Published : 18 Jan 2024, 08:49 PM
তাপমাত্র কিছুটা বাড়লেও মৃদু শৈত্যপ্রবাহের সঙ্গে ঘন কুয়াশার কারণে কনকনে ঠান্ডা অনুভূত হচ্ছে মৌলভীবাজারের শ্রীমঙ্গল উপজেলায়।
এ পরিস্থিতিতে শ্রীমঙ্গলের জনজীবন স্থবির হয়ে পড়েছে। প্রচণ্ড ঠান্ডায় স্কুলে যেতে ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে কোমলমতি শিশুদের।
শ্রীমঙ্গল সহকারী আবহাওয়া পর্যবেক্ষক আনিসুর রহমান জানান, বৃহস্পতিবার জেলার সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ১০ দশমিক ২ ডিগ্রি সেলসিয়াস রেকর্ড করা হয়েছে।
বুধবার শ্রীমঙ্গলের সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ছিল ৯ দশমিক ৬ ডিগ্রি সেলসিয়াস; যা ছিল দেশের দ্বিতীয় সর্বনিম্ন তাপমাত্রা। আর মঙ্গলবার ৯ দশমিক ৭ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছিল; যা সারাদেশের সর্বনিম্ন ছিল বলে আনিসুর জানান।
আগের দিনের মত বৃহস্পতিবারও অধিকাংশ সময় সূর্যের দেখা মেলেনি। দুপুরে কিছু সময়ের জন্য সূর্য উঁকি দিলেও ঘন কুয়াশায় ঢাকা ছিল পুরো জেলা।
রাত ১০টার পর কুয়াশা বাড়তে শুরু করে। তখন গাড়ি চালাতে গিয়ে বিপাকে পড়েন চালকরা। গৃহপালিত পশু নিয়ে কৃষকরাও বিপদে রয়েছেন; গবাদি পশুর গায়ে নিজেদের ব্যবহৃত কাপড় দিয়ে তাদের ঠান্ডা থেকে রক্ষার চেষ্টা করছেন।
শ্রীমঙ্গল সহকারী আবহাওয়া পর্যবেক্ষক বিবলু চন্দ্র দাস বুধবার বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “এ অবস্থা আরও কয়েকদিন থাকবে।”
এদিকে স্কুলে যাওয়ার জন্য প্রচণ্ড ঠান্ডার মধ্যে বাসা বেরিয়ে অনেক শিশু অসুস্থ হয়ে পড়ছে। তাপমাত্রা ১০ ডিগ্রির নিচে নামলে স্কুল বন্ধ রাখার নির্দেশ থাকলেও তা না করায় অনেকে অসন্তোষ প্রকাশ করেছেন।
শ্রীমঙ্গল প্রাথমিক শিক্ষক সমিতির সভাপতি জহর তরফদার বলেন, “তাপমাত্রা ১০ ডিগ্রির নিচে নামলেই ছুটি ঘোষণার প্রজ্ঞাপন রয়েছে। তবে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ তা দিচ্ছে না।”
শিক্ষক প্রণবেশ চৌধুরী অন্তু বলেন, “শ্রীমঙ্গলের তাপমাত্রা দশের নিচে নেমেছে। কুয়াশার সঙ্গে ঠান্ডা বাতাস বইছে। যে শীত, বড় মানুষই তো সহ্য করতে পারছেন না। শিশুরা তা কীভাবে করবে?”
আকরবর হোসেন শাহীনের সন্তান পড়ে শ্রীমঙ্গল চন্দ্রনাথ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে। মন্ত্রণালয়ের সিন্ধান্ত সঠিক নয় বলে মনে করেন এ অভিভাবক।
তিনি বলেন, “শিশুরা যখন স্কুলে যায় তখন তাপমাত্রা ১০ ডিগ্রির নিচে থাকে। দুপুরের দিকে কিছুটা বাড়ে। আবার বিকাল থেকে কমতে শুরু করে। ফলে সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ১০ ডিগ্রি হওয়ার সম্ভাবনা খুবই কম।”
শ্রীমঙ্গল দি ইলেট ফুলতলী ছাহেব (র.) একাডেমির প্রধন শিক্ষক আব্দুল তৌয়াহিদ বলেন, “এবারের শীত আর বাতাস সহ্যের বাইরে চলে গেছে। সূর্য়ের দেখা তো মিলতেছে না।”
জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মো. খোরশেদ আলম বলেন, “শ্রীমঙ্গল মৌলভীবাজারে শীত পড়েছে, বিষয়টি আমরা দেখছি। কিন্তু মন্ত্রণালয় থেকে যে প্রজ্ঞাপন দেওয়া হয়েছে তাতে লেখা রয়েছে সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ১০ ডিগ্রির নিচে হলে ছুটি দিতে।
“আমরাতো এই নির্দেশনার বাইরে যেতে পারি না।”
তিনি বলেন, “হয়ত লেখার সময় এটি ভুল হয়েছে। কিন্তু সংশোধিত নতুন প্রজ্ঞাপন না আসলে আমরা ছুটি দিতে পারব না।”