ভালুক শাবক দুটিকে চকরিয়ার ডুলাহাজারা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব সাফারি পার্কে উন্মুক্ত করার বিষয়ে বন বিভাগের সঙ্গে আলোচনা চলছে বলে জানান এসপি।
Published : 02 Apr 2024, 05:21 PM
বান্দরবানের আলীকদম উপজেলায় পাচারকালে সংকটাপন্ন এশিয়ান কালো ভালুকের দুটি শাবকসহ একজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে; যাকে পাচারকারী বলছে পুলিশ।
মঙ্গলবার বেলা ১১টায় নিজ কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানান জেলা পুলিশ সুপার (এসপি) সৈকত শাহীন জানান।
গ্রেপ্তার মো. আলাউদ্দিন (২৪) আলীকদম ইউনিয়ন পরিষদের ৩ নম্বর ওয়ার্ডের উত্তর পালং পাড়ার বাসিন্দা।
সংবাদ সম্মেলনে পুলিশ সুপার সৈকত বলেন, গোপন খবর পেয়ে উপজেলার শিবাতলী পাড়া এলাকার আলীকদম-চকরিয়া সড়ক এলাকায় অভিযান পরিচালনা করে পুলিশ। এ সময় আলাউদ্দিনের মোটরসাইকেল আটকানো হয়।
“তল্লাশি চালিয়ে তার মোটরসাইকেলে বস্তা বন্দি অবস্থায় অচেতন দুইটি ভালুকের বাচ্চা উদ্ধার করা হয়।”
এসপি বলেন, বন্যপ্রাণী পাচারের দায়ে আলাউদ্দিনকে গ্রেপ্তার করা হয়। উদ্ধার করা ভালুক শাবক দুটি কক্সবাজারের চকরিয়ার ডুলাহাজারা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব সাফারি পার্কে উন্মুক্ত করার বিষয়ে বন বিভাগের সঙ্গে আলোচনা চলছে।
এ বিষয়ে লামা বিভাগীয় বন কর্মকর্তা আরিফুল হক বেলাল বলেন, “আসামিকে আদালতে পাঠানো হয়েছে। ভালুক শাবক দুটি আদালতের নির্দেশে পুলিশ এবং বন বিভাগের উদ্যোগে অবমুক্ত করা হবে।
“শাবক দুটি মূলত এশিয়ান কালো ভালুক। বৈজ্ঞানিক নাম Ursus thibetanus; তাদের বয়স তিন থেকে পাঁচ মাস। এখন তারা সুস্থ। তাদের বিষয়ে চট্টগ্রামের বন্যপ্রাণী বিভাগকে অবহিত করা হয়েছে।”
আন্তর্জাতিক প্রকৃতি ও প্রাকৃতিক সম্পদ সংরক্ষণ সংঘ বা আইইউসিএনের লাল তালিকায় এশিয়ান কালো ভালুককে রাখা হয়েছে ‘সংকটাপন্ন’ ক্যাটাগরিতে। এর মানে হল, এই প্রাণী প্রজাতি প্রকৃতিতে বিপন্ন হয়ে পড়ার সমূহ সম্ভাবনা রয়েছে।
বন ও পরিবেশ নিয়ে কাজ করা ‘সেইভ দ্য নেচার অব বাংলাদেশ’ এর চেয়ারম্যান মোয়াজ্জেম হোসেন রিয়াদ বলেন, “ভালুক শাবক দুটি দেশীয় কালো প্রজাতির ভালুক। আর যিনি আটক হয়েছেন তিনি আন্তঃদেশীয় বন্যপ্রাণী পাচার চক্রের সদস্য।
“তাদের ১৮ জনের একটা চক্র আছে। তার মধ্যে প্রধান হল মোবারক। তারা পার্বত্য চট্টগ্রামে গহীন অঞ্চল থেকে স্থানীয় পাহাড়িদের ফুসলিয়ে বন্যপ্রাণী সংগ্রহ করে।”
তিনি বলেন, এর আগেও উল্লুক, লজ্জাবতী বানর, ভালুক এবং মায়া হরিণ পাচার করে নিয়ে গেছে তারা। একবার আলীকদম থেকে রাজ ধনেশ পাচার করার সময় ধরা পড়ে পাচারচক্রের ১২ জন সদস্য এখনও জেলে রয়েছে।
মোয়াজ্জেম হোসেন রিয়াদ বলেন, পাহাড়ি বিভিন্ন এলাকা থেকে সংগ্রহ করা বন্যপ্রাণী আলীকদম থেকে কুমিল্লা-ফেনী হয়ে ভারতে চলে যায়।
আবার আলীকদম থেকে কুমিল্লা-সাতক্ষীরা হয়েও পরে ভারত থেকে চীনসহ বিভিন্ন দেশে নিয়ে যাওয়া হয় এ সব বন্যপ্রাণী বলে জানান তিনি।