লালমাই পাহাড়ের পাদদেশে ভাঙল গবেষকদের মিলনমেলা

কুমিল্লার সিসিএন বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় ব্যবসা, উদ্ভাবন ও সামাজিক বিজ্ঞান বিষয়ের ওপর এই সম্মেলনের আয়োজন করে।

কুমিল্লা প্রতিনিধিবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 4 Dec 2022, 07:11 PM
Updated : 4 Dec 2022, 07:11 PM

কুমিল্লায় লালমাই পাহাড়ের পাদদেশে উৎসবমুখর পরিবেশে শেষ হয়েছে দেশ-বিদেশের গবেষকদের অংশগ্রহণে দুই দিনব্যপী আন্তর্জাতিক সম্মেলন। 

ব্যবসা, উদ্ভাবন এবং সামাজিক বিজ্ঞান বিষয়ের ওপর এই সম্মেলনের আয়োজন করে কুমিল্লার কোটবাড়িতে অবস্থিত সিসিএন বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়। 

রোববার বিশ্ববিদ্যালয়টির পাহাড় ঘেরা নিজস্ব ক্যাম্পাসে ওই সম্মেলন শেষ হয়।   

শনিবার বাংলাদেশসহ বিশ্বের আটটি দেশের গবেষকদের নিয়ে শুরু হওয়া এই আন্তর্জাতিক সম্মেলনের মূল প্রতিপাদ্য ছিল ‘বিশ্বব্যাপী করোনা মহামারী পরবর্তী সময়ে ঘুরে দাঁড়ানোর কৌশল নির্ধারণ’। 

দুদিনের এই সম্মেলনে দেশ-বিদেশের ৫৮ জন গবেষক নিজ নিজ প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন। 

আয়োজকরা জানান, কুমিল্লা অঞ্চলে কোনো বিশ্ববিদ্যালয়ের উদ্যোগে এই ধরনের আন্তর্জাতিক সম্মেলনের আয়োজন করা হয়েছে প্রথমবারের মতো। 

এতে বাংলাদেশ, ভারত, মালয়েশিয়া, ওমান, জাম্বিয়া, রুয়ান্ডা ও ইসওয়াতিনিসহ বিশ্বের আটটি দেশের গবেষকরা অংশ নিয়েছেন। 

রোববার সম্মেলনের সমাপনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন বাংলাদেশ অ্যাক্রেডিটেশন কাউন্সিলের চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. মেসবাহউদ্দিন আহমেদ। 

দুই দিনব্যাপী এই সম্মেলনে সশরীরে ও ভার্চুয়াল প্ল্যাটফর্মে নয়টি টেকনিক্যাল সেশন পরিচালিত হয়েছে। 

এর মধ্যে শনিবার সাতটি ও রোববার দুটি টেকনিক্যাল সেশনে মোট ৫৮ জন গবেষক তাদের প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন। 

দেশ-বিদেশের ২০ জন শিক্ষাবিদ ও গবেষক সেশন চেয়ার, কো-চেয়ার ও কি-নোট স্পিকার হিসেবে উপস্থিত ছিলেন। 

সম্মেলনে গবেষকদের মধ্যে সেরা প্রবন্ধ উপস্থাপনের জন্য তিনজনকে সম্মাননা জানানো হয়। 

এর মধ্যে ব্যবসায় সম্মাননা পেয়েছেন কুমিল্লায় হিসাব বিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক ড. বিশ্বজিৎ চন্দ্র দেব, উদ্ভাবন ও প্রযুক্তিতে চুয়েটের সিভিল ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের প্রভাষক প্রিয়া চৌধুরী এবং সামাজিক বিজ্ঞানে মালয়েশিয়ার গবেষক ড. আসিফ মাহবুব করিম। 

সম্মেলনের প্রধান পৃষ্ঠপোষক এবং সিসিএন বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রতিষ্ঠাতা ও চেয়ারম্যান মো. তারিকুল ইসলাম চৌধুরী বলেন, “দুই দিনব্যাপী এই সম্মেলনটি ছিল আমাদের দ্বিতীয় আয়োজন। করোনা পরিস্থিতির কারণে প্রথম কনফারেন্সটি করেছিলাম ভার্চুয়ালি। এবার ভার্চুয়াল ও সরাসরি উপস্থিতি- দুইভাবেই উৎসবমুখর পরিবেশে অনুষ্ঠিত হয়েছে।” 

সম্মেলনের আয়োজন প্রসঙ্গে তিনি বলেন, “মাননীয় প্রধানমন্ত্রী প্রায়ই বলেন, আমাদের রাষ্ট্রের বিভিন্ন সেক্টরে গবেষণা কার্যক্রম চালিয়ে যেতে হবে। গবেষণা কার্যক্রম ছাড়া মূলত রাষ্ট্রীয় উন্নয়ন সম্ভব নয়। কুমিল্লা অঞ্চলে বার্ড গবেষণার কাজ চালিয়ে আসছে দীর্ঘদিন ধরে। আমরাও সে ধারায় গবেষণাকে গুরুত্ব দিচ্ছি। ভবিষ্যতেও আমরা এমন আয়োজন আরো করতে চাই।” 

অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি ছিলেন মালয়েশিয়ার বাইনারি ইউনিভার্সিটি অব ম্যানেজমেন্ট অ্যান্ড এন্ট্রিপ্রিনিউরশিপের গ্র্যাজুয়েট স্কুলের ডিন অধ্যাপক ড. আসিফ মাহবুব করিম, সিসিএন বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্য একুশে পদক প্রাপ্ত ভাষা গবেষক অধ্যাপক ড. মাহবুবুল হক, কুমিল্লা শিক্ষাবোর্ডের চেয়ারম্যান অধ্যাপক মো. জামাল নাছের, অস্ট্রেলিয়ান একাডেমি ফর বিজনেস লিডারশিপের ভাইস প্রেসিডেন্ট ড. শফিকুর রহমান। 

সিসিএন বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য (রুটিন দায়িত্ব) ও সম্মেলনের প্রধান উপদেষ্টা ড. আলী হোসেন চৌধুরী অনুষ্ঠানের সভাপতিত্ব করেন। 

অনুষ্ঠানে অন্যদের মধ্যে কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের বিজ্ঞান অনুষদের ডিন অধ্যাপক ড. খলিফা মো. হেলাল, ব্যবসায় শিক্ষা অনুষদের ডিন অধ্যাপক ড. মো. আমজাদ হোসেন সরকার, ইংরেজি বিভাগের ডিন অধ্যাপক ড. এম এম শরিফুল করীম, হিসাববিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক ড. বিশ্বজিৎ চন্দ্র দেব ও গণিত বিভাগের অধ্যাপক ড. আনোয়ার হোসেন। 

এ ছাড়া ছিলেন কুমিল্লা ভিক্টোরিয়া সরকারি কলেজের অধ্যক্ষ অধ্যাপক ড. আবু জাফর খান, কুমিল্লা সরকারি কলেজের অধ্যক্ষ মো. বাহাদুর হোসেন, কুমিল্লা সরকারি মহিলা কলেজের অধ্যক্ষ হাসনাত আনোয়ার উদ্দিন ও কুমিল্লা সরকারি সিটি কলেজের অধ্যক্ষ ফরিদ উদ্দিন আহম্মেদ। 

আরও উপস্থিত ছিলেন সুশাসনের জন্য নাগরিক (সুজন) কুমিল্লার সভাপতি শাহ মোহাম্মদ আলমগীর খান, সনাক কুমিল্লার সাবেক সভাপতি বদরুল হুদা জেনু, কুমিল্লার সাবেক পিপি গোলাম ফারুক, বাংলাদেশ পল্লী উন্নয়ন একাডেমির (বার্ড) পরিচালক রঞ্জন কুমার গুহ।