রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদের বাড়িতে মধ্যাহ্ন ভোজ করবেন ও বিশ্রাম নেবেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
Published : 26 Feb 2023, 09:36 PM
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা মঙ্গলবার কিশোরগঞ্জের হাওর উপজেলা মিঠামইন সফরে আসছেন। তার সফরকে কেন্দ্র করে পুরো হাওর এলাকার মানুষের মাঝেই বিরাজ করছে উচ্ছ্বাস ও উৎসাহ। তার সফরকে সফল করতে জোরেশোরে প্রস্তুতিও চলছে।
মঙ্গলবার দিনব্যাপী সফরের শুরুতে প্রধানমন্ত্রী সকাল ১০টায় আনুষ্ঠানিকভাবে বীর মুক্তিযোদ্ধা মো. আবদুল হামিদ সেনানিবাসের উদ্বোধন করবেন। পরে রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদের বাড়িতে মধ্যাহ্ন ভোজ ও বিশ্রাম নেবেন।
এরপর বিকাল ৩টায় স্থানীয় হেলিপ্যাড মাঠে আওয়ামী লীগ আয়োজিত জনসভায় প্রধানমন্ত্রী বক্তৃতা করবেন বলে জানিয়েছেন কিশোরগঞ্জ-৪ আসনের সংসদ সদস্য রেজওয়ান আহাম্মদ তৌফিক।
এর আগে সবশেষ প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা হাওর উপজেলা মিঠামইন সফর করেছিলেন ১৯৯৮ সালে।
প্রধানমন্ত্রীর এই সফর নিয়ে দলীয় নেতা-কর্মী থেকে সাধারণ মানুষ সবাই তাদের নিজ নিজ অনুভূতির কথা বলতে গিয়ে উল্লেখ করছেন সাম্প্রতিক বছরগুলিতে হাওর এলাকার নজীরবিহীন উন্নয়নের কথা।
সংসদ সদস্য রেজওয়ান আহাম্মদ তৌফিক বলেন, “বর্তমান প্রধানমন্ত্রীর আমলে হাওরের এত ব্যাপক উন্নয়ন হয়েছে তা ভাষায় প্রকাশ করার মত নয়। এক সময় হাওরে মানুষ আসতে চাইত না, আর এখন দেখতে আসে। প্রধানমন্ত্রীর অবদানের কারণেই এই উন্নয়ন হয়েছে।”
প্রধানমন্ত্রীর আগমনে অত্যন্ত খুশী হবার কথা জানিয়ে মিঠামইনের বাসিন্দা সংবাদকর্মী রাকিবুল হাসান রোকেল বলেন, “এই অল ওয়েদার সড়ক ছাড়া আগে এই এলাকার লোকজনের শুকনো মৌসুমে পায়ে হাঁটার কোনো উপায় ছিল না।
“এখন অল ওয়েদার সড়কসহ অনেক সাবমার্জিবল (ডুবো) সড়ক নির্মিত হওয়ায় মানুষ অনায়াসে যাতায়াত করতে পারছে। সন্তানসম্ভবা ও গুরুতর অসুস্থ রোগীদের এখন আর পথে মরতে হয় না। কৃষকরা ফসলের দ্রুত বাজারজাত করতে পারছেন এবং ন্যায্য মূল্য পাচ্ছেন।”
অষ্টগ্রামের ব্যবসায়ী মহসীন মীর বলেন, “আগে অষ্টগ্রাম থেকে মিঠামইন আসতে তিন ঘণ্টা লেগে যেত, কিন্তু এখন আমরা মাত্র বিশ মিনিটে আসতে পারি।”
একইভাবে উপজেলার ঢাকি গ্রামের গৃহবধূ হেনা বেগম বলেন, “আগে যেখানে নৌকা দিয়ে মিঠামইন আসতে এক/দেড় ঘণ্টা লেগে যেতে, সেখানে এখন দশ/পনেরো মিনিটেই আসা যায়। এজন্য আমরা হাওরবাসী প্রধানমন্ত্রীকে ধন্যবাদ জানাই।”
হাওর এলাকার আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মী ও জনপ্রতিনিধিরা মনে করেন, একসময় তারা ছিলেন যোগাযোগ, চিকিৎসা ও শিক্ষা বঞ্চিতসহ সর্বক্ষেত্রেই পিছিয়ে থাকা এক জনপদের বাসিন্দা।
তবে টানা তিন মেয়াদে থাকা বর্তমান সরকারের আমলে অলওয়েদার সড়ক ও সাব মার্জিবল (ডুবো) সড়ক নির্মাণ, স্কুল-কলেজ সরকারিকরণ, বিদ্যুৎ ব্যবস্থার সম্প্রসারণসহ বিভিন্ন অবকাঠামো নির্মাণের ফলে যোগাযোগ, শিক্ষা, স্বাস্থ্য ও ব্যবসা-বাণিজ্যসহ জীবনযাত্রার প্রতিটি ক্ষেত্রে স্বাচ্ছন্দ ও গতি এসেছে। অনেক বেড়েছে শিক্ষার হার, ফসলের উৎপাদন।
মিঠামইন উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক সমীর কুমার বৈষ্ণব বলেন, “প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে একসময়ের পশ্চাৎপদ হাওরে ব্যাপক উন্নয়নের কারণে খেটে-খাওয়া মানুষের জীবন-মান পরিবর্তন হয়েছে। এজন্য মানুষ প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার প্রতি কৃতজ্ঞ।”
মিঠামইন সদর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান অ্যাডভোকেট শরীফ কামাল বলেন, “ব্যাপক উন্নয়নের কারণে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার আগমনের সংবাদে অত্র এলাকার মানুষ অত্যন্ত খুশী ও আনন্দিত। এ কারণে জনসভায় ব্যাপক গণ-জোয়ার হবে।”
উপজেলা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক আহসান উল্লাহ বলেন, “এক সময় ‘শুনায় পাও, বর্ষায় নাও’ ছাড়া আমাদের উপায় ছিল না। প্রধানমন্ত্রীর নেতৃত্বে উন্নয়নের কারণেই যোগাযোগ সহজসাধ্য হয়েছে।
“এক সময় হাওর এলাকায় অনেক কৃষিজমি পতিত থাকত। যোগাযোগ ব্যবস্থার উন্নয়নের কারণে ফসলের আবাদ ও ফলন বেড়েছে, সেইসঙ্গে মানুষের কর্মসংস্থানও বেড়েছে।”