হঠাৎ করে জ্বালানি তেলের দাম বৃদ্ধির কারণে রাঙামাটি শহরের একমাত্র গণপরিবহণ অটোরিকশা ও দূরপাল্লার সব ধরনের যানবাহন চলাচল বন্ধ হয়ে গেছে।
শনিবার সকাল ১০টা থেকে অটোরিকশা, সিএনজি বিশেষ করে গণপরিবহনের সংকট রয়েছে রাস্তায়। তাই ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে শহরবাসীকে।
অনেককে দীর্ঘপথ হেঁটে যেতে দেখা গেছে। এই সুযোগে কেউ কেউ ব্যক্তিগত মোটরসাইকেল ভাড়ার কাজে নামিয়ে দিয়েছেন।
শনিবার থেকে জ্বালানি তেলের বাড়তি দাম কার্যকর হয়েছে। বাসের জ্বালানি ডিজেলের দাম লিটারে ৩৪ টাকা বাড়িয়ে ১১৪ টাকা হয়েছে। ছোট গাড়ি ও মোটর সাইকেলের জ্বালানি পেট্রোল ও অকেটেনের দাম যথাক্রমে বেড়েছে ৪৪ ও ৪৬ টাকা।
শনিবার সকাল থেকে নগরীতে গণপরিবহন বন্ধের ঘোষণা দিয়েছে মালিক ও শ্রমিকপক্ষ।
শহরের সিএনজি চালক মো. হারুন অভিযোগ করে বলেন, “ঘুম থেকে উঠেই দেখি জ্বালানি তেলের দাম বেড়ে গেছে। যে টাকা আয় হয় তার সবই যদি তেল কিনতে চলে যায় তবে আমরা খাব কী, আর পরিবার চালাব কিভাবে।”
আরেকজন চালক মোসলেম উদ্দিন বলেন, ২০১৩ সালের পর আর ভাড়া বাড়েনি। ভাড়া নিয়ে সকাল থেকে যাত্রীদের সাথে চালকদের তর্ক ও হাতাহাতির ঘটনা ঘটে। তাই নতুন ভাড়া নির্ধারণ না করা পর্যন্ত শহরের একমাত্র গণপরিবহণ অটোরিকশা বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
চালকদের দাবি, জেলা প্রশাসন দ্রুত ভাড়া নির্ধারণ করে দিলেই পুনরায় গণপরিবহন চালু হবে।
সকালে যারা কাজে বেরিয়েছেন তারা পড়েছেন গণপরিবহণ সংকটে। সাধারণ মানুষের অভিযোগ, পরিবহন ব্যয় দ্বিগুণ হওয়ায় নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যমূল্য বাড়বে। সবকিছু সাধারণ মানুষের সামর্থ্যের বাইরে চলে যাবে। পরিবহন সেক্টরে অস্থিরতা দেখা দেবে।
হাসপাতাল এলাকার বাসিন্দা মো. শাহ নেওয়াজ বলেন, “সকালে অফিসের উদ্দেশে বের হয়ে দেখি সিএনজি চলছে না। ভাড়া বৃদ্ধি না হলে তারা গাড়ি চালাবেন না। এখন বাধ্য হয়ে হেঁটে অফিসে যেতে হচ্ছে।”
বনরূপায় গাড়ির জন্য অপেক্ষায় থাকা সুমন চাকমা জানান, সকালে কলেজে যাওয়ার জন্য বের হয়ে দেখেন গাড়ি চলছে না। কলেজে যাওয়াও জরুরি, আবার যেসব গাড়ি চলছে বাকি চালকরা সেগুলোও বন্ধ করে দিচ্ছে।
“এভাবে হুট করে বন্ধ না করে ঘোষণা দিলেই হয়। আমরা অন্য ব্যবস্থা করার চেষ্টা করতে পারতাম।”
সব ধরনের জ্বালানি তেলের দাম বাড়ায় সকাল থেকে পেট্রোল পাম্পগুলোতে বাড়তি চাপ লক্ষ্য করা গেছে।
এদিকে বিআরটিসি ছাড়া দূরপাল্লার কোনো বাস শহর ছেড়ে যাচ্ছে না। ফলে কার্যত রাঙামাটিবাসী অবরুদ্ধ হয়ে পড়েছেন। আর প্রজ্ঞাপনের অপেক্ষায় আছে জেলা প্রশাসন।
রাঙামাটি অটোরিকশা চালক সমিতির সাধারণ সম্পাদক মিজানুর রহমান বাবু বলেন, “প্রশাসনের পক্ষ থেকে ভাড়ার হার নির্ধারণ করে দেওয়া না হলে শহরে সব ধরনের অটোরিকশা চলাচল বন্ধ থাকবে। কারণ ভাড়া নিয়ে যাত্রীদের সঙ্গে মারামারি,ঝামেলা এসবের দায় কে নিবে?”
রাঙামাটির জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ মিজানুর রহমান বলেন, “প্রজ্ঞাপন জারি হলে কী সিদ্ধান্ত হয় সেটা দেখার পর আমরা সিদ্ধান্ত নেব।”
রোববার সকাল ১১টায় এই বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়ার জন্য সভা আহ্বান করা হয়েছে।