ধু মমিনের বাড়িতে কয়েকবার গিয়েছেন।

“পুলিশের জেরার মুখে এক পর্যায়ে মমিনের স্ত্রী সীমা তথ্য দিলে পুলিশ এ বিষয়ে নিশ্চিত হন।”

নিহতের বাবা আবু বক্কার সিদ্দিক ও চাচা আলমগীর হোসেন বাদশা জানান, সম্রাটকে রূপপুর প্রকল্পের ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান নিকিমথ কোম্পানির গাড়ি সরবরাহকারী আরবিডি নামের প্রতিষ্ঠানের হয়ে গাড়ি চালানো ছাড়াও বিভিন্ন জায়গা থেকে গাড়ি এনে ভাড়া দিতেন।

বৃহস্পতিবার সেসব গাড়ির মাসিক ভাড়াসহ তার বেতনের টাকা পাওয়ার কথা ছিল। এসব টাকার কারণে পরিকল্পিতভাবে সম্রাটকে খুন করা হতে পারে বলে মামলার এজাহারে উল্লেখ করা হয়েছে।

মামলার নথির বরাতে ওসি অরবিন্দ সরকার বলেন, “মামলার আসামিদের বিরুদ্ধে অর্থ আত্মসাতের অভিযোগ আনেন বাদী। গ্রেপ্তার সীমা খাতুনের দেওয়া তথ্য, বাদীর এজাহারসহ বিভিন্ন দিক বিবেচনা করে মামলাটির তদন্তকাজ শুরু হয়েছে।”

পুলিশ বলছে, প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে সম্রাটকে হত্যার কথা স্বীকার করেছেন সীমা।

মামলার আরেক আসামি সীমার স্বামী আব্দুল মমিন ঘটনার পর থেকে মোবাইল ফোন বন্ধ করে আত্মগোপনে আছেন।

সীমার স্বামীকে আইনের আওতায় আনা গেলে এ হত্যাকাণ্ডের রহস্য উদ্‌ঘাটন অনেকটাই সহজ হবে বলে জানান ওসি অরবিন্দ সরকার।