“কমিটিকে তিন কার্যদিবসের মধ্যে তদন্ত প্রতিবেদন জমা দিতে বলা হয়েছে।”
Published : 11 Jun 2023, 09:59 PM
সিলেট এমএজি ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নির্মাণাধীন ১৫তলা বিশিষ্ট ক্যানসার ভবনের নির্মাণ শ্রমিককে চুরির অপবাদ দিয়ে পিটিয়ে হত্যার ঘটনায় তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে।
শনিবার তিন সদস্যের এ কমিটি গঠন করা হয় বলে রোববার জানিয়েছেন হাসপাতালটির উপ-পরিচালক সৌমিত্র চক্রবর্তী।
তিনি বলেন, “যে ঘটনাটি ঘটেছে সেটি হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের কোনো বিষয় নয়। তবে হাসপাতালের সীমানার ভেতরে হওয়ায় সিলেট গণপূর্ত বিভাগের সঙ্গে কথা বলে তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। কমিটিকে তিন কার্যদিবসের মধ্যে তদন্ত প্রতিবেদন জমা দিতে বলা হয়েছে।”
তদন্ত কমিটির সদস্যরা হলেন- সিলেট গণপূর্ত বিভাগের উপ-বিভাগীয় প্রকৌশলী খালেদ সাইফুল্লাহ, এমএজি ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের সহকারী পরিচালক (প্রশাসন) ডা. আবুল কালাম আজাদ ও হাসপাতালের ওয়ার্ড মাস্টার রওশন হাবিব।
মামলার তদন্ত কর্মকর্তা ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল পুলিশ বক্সের ইনচার্জ এসআই জুয়েল আহমদ চৌধুরী জানান, শুক্রবার রাতে নিহত নয়নের বাবা আবদুল জলিল বাদী হয়ে কোতোয়ালী থানায় হত্যা মামলা করেন। সেখানে পাঁচজনের নাম উল্লেখ এবং অজ্ঞাত আরও তিন-চারজনকে আসামি করা হয়েছে। আটক পাঁচজনকে ওই মামলায় গ্রেপ্তার দেখানো হয়েছে।
গ্রেপ্তার পাঁচজন হলেন- কুড়িগ্রামের কচাকাঁটার নারায়ণপুর গ্রামের আমিনুল ইসলাম, আয়নাল, সাবান আলী, দিনাজপুরের বিরল উপজেলার তেঘরা গ্রামের রুবেল মিয়া ও বগুড়া শিবগঞ্জের আবদুর রাজ্জাক।
নিহত নয়নের বাড়ি সিলেটের বিশ্বনাথ উপজেলায়।
নির্মাণাধীন ভবনের একাধিক শ্রমিক জানান, শুক্রবার সকাল সাড়ে ৬টার দিকে নির্মাণশ্রমিক নয়ন ও আইয়ুব আলীকে ১ লাখ ৩৭ হাজার টাকা ও চারটি মোবাইল চুরির অভিযোগে একটি কক্ষে ডেকে নিয়ে যাওয়া হয়। এরপর তাদের হাত-পা বেঁধে লাঠি ও রড দিয়ে পেটানো হয়। চিৎকার করে পানি খেতে চাইলেও তাদের পানি দেওয়া হয়নি। প্রায় দুই ঘণ্টা চলে এই নির্যাতন। একপর্যায়ে গুরুতর আহত অবস্থায় নয়নকে ফেলে রেখে নির্যাতনকারীরা চলে যান। পরে অন্য শ্রমিকরা উদ্ধার করে হাসপাতালে নিয়ে গেলে চিকিৎসক নয়নকে মৃত ঘোষণা করেন।
এ ঘটনায় গুরুতর আহত আইয়ুব আলীকে ওসমানী হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
এর আগে গত ১৯ মার্চ নির্মাণাধীন এই ভবনের তৃতীয় তলা থেকে পড়ে জুরান মিয়া নামে এক শ্রমিক মারা যান। গত ৩ জুন ওই ভবনের নির্মাণ কাজ চলার সময় উপর থেকে লোহার পাইপ পড়ে মারা যান দেলোয়ার হোসেন নামের এক সেনাসদস্য। অভিযোগ আছে, কোনো ধরনের নিরাপত্তা ব্যবস্থা ছাড়াই ওই ভবনের নির্মাণ কাজ চলছে।
নগরীর বন্দরবাজার এলাকায় নগর ভবনের পাশে সিটি সুপার মার্কেটে নির্মাণ কাজের দায়িত্বে রয়েছে একই ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান জামাল অ্যান্ড কোং।
সেনা সদস্য নিহতের ঘটনায় দায়ের করা মামলায় আসামির তালিকায় রয়েছে জামাল অ্যান্ড কোং-এর স্বত্বাধিকারী মো. জামাল উদ্দিন।
আরো পড়ুন: