বাংলা ১৪২৯ সালের ২৪ ফাল্গুন বৃহস্পতিবার ছিল বছরের শেষ শুভদিন। হিন্দু ধর্মীয় শাস্ত্র অনুযায়ী সাধারণত চৈত্র মাসে বিয়ে হয় না। তাই ফাল্গুনের এই দিনে বিয়ে না হলে এ বছর আর বিয়ের দিন নেই।
তাই বৃহস্পতিবার রাতে শেরপুর শহরের বিপুল সংখ্যক বিয়ে হয়েছে। একদিনে এত অধিক সংখ্যক বিয়ে এর আগে দেখা যায়নি বলে স্থানীয়দের ভাষ্য। তবে কয়টি বিয়ে বৃহস্পতিবার হয়েছে তার সঠিক পরিসংখ্যান পাওয়া যায়নি।
একদিনে অনেক বিয়ের আয়োজন হওয়ায় হিন্দু বিয়ের প্রয়োজনীয় অনুষঙ্গ পুরোহিত, বাদ্যযন্ত্রী, ভ্যাসহ অন্যান্য জিনিসের চাহিদা বেড়ে যায়।
শেরপুর শহরের গৃদানারায়ণপুর মহল্লায় সুস্ময় ভৌমিকের বিয়ে হয় বৃহস্পতিবার।
সুস্ময় ভৌমকের ছোট ভাই পাপ্পু ভৗমিক জানান, কনের বাড়ি নেত্রকোণার মোহনগঞ্জ হলেও ওই কনে শেরপুর শহরের গৌরীপুরে বোনের বসায় থাকতেন। মাঘ মাসের ৫ তারিখ বিয়ে ঠিক হলেও ওই মাসে কোনো শুভদিন না থাকায় ২৪ ফাল্গুন বৃহস্পতিবার বিয়ে হয়।
পাপ্পু ভৌমিক আরও জানান, অধিক সংখ্যক বিয়ে একই দিনে হওয়াতে বাদ্যযন্ত্রীদের চাহিদা বেড়ে যায়। আট হাজার টাকা দিয়ে যেখঅনে সচরাচর বাদ্যযন্ত্রী পাওয়া যায়, সেখানে দিতে হয়েছে ১৬ হাজার টাকা।
শহরের পাড়া-মহল্লা বিয়েবাড়ি ও কমিউনিটি সেন্টারগুলো বাদ্য বাজনা আর হিন্দু নারীদের উলুধ্বনিসহ গান-বাজনায় মুখর ছিল রাতভর। পাশাপাশি শহরে বিপুলসংখ্যক বরযাত্রীর আগমন ঘটে। দূরদূরান্ত থেকে আসা বরযাত্রীদের রাত যাপনের জন্য শহরের আবাসিক হোটেলগুলো ছিল পরিপূর্ণ।
শেরপুর শহরের মুন্সিবাজার এলাকার ব্যবসায়ী রবীন্দ্র চন্দ্র দে বলেন, আর মাত্র এক সপ্তাহ পরেই চৈত্র মাস। চৈত্র মাসে কোনো বিয়ে হবে না। তাই তড়িঘড়ি করে ফাল্গুন মাসের বিয়ের শেষ দিনটিতে তার মেয়ের বিয়ে দিলেন।
শেরপুরের বিশিষ্ট পুরোহিত কমল চক্রবর্তী বলেন, বাংলা ১৪২৯ সালের ২৪ ফাল্গুন ছাড়া এই সালে বিয়ের আর কোনো শুভদিন নেই। আর চৈত্র মাসে হিন্দুদের বিয়ে হয় না। ফাল্গুনের এই দিনটিতে বিয়ে না হলে ছেলেমেয়ের অভিভাবকদের প্রায় দেড় মাস অপেক্ষা করতে হবে। শুভ কাজের দেরি করতে নেই । তাই ছেলেমেয়ের অভিভাবকেরা বৃহস্পতিবারের শুভ দিনটিকে কাজে লাগিয়েছেন।
তবে এমন বিয়ের ধুম পড়ায় পুরোহিত ও বাদ্যযন্ত্রীদের কদর একটু বেশিই ছিল।