এমপি বাহারের সঙ্গে সম্পর্ক ‘কাজের স্বার্থে’: সাক্কু

“হুমকি তো প্রতি মুহূর্তে। আমাদের কর্মী তো চিহ্নিত আছে, সবসময় তাদেরকে বলতেছে, মারব-ধরব।”

আবদুর রহমান, কুমিল্লা প্রতিনিধিবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 8 March 2024, 02:19 PM
Updated : 8 March 2024, 02:19 PM

কুমিল্লার বহিষ্কৃত বিএনপি নেতা ও কুমিল্লা সিটি করপোরেশনের সাবেক মেয়র মনিরুল হক সাক্কু যে দুবার নির্বাচিত হন, তার মধ্যে একবার তার প্রতিদ্বন্দ্বী ছিলেন কুমিল্লার প্রবীণ আওয়ামী লীগ নেতা জেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক আফজল খান, অন্যবার তার মেয়ে আঞ্জুম সুলতানা সীমা।

বিভক্তির মধ্যে আওয়ামী লীগের অন্যপক্ষের নেতা কুমিল্লা-৬ (আদর্শ সদর-সিটি করপোরেশন-সেনানিবাস) আসনের বর্তমান সংসদ সদস্য আ ক ম বাহাউদ্দিন বাহারের ‘প্রচ্ছন্ন সমর্থনে’ সাক্কু অতীতে ভোটের বৈতরণী পার হয়েছেন বলে মনে করেন অনেক রাজনীতি বিশ্লেষক।

২০২২ সালের ১৫ জুনের সিটি নির্বাচনে সাক্কুকে হারিয়ে মেয়র নির্বাচিত হন আরফানুল হক রিফাত; যিনি ‘বাহারের সমর্থক’ হিসাবে পরিচিত ছিলেন। দায়িত্ব নেওয়ার মাত্র দেড় বছরের মাথায় রিফাতের মৃত্যুতে শূন্য হওয়া মেয়র পদের উপনির্বাচনে আবারও প্রার্থী হয়েছেন সাক্কু; তবে, প্রতিদ্বন্দ্বী হিসাবে এবার তিনি পেয়েছেন বাহারের মেয়ে তাহসীন বাহার সূচনাকে।

দলীয় প্রতীকবিহীন মেয়র পদের এ নির্বাচনে সাক্কু এবং সূচনার সঙ্গে প্রার্থী হিসাবে মাঠে রয়েছেন, কুমিল্লা মহানগর স্বেচ্ছাসেবক দলের সাবেক সভাপতি নিজাম উদ্দিন কায়সার এবং কুমিল্লা মহানগর আওয়ামী লীগের উপদেষ্টা ও কুমিল্লা ভিক্টোরিয়া সরকারি কলেজের সাবেক ভিপি নুর-উর রহমান মাহমুদ তানিম।

২০০৫ সালের ২১ সেপ্টেম্বর থেকে মনিরুল হক সাক্কু বিলুপ্ত কুমিল্লা পৌরসভার চেয়ারম্যান ও মেয়র ছিলেন। ২০১২ সালে কুমিল্লা সিটির করপোরেশনের প্রথম নির্বাচনে বিএনপি থেকে পদত্যাগ করে নাগরিক সমাজের ব্যানারে দাঁড়িয়ে নগরপিতা নির্বাচিত হন সাক্কু। ২০১৭ সালে বিএনপি থেকে মনোনয়ন পেয়ে দ্বিতীয়বারের মতো মেয়র নির্বাচিত হন সাক্কু।

২০২২ সালের সিটি নির্বাচনে কুমিল্লা মহানগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আরফানুল হক রিফাতের কাছে পরাজিত হন সাক্কু। ওই নির্বাচনে আফজল খান পরিবারের কেউ নির্বাচনের মাঠে ছিলেন না।

এবার কুমিল্লা সিটির নতুন নগরপিতা বেছে নিতে শনিবার ইভিএমে ভোট দেবেন কুমিল্লাবাসী। নির্বাচনে এবারের ভোটার ২ লাখ ২৯ হাজার ৯২০ জন।

ভোটের প্রচার আর প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থীদের সঙ্গে লড়াইয়ের মধ্যেই মঙ্গলবার মনিরুল হক সাক্কু সাক্ষাৎকার দিয়েছেন বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে।

প্রশ্ন: প্রচারের একেবারে শেষ সময়ে চলে এসেছে। এখন পর্যন্ত ভোটের মাঠের পরিবেশ কেমন দেখছেন?

সাক্কু: প্রচারের শেষ সময় মানে, আর তো তিনদিন আছে মনে হয়, না? সরকারের আইন অনুযায়ী ৭ তারিখ রাত ৮টা পর্যন্ত প্রচার চালানো যাবে। পরিবেশ তো আপনিও দেখছেন, আমরাও দেখতেছি। তিনদিন ধরে আমি উঠান বৈঠকের পরিকল্পনা করছি, করতে গেলে আগেই তারা ভাঙচুর করে ফালায়। আপনি তো নিজেও ছিলেন। ৯ নম্বর ওয়ার্ডে আমাদের উঠান বৈঠক ছিল, আমি স্বয়ং বক্তৃতা দিতে শুরু করছি, সেই সময় ককটেল মারা শুরু করছে।

আমি আশ্চর্য হয়ে গেলাম, মহিলারা যে এত সাহসী! আমরা পুরুষরা ধরি নাই, মহিলারা দৌঁড়ায় গিয়া যে ককটেল মারছে তারে ধরছে, চেনিসহ ধরছে। একজনকে ধরছে সে মহিলা সাইজা আসছে, আসলে দেখা গেছে পুরুষ। আমরা পরে মাথার চুল দেখছি, এটা পুরুষ। পরে আমরা তারে পুলিশের কাছে দিছি।

এদিকে মিটিং ভাঙতে না পাইরা, যাইয়া আমার হোটেল ভাঙছে। আরও তিনটা মিটিং ছিল আমাদের। ১৮ নম্বর ওয়ার্ডে মিটিং ছিল, ২১ নম্বর ওয়ার্ডে মিটিং ছিল, ২৫ নম্বর ওয়ার্ডে মিটিং ছিল; সব জায়গায় মানুষের ঢল। এই অবস্থা তারা দেইখা, যেখানে পারতেছে আমাদের লোকগুলিরে মারতেছে। আজকে আমাদের ৬ নম্বর ওয়ার্ডের মিটিং যে বাসায়, ওই বাসার কিছু রাখে নাই ডেক-ডেকচি সব ভেঙে ফেলছে। পরিকল্পিতভাবে রাতে গালাগালি করে আর ভাঙে।

এটার প্রতিকার চেয়ে নির্বাচন কমিশনের কাছে, এসপি সাহেবের কাছে কইছি, সবার কাছে বলছি। তারা কেবল দেখতেছি বলে।

প্রশ্ন: নির্বাচনের অভিজ্ঞতা আপনার দীর্ঘদিনের। এবার সাধারণ ভোটারদের কেমন সাড়া পাচ্ছেন?

সাক্কু: আসলে এটা উপনির্বাচন তো, কাউন্সিলর নাই, মানুষের আগ্রহটা কম। তারপরও আমি আমার মতো করে বলতেছি, যাইতেছি, একজন না একজনকে তো মেয়র নির্বাচিত করতে হবে। না করলে তো সিটি করপোরেশন চলবে না। আমরা পক্ষ থেকে আমি বলতেছি; মানুষের ব্যাপক সাড়া পাইতেছি। শুধু বলতেছি যারেই ভোট দেন, কেন্দ্রে যাইতে হবে। ভোটটা দেন, কেন্দ্রে যান তাইলে একটা মেয়র বানাইতে পারবেন।

প্রশ্ন: আপনার নেতাকর্মী ও সমর্থকদের হয়রানি বা হুমকির কথা বলছেন। সেটা কেমন?

সাক্কু: হুমকি তো প্রতি মুহূর্তে। আমাদের কর্মী তো চিহ্নিত আছে, সবসময় তাদেরকে বলতেছে, মারব-ধরব। ১০ তারিখের পর এলাকায় আসতে পারবে না….. বিভিন্ন রকমের। যেভাবে যেমন ভাষা ব্যবহার আরকি। হুমকি-ধামকি তো চলতেই আছে।

প্রশ্ন: বলা হয়ে থাকে, কুমিল্লায় আওয়ামী লীগের দ্বিধা-বিভক্ত রাজনীতির সুফল আপনি নানা সময়ে পেয়েছেন। এক সময় আওয়ামী লীগের এমপি আ ক ম বাহাউদ্দিন বাহারের সঙ্গে আপনার ঘনিষ্ঠতা ছিল। এবার বাহারের মেয়ে প্রার্থী হয়েছেন আপনার বিরুদ্ধে। তাহলে এবার পরিস্থিতি আপনার জন্য কতটা কঠিন?

সাক্কু: কেউ কারও কথায় ভোট দেয় না, জনগণ বুঝে ভোট দেয়। এটাই তো স্বাভাবিক। আওয়ামী লীগের দুই ভাগ আছে, আছে না? ২০১২ সালে ছিল, ২০১৭ সালেও ছিল। আমি আমার মতো ইলেকশন করছি। কেউ যদি আমার সাহায্য করে দেয়, হের নিজের ব্যাপার।

আগেও বলেছি, বাহাউদ্দিন সাহেবের লগে সম্পর্ক আছে, এটা তো আমি এখনও বলি, ‘কাজের স্বার্থে’। উনি এমপি, আমি মেয়র ছিলাম। কুমিল্লা সিটি উন্নয়নের স্বার্থে ২৭টা ওয়ার্ডে উনারও ভোট আছে, আমারও ভোট আছে। এটার উন্নয়নের স্বার্থে আমরা একসঙ্গে কাজ করেছি। এটার ভেতরে অন্য কিছু না।

আমি কি আওয়ামী লীগ করি? এটা উন্নয়নের স্বার্থে। প্রশাসনিকভাবে একখানে না হইলে কোনো উন্নয়ন হয় না। যে বলে, এটা মানুষের সুর উঠানোর লাইগা বলে। আপনি যদি একটা সংস্থায় চাকরি করেন বা থাকেন আপনি কি সংস্থার বাইরে কিছু করতে পারবেন? আমি স্থানীয় সরকারের আন্ডারে মেয়র, আমার কুমিল্লার মানুষ ভোট দিছে কাজ করার জন্য। এই কাজ করতে হলে তো সরকারের সঙ্গে কথা বলতে হবে।

আমি দেখাই দিছি, আমার লগে অন্য সম্পর্ক নাই, রাজনৈতিক সম্পর্ক নাই। তাহলে ২০২২-এ আমি দাঁড়াই কেন? রিফাত সাহেব উনার ক্যান্ডিডেট ছিলেন, দাঁড়াইছি না? এবার উনার মেয়ে ক্যান্ডিডেট, আমি দাঁড়াইছি না? তো, সম্পর্কটা থাকল কোন দিক দিয়া? রাজনৈতিক হিসাবে কোনো সম্পর্ক নাই।

প্রশ্ন: আওয়ামী লীগের দুজন নেতা নির্বাচন করছেন। আওয়ামী লীগের ভোট ভাগ হলে আপনাকে কতটা সুবিধা দেবে?

সাক্কু: আমি একটু বলি, স্থানীয় সরকার নির্বাচনটা হলো অন্য মেরুকরণ। জাতীয় নির্বাচনে মার্কা থাকে, মার্কা নিয়ে যে আসে, সে খারাপ হইলেও ভোটাররা তার দলের লোককে ভোট দিয়ে দেয়। কারণ দলীয় সরকার গঠন করতে হবে। স্থানীয় সরকার নির্বাচনে এটার প্রতিফলন হয় না। বহু আওয়ামী লীগের লোক বিএনপিরও লোককে ভোট দেয়, বহু বিএনপির লোক আওয়ামী লীগের লোককে ভোট দেয়। আমি তো তিনবার ইলেকশন করছি, বাস্তবতাটা আমি জানি। এটা ব্যক্তির পছন্দের জায়গা।

প্রশ্ন: বিএনপির আরেকজন নেতা আছেন। তিনিও গত নির্বাচনে ভালো ভোট পেয়েছেন। ফলে বিএনপির ভোট ভাগ হলে আপনার জন্য কতটা অসুবিধা হবে বলে মনে করেন?

সাক্কু: ২০২২ সালের জুনে যে নির্বাচন হয়েছে, আমি তো পরাজিত হয়েছি ৩৪২ ভোটে। আমি আমার লগের ক্যান্ডিডেট কই না… সে দাঁড়াইছে, আমার থেকে তো বেশি ভোট পায় নাই, পাইছে? বিভিন্ন কথা বলে তারটা সে পাইছে; এটাই তো বাস্তবতা। কে কাকে ভোট দিব, জনগণ বলতে পারবে, আমি কীভাবে বলব।

প্রশ্ন: এবার বিএনপির নেতাদের একটা অংশ নিজাম উদ্দিন কায়সারের সঙ্গে। এর কারণ কী বলে মনে করেন?

