পার্বত্য চট্টগ্রাম ভূমি-বিরোধ নিষ্পত্তি কমিশনের ‘অক্ষমতায়’ সাধারণ মানুষ হতাশ বলে মনে করছেন এই কামিশনের চেয়ারম্যান অবসরপ্রাপ্ত বিচারপতি আনোয়ারুল হক।
সোমবার তিনি রাঙামাটি সার্কিট হাউজে বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “আমরা কেউ যেন কিছু করতে পারছি না। এ কারণে ভূমি কামিশনের প্রতি সাধারণ মানুষের হতাশা বেড়েছে।”
তিনি বলেন, “আমার এই কাজটি তো বিচারিক না। এখানে কমিটির বাকিদের মতামতের উপর নির্ভর করেই করতে হয়। এখানে পাহাড়ি-বাঙালি না, বাংলাদেশেরে নাগরিকদের সুষ্ঠু বিচার দেওয়ার জন্য আমাদের এই কাজ। কেউ যেন ক্ষতির সম্মুখীন না হয়, সেটাও দেখব আমরা।”
রাঙামাটি আসার উদ্দেশ্য জানাতে চাইলে কমিশন চেয়ারম্যান বলেন, “করোনার কারণে দীর্ঘদিন সভা করা হয়নি। করোনার আগে কাজের অনেকদূর আমরা এগিয়েছিলাম। কাজের গতিকে বৃদ্ধির লক্ষ্যেই রাঙামাটি আসা। কমিটির এখানকার দুই সদস্যের সাথে আলাপ করার কথা থাকলেও ওনারা শারীরিকভাবে কিছুটা অসুস্থ থাকায় আপাতত আলোচনা হয়নি।”
তিনি জানান, পাহাড়ে দ্বৈত ভূমি বন্দোবস্তি আছে; সেই সমস্যাগুলো সমাধানের লক্ষ্যে সরকার এই কমিশন করে দিয়েছে। আইনের মাধ্যমে কমিশনকে এই ক্ষমতা দিয়েছে সরকার।
“কিন্তু বিভিন্ন কারণে প্রত্যাশিত ফল দিতে পারিনি আমরা। বিধিমালা প্রণয়নের জন্য সরকারের কাছে পাঠানো হয়েছে। আমরা দেখি; পরের বার সভায় এই বিষয়ে কাজের আরও অগ্রগতি হবে বলে আশা করি।”
পার্বত্য চুক্তি স্বাক্ষরের পর ভূমি বিরোধ নিষ্পত্তির জন্য ২০০১ সালে ‘পার্বত্য চট্টগ্রাম ভূমি-বিরোধ নিষ্পত্তি কমিশন আইন’ করে সরকার। আইনটি ২০১৬ সালে সংশোধন করা হয়। কিন্তু আইন সংশোধনের পর কমিশনের বিধিমালা প্রণয়ন করা হয়নি। এই অবস্থায় থমকে আছে ভূমি বিরোধ নিষ্পত্তির কাজ। আইনটি সংশোধনের পর কমিশন কাজ শুরু করে এবং বিরোধপূর্ণ জমির মালিকদের কাছে দরখাস্ত আহ্বান করে। কিন্তু বিধিমালা প্রণয়ন না হওয়ায় কাজে হাত দিতে পারেনি কমিশন। এরপর আসে করোনাভাইরাসের সংক্রমণ। স্থবির হয়ে পড়ে তিন পার্বত্য জেলার ভূমি বিরোধ নিষ্পত্তির কাজ।