১০ বছরে ইনুর নগদ অর্থ ৬ লাখ ৮৫ হাজার টাকা থেকে বেড়ে বর্তমান হয়েছে ৩ কোটি ৫৬ লাখ ১৫৫ টাকা।
Published : 09 Dec 2023, 11:22 PM
কুষ্টিয়া-২ আসনের টানা তিনবারের সংসদ সদস্য ও জাসদের সভাপতি হাসানুল হক ইনুর গত ১০ বছরের নগদ অর্থের পরিমাণ বেড়েছে প্রায় ৫২ গুণ।
এ সময়ের মধ্যে ইনুর স্ত্রীর নগদ অর্থ বেড়েছে ২৫ গুণের বেশি।
মহাজোট সরকারের তথ্যমন্ত্রীও ছিলেন হাসানুল হক ইনুর। কুষ্টিয়া-২ (মিরপুর-ভেড়ামারা) আসনে দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে প্রার্থী হিসেবে নির্বাচন কমিশনে তিনি হলফনামা জমা দিয়েছেন।
ওই হলফনামার সঙ্গে বিগত দশম ও একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে জমা দেওয়া হলফনামা পর্যালোচনা করে এ তথ্য পাওয়া গেছে।
দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ইনুর দেওয়া হলফনামায় নগদ টাকা ছিল ৬ লাখ ৮৫ হাজার। একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ছিল ৫০ লাখ ৬৬ হাজার ৩৮৬ টাকা ৫৬ পয়সা।
আর এবার দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে হলফনামায় নগদ টাকা দিয়েছেন ৩ কোটি ৫৬ লাখ ১৫৫ টাকা। (এর মধ্যে গাড়ি বিক্রি বাবদ রয়েছে ১ কোটি ৫৮ লাখ ১৫৫ টাকা।)
অন্যদিকে, দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ইনুর স্ত্রীর নগদ অর্থের পরিমাণ ছিল ৬ লাখ ৩৮ হাজার ৯০ টাকা।
একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে হলফনামায় ছিল ৬০ লাখ ৩ হাজার ২৫৮ টাকা। এবার দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে এসে দাঁড়িয়েছে ১ কোটি ৬১ লাখ ৫৪ হাজার ৮৪৩ টাকা।
দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে হলফনামায় দেওয়া তথ্য মতে, ইনুর অস্থাবর সম্পদের মধ্যে ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানে জমা আছে ১৪ লাখ ৮৪ হাজার ৯২৪ টাকা; এই খাতে ৫ বছর আগে ছিল ৪৪ লাখ ৫১ হাজার ৪৮০ টাকা। ১০ বছর আগে ছিল ৩৬ লাখ ৭০ হাজার ১৫৬ টাকা।
স্ত্রীর নামে এবার ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানে জমা আছে ১৬ লাখ ৩৭ হাজার ২৭০ টাকা। ৫ বছর আগে ছিল ১৪ লাখ ২৮ হাজার ৬৭৭ টাকা। ১০ বছর আগে ছিল মাত্র ৮০ হাজার ৪৯৩ টাকা।
দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে হলফনামায় ইনুর নিজের ও নির্ভরশীলদের আয়ের মধ্যে কৃষি খাতে কোনো আয় নেই। তার আয়ের বড় অংশ আসে ব্যবসা, সংসদ সদস্য হিসেবে বেতন-ভাতা, ব্যাংক-আর্থিক প্রতিষ্ঠানের লভ্যাংশ ও টিভি টক শো থেকে। সেখানে ইনু নিজেকে রাজনৈতিক কর্মী ও প্রকৌশলী হিসেবে উল্লেখ করেছেন।
দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে হলফনামায় ইনু ব্যবসা থেকে বার্ষিক ৭ লাখ ৬২ হাজার ১৫৯, বেতন-ভাতা থেকে ২৩ লাখ ৯৬ হাজার ৫৭৫ টাকা এবং টিভি টক শো ও ব্যাংক সুদ থেকে ২ লাখ ১৬ হাজার ৭০ টাকা আয় দেখিয়েছেন। সব মিলিয়ে তার বার্ষিক আয় ৩৩ লাখ ৭৪ হাজার ৮০৪ টাকা।
একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের সময় তিনি ৩৪ লাখ ৬১ হাজার ৬২৩ টাকা আয় দেখিয়েছিলেন। ১০ বছর আগে ছিল ২৬ লাখ ৩৬ হাজার ৭৮২ টাকা এবং ২৫ ভরি সোনা যা ১৯৭৪ সালে উপহার হিসেবে প্রাপ্ত দেখানো হয়েছে। এবার তিনি একই পরিমাণ সোনা দেখিয়েছেন।
এ ছাড়া ১০ বছর আগে স্ত্রী ১২ ভরি সোনা দেখানো হলেও এবারের হলফনামায় স্ত্রীর সোনা দেখানো হচ্ছে ৪০ ভরি।
হাসানুল হক ইনু এবারের হলফনামায় উল্লেখ করেছেন তার চার লাখ টাকা দামের একটি জিপ আছে।
পূর্বাচলে ১০ কাঠার একটি প্লট যার দাম দেখানো হয়েছে ১৬ লাখ ১০ হাজার টাকা যা দশম ও একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের হলফনামায়ও উল্লেখ করা হয়েছিল।
এসব ব্যাপারে জানতে চাইলে শনিবার রাতে জাসদ সভাপতি হাসানুল হক ইনু বলেন, “আমি হলফনামায় যা উল্লেখ করেছি সৎভাবে ও স্বচ্ছভাবে বর্ণনা দিয়েছি। আমাদের সম্পদ বেড়েছে।
“এখন তো মিডিয়া চটকদারি শব্দ ব্যবহার করে লিখছে এত গুণ বেড়েছে। এতে মানুষ বিভ্রান্ত হচ্ছে। কিন্তু পরিষ্কারভাবে সেটা বলা উচিত আমি মনে করি”, যোগ করেন সাবেক তথ্যমন্ত্রী।