চিম্বুক পাহাড়ে পানির কষ্ট

মধ্যরাত থেকে পালা করে ভোর পর্যন্ত দুর্গম পথ ডিঙিয়ে পানি আনতে হচ্ছে ম্রো পাড়াবাসীকে।

উসিথোয়াই মারমাবান্দরবান প্রতিনিধিবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 21 March 2023, 07:28 PM
Updated : 21 March 2023, 07:28 PM

সমুদ্রপৃষ্ঠ থেকে প্রায় দুই হাজার ফুট উপরে বান্দরবানের চিম্বুক পাহাড়ে এমনিতেই শুষ্ক মৌসুমে পানির সংকট থাকে; কিন্তু মার্চ-মে এই তিন মাস যেন পানির জন্য ‘নীরব হাহাকার’ তৈরি হয় ম্রো জনগোষ্ঠী অধ্যুষিত প্রায় ১০০ পাড়ায়।

এই সময়ে নারীরা মধ্যরাত থেকে পালা করে ভোর পর্যন্ত দুর্গম পাহাড়ি পথ অতিক্রম করে কোনোমতে পরিবারের খাবারের পানি সংগ্রহ করে আনেন। ঝিরি ও ছড়ায় পাথরের ফাঁকে অল্প অল্প করে পানি আসে।

পানির উৎস হাতেগোনা থাকায় পাড়ার অনেক মানুষ একসঙ্গে পানি আনতে পারেন না। এভাবে চললে একসময় বাস্তুচ্যুত হওয়ার আশঙ্কা করেছেন পাড়াবাসী।

বন ও প্রকৃতি বিশেষজ্ঞরা বলছেন, জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে পাহাