সাভারের আশুলিয়ায় স্বামী-স্ত্রী পরিচয়ে বাসা ভাড়া নেওয়ার চারদিনের মাথায় তালাবদ্ধ ঘর থেকে যুবকের লাশ উদ্ধার করেছে পুলিশ। তবে কথিত স্ত্রী নিখোঁজ রয়েছেন।
সোমবার সন্ধ্যায় আশুলিয়ার জিরাব এলাকার একটি ভাড়া বাড়ি থেকে লাশটি উদ্ধার করা হয় বলে আশুলিয়া থানার এসআই ইউনূস আলী জানান।
নিহত আলীনূর বিশ্বাস (২৮) মাগুরার শ্রীপুর উপজেলার হোগলডাঙ্গা গ্রামের বাহাদুর বিশ্বাসের ছেলে। তবে বাসা ভাড়া নেওয়ার সময় তার সঙ্গে স্ত্রীর পরিচয়ে থাকা নারীর সন্ধান পাওয়া যায়নি।
পুলিশের পাশাপাশি র্যাব, পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই) ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছে।
এসআই ইউনূস আলী বলেন, লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য ঢাকা শহীদ সোহরাওয়ার্দী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। নিহতের শরীরে একাধিক আঘাতের চিহ্ন আছে। ওই ঘর থেকে একটি রক্তমাখা বটি জব্দ করা হয়েছে। হত্যাটি দুই থেকে তিন দিন আগে সংঘটিত হয়ে থাকবে বলে ধারণা করা হচ্ছে।
“প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে, আলীনূরকে বটি দিয়ে গলা কেটে হত্যা করেছে তার কথিত স্ত্রী।”
প্রতিবেশীদের বরাত দিয়ে পুলিশের এ কর্মকর্তা বলেন, গত বৃহস্পতিবার স্বামী-স্ত্রী পরিচয়ে ওই বাসা ভাড়া নেন আলীনূর ও তার সঙ্গে থাকা এক নারী। গত রোববার এক নারী ফোনে ওই যুবকের স্বজনদের জানায় যে আলীনূরকে ঘরে আটকে রাখা হয়েছে; তারা গিয়ে যেন উদ্ধার করে। স্বজনরা সোমবার এসে ঘরের তালা ভেঙে ভেতরে আলীনূরের লাশ দেখতে পায়।
এ ঘটনায় আশুলিয়া থানায় একটি মামলার প্রস্তুতি চলছে বলে তিনি জানান।
নিহতের ভগ্নিপতি জাকির হোসেনের বলেন, গতকাল শ্যালক আলীনূরের মোবাইল নম্বর থেকে কল দিয়ে এক নারী কথা বলেন। ওই নারী বলেন- ‘আলীনূরকে এক রুমে তালা দিয়ে রাখছি। আপনারা এসে ওকে নিয়ে যান।’
“পরে ওই নারী আমাকে বাসার ঠিকানা দেয়। আমি আজ সকালে এসেছি। এসে ওই নম্বরে কল দিয়েছি; তখন আমাকে গালি দিয়ে ফোন কেটে দেয় সে। পরে আমি এলাকাবাসীর সহায়তায় বাড়ি খুঁজে বের করি। এসে ঘরের তালা ভেঙে শ্যালকের মৃতদেহ দেখতে পেয়ে পুলিশে খবর দিই।”
তিনি আরও বলেন, “গত কোরবানির ঈদের ছুটিতে ১৪ জুলাই গ্রামের এক মেয়ের সঙ্গে আলীনূরের পারিবারিকভাবে বিয়ে হয়। ওই স্ত্রীকে বাড়িতে রেখেই বিয়ের তিনদিন পর সে ঢাকায় ফিরে আসে।”
যে ঘরে লাশ পাওয়া গেছে সেই বাড়িওয়ালা দেলোয়ার হোসেন বলেন, “বৃহস্পতিবার রাতে ঘর ভাড়া নিছে তারা স্বামী-স্ত্রী পরিচয়ে। এখনও তাদের জাতীয় পরিচয়পত্র বা কোনো তথ্য নেওয়া হয়নি। শুক্রবার তারা ঘর ধোয়ামোছা করেছে। শনিবার দিনে আলীনূরকে আমি রিকশা চালাতে দেখেছি। আজকে যখন তার বাড়ির লোকজন তাকে খুঁজতে এসেছে তখন আমি এ ঘটনা জানতে পারি।”