ভ্যান চুরির অপবাদ দিয়ে গোপালগঞ্জে এক কিশোরকে ‘দফায় দফায় মারধরের পাশাপাশি বিড়ির আগুন দিয়ে পুড়িয়ে এবং মাথার চুল কেটে’ নির্যাতন করা হয়েছে, যার ভিডিও ছড়িয়েছে ফেইসবুকে।
জেলার কাশিয়ানী উপজেলার রামদিয়া পুলিশ তদন্ত কেন্দ্রের সামনে শনিবার সকালে এই নির্যাতন চালানো হয়।
কিশোরের বাবা উপজেলার উত্তর ফলসি এলাকার বাসিন্দা। দিনমজুরি করেন তিনি।
বাবার অভিযোগ, তার ১৭ বছর বয়সী ছেলে শনিবার সকালে এলাকার দুই ব্যবসায়ী মাছ নিয়ে রামদিয়া বাজারে যায়। বাজার থেকে ফেরার পথে কয়েকজন তাকে ভ্যান চুরির অপবাদ দিয়ে মারধর করে।
“ওই এলাকার বাসিন্দা কামরুল শেখসহ কয়েকজন মিলে আমার ছেলেকে দুই ঘণ্টা ধরে নির্যাতন করে। ছেলে অজ্ঞান হয়ে পড়লে তারা তাকে বিড়ির আগুনে পুড়িয়ে দেয়। পরে তাকে রামদিয়া পুলিশ ফাঁড়ির গেটের সামনে নিয়ে আবার মারধর করে এবং কাঁচি দিয়ে মাথার চুল কেটে দেওয়া হয়। সেই দৃশ্য ভিডিও করে তারা ফেইসবুকেও ছড়ায়।”
এলাকাবাসীর বক্তব্যেও এমন নির্যাতনের খবর পাওয়া গেছে।
খবর পেয়ে বাবা ছুটে যান ছেলেকে উদ্ধার করতে। সেখানে তাকে অকথ্য ভাষায় গালাগাল করা হয় বলে অভিযোগ।
বাবা বলেন, “ছেলেকে ওদের হাত থেকে বাঁচাতে লোকজনের কাছে সাহায্য চেয়েও পাইনি। ফাঁড়ি থেকে পুলিশ এসেও তাদের বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থা না নিয়ে চলে যায়। তারা আমার ছেলের ভ্যানও জোর করে আটকে রাখে। আমি এই নির্মম ঘটনার বিচার চাই।”
মারধরের কথা স্বীকার করেছেন কামরুল শেখ।
কামরুল বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “ওই কিশোর রামদিয়া বাজার থেকে ভ্যান চুরি করে পালিয়ে যাচ্ছিল। তাকে ধরে চোরের হিসাব চোরের সঙ্গেই করেছি। তাকে মারধর করা হয়নি। চড়-থাপ্পড় দিয়ে ছেড়ে দেওয়া হয়েছে।”
পুলিশ এ সম্পর্কে অবগত রয়েছে বলে জানালেও কোনো ব্যবস্থা নেয়নি।
রামদিয়া পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ পরিদর্শক বাবুল আকতার বলেন, “এ ধরনের একটা ঘটনা ঘটছে বলে শুনেছি। ভ্যান চুরি করতে গিয়ে এক কিশোর হাতে-নাতে ধরা পড়ে। নিজামকান্দি ও বেথুড়ী ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যানের মধ্যস্থায় তাকে ছেড়ে দেওয়া হয়। তবে ফাঁড়িতে এখনও কেউ এ ব্যাপারে অভিযোগ করেনি।”
এ বিষয়ে তদন্ত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে গোপালগঞ্জের পুলিশ সুপার আয়েশা সিদ্দিকা জানিয়েছেন।