সাক্কু: আমার কথা শোনেন, স্থানীয় সরকার নির্বাচনে বিএনপি গেছে কাউকে নমিনেশন দিছে? এটা এখন পর্যন্ত বন্ধ। ভবিষ্যতে উপজেলা নির্বাচনে বিএনপি যদি কর্মী ধরে রাখতে চায়, আমার দৃষ্টিকোণ থেকে, নির্বাচনে আসতে হবে। না হলে কর্মী সব চলে যাবে। কে কার দল করে, ইয়াছিন সাহেবের (কুমিল্লা দক্ষিণ জেলা বিএনপির আহ্বায়ক হাজী আমিন-উর-রশিদ ইয়াছিন) শালা দেখে কায়সারকে ভোট দেবে, আর আমি আকবর হোসেনের (সাবেক মন্ত্রী ও বিএনপি নেতা অবসরপ্রাপ্ত কর্নেল আকবর হোসেন) ভাই দেখে আমারে ভোট দিব- এটা ঠিক না।

যারা বিএনপিমনা তারা দেখবে, বিএনপিরটা আসলে কোথা থেকে আসছে। কোথা থেকে কোনটা সৃষ্টি হইছে, কে করছে না করছে দেখবে। আমি যদি আমার কথাই কইতে থাকি, সারাদিন কই… বক্তৃতার ভেতরে শুরুই হয়, তারাই বিএনপি। তারা বিএনপিতে আইছে তো একানব্বইয়ের পরে, বিএনপির জন্ম হইছে তো আটাত্তরের আগে। জিনিসটা বুঝায় কী, তারা তো আরও ১৫-২০ বছর পরে কুমিল্লায় আসছে।

প্রশ্ন: সিটি নির্বাচনে ভোটারদের কেন্দ্রে আনার ক্ষেত্রে বড় ভূমিকা নেন কাউন্সিলর প্রার্থীরা। এখানে শুধু মেয়র প্রার্থী- সেটা কি ভোটার উপস্থিতিতে কোনো প্রভাব ফেলবে?

সাক্কু: এটা তো বাস্তবে প্রভাব ফেলবেই। প্রতিটা ওয়ার্ডে প্রার্থী ৪-৫ জন থাকেই। তাদের কিছু না কিছু ভোট আছেই। কারও ৫০০ আছে, কারও হাজার-পনেরশ আছে, আছে তো? কাউন্সিলরা তারা ব্রিফিং করে আনে সবসময়। ফলে ভোটার কম আসতে পারে। এজন্য আমরা ব্যাপকভাবে প্রচার করতেছি, একটা ভালো মেয়র নির্বাচিত করতে হলে, আপনারা ভোটকেন্দ্রে আসেন; এটা বলতেছি। কিছু না কিছু প্রভাব পড়তে পারে বা না-ও পড়তে পারে। কিন্তু প্রভাব পড়ার শঙ্কাটা একটু বেশি।

প্রশ্ন: চেয়ারম্যান ও মেয়র হিসেবে দীর্ঘদিন দায়িত্ব পালন করেছেন। আপনার ব্যর্থতা কী ছিল?

সাক্কু: একটা কাজ করতে গেলে ভুলত্রুটি থাকবেই; দুই টার্ম সিটি করপোরেশনের মেয়র। আপনারা শুধু বলেন, দায়িত্ব দুই টার্ম। ২০১২ সালে আমি যখন প্রথম মেয়র হই, এটা কী ছিল? পৌরসভা ছিল। দুটা পৌরসভাকে একখানে করে সিটি করপোরেশন করে দিছে। নতুন সিটি করপোরেশনের মেয়র কেডা, আমি একদম নতুন সাক্কু। এটা যদি ঢাকা, খুলনা, রাজশাহী, বরিশালের মতন পুরান সিটি করপোরেশন হইত……,। আমি দাঁড়াইছি, আমার হাজার কোটি টাকা আছে, আমি কাজ শুরু করতাম। বাস্তবে এটা তো ছিল না; এটা ছিল জিরো।

দুটা পৌরসভা একখানে করে সিটি করপোরেশন। আমি আড়াই বছর লাগায়া একটা মাস্টার প্ল্যান কী করব, কী করণীয় আছে ২৭টা ওয়ার্ডে? আর টাকা কোত্থেকে আইব শেলটেকের মাধ্যমে পরিমাপ করে বিভিন্ন সংস্থা থেকে আস্তে আস্তে কাজ করে এতদূর আনছি। এটা বললেই তো হয় না। আপনি একটা ভবন তুলতে যান, প্রথমে অর্থনৈতিক অবস্থা দেখতে হবে, আপনার কী রকম অর্থনৈতিক অবস্থা আছে? দেইখাই না একতলা-দোতলা কাজ ধরতে হবে। যাদের অর্থনৈতিক অবস্থা ভালো তারা বড় ভবন উঠায়, যাদের কম পয়সা তারা ছোটে দুই-একতলা উঠায়; এটাই তো কথা।

প্রশ্ন: ভোট সুষ্ঠু হবে কি হবে না- এ নিয়ে ভোটারদের মধ্যে ‘শঙ্কা’ আছে। এ বিষয়ে আপনার মতামত কী? 

সাক্কু: নির্বাচন কমিশনার আনিসুর রহমান উনি আসছেন, বহু কথা বলেছেন; আমরাও উনার কাছে বলেছি। গত নির্বাচনে রেজাল্ট যে উল্টায় ফালাইছে, তিন ঘণ্টা পরে রেজাল্ট দিছে, এটার কথা বলছি। এটার যেন পুনরাবৃত্তি না হয়, রেজাল্ট আসলেই যেন দিয়ে দেয়, এমন বহু কথা বলা হইছে। উনি চেষ্টা করবেন বলছে। কিন্তু উনি যাওয়ার পরদিন আবহাওয়া আরও উত্তপ্ত হয়ে গেছে। পোস্টার তো নাই-ই। আমরা বাড়ির সামনে দেইখেন, আমার বাসা অথচ আমার পোস্টার নাই। বাসের পোস্টার, ঘোড়ার পোস্টার, এটা নজিরবিহীন কাণ্ড না?

প্রশ্ন: মেয়র নির্বাচিত হলে প্রথম কোন সিদ্ধান্তটা নেবেন?

সাক্কু: এটা মূল্যবান একটা প্রশ্ন করছেন। আমি এবার মেয়র নির্বাচনে দাঁড়াইতাম না। ২০২২ সালের জুনের নির্বাচনের আগে আমি কিন্তু মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর থেকে ১ হাজার ৫৩৮ কোটি টাকার একটি প্রকল্প একনেকের মাধ্যমে পাস করিয়ে আনতে সক্ষম হয়েছি। এটাতে বহু কষ্ট হইছে আমার। এই বাকি কাজটা করানোর জন্যই আমার আগ্রহটা বেশি। এবার যদি মেয়র হতে পারি, তাহলে এই ২৭টা ওয়ার্ডে আমি যে পরিকল্পনা করেছিলাম, এই কাজগুলি করব। কারণ, এই দেড় বছরে তারা কিছুই করে নাই। আমি এবার চেষ্টা করব, কাজটা করার জন্য।

প্রশ্ন: এটাকে কি আপনার শেষ নির্বাচন বলছেন?

সাক্কু: আমার বয়স হয়ে গেছে। শুধু বয়সের জন্যও না, বারবার একজন লোক নির্বাচন করবে এটা ঠিক না, আমার দৃষ্টিকোণ থেকে। আপনারা ভবিষ্যতে দেখবেন আমার কথাটার প্রতিফলন হয় কি-না। আমি পৌর চেয়ারম্যান ছিলাম, দুইবার পৌর মেয়র ছিলাম, দুইবার সিটি মেয়র ছিলাম। আমি কি খালি করব নাকি? আরও তো আছে; দল ও দলের বাইরে প্রচুর লোক আছে। মেয়র হওয়ার কারণে আমি মানসিক সব শক্তি দিয়ে রাজনীতিটা করতে পারি নাই। এবার ইনশাল্লাহ পাস করলেও করব, ফেল করলে তো করবই। কিন্তু নির্বাচনমুখী আর হব না।

প্রশ্ন: ভোটের ফলাফল যাই হোক, মেনে নেবেন কিনা?

সাক্কু: এটা তো বাস্তব। আমি কি দখল করতে আসছি নাকি? মানুষ দেখবে, ভোটটা সুষ্ঠুভাবে হইছে, না অসুষ্ঠু হইছে। গতবার হইছে, আমি কিছু বলি নাই। একটা বৃদ্ধ, একেবারে ছোটো পোলাও বলে, আপনি পাস করছেন- এটাই পাওনা। যে একটা নির্বাচন করে, তার পাওনা হলো মানুষ তাকে বলে, ‘আপনি পাস করছেন’। এর থেকে ভালো আর কিছু থাকতে পারে না।

প্রশ্ন: ভোটের ব্যস্ততার মধ্যেও সময় দেওয়ার জন্য আপনাকে ধন্যবাদ।

সাক্কু: আপনাকেও ধন্যবাদ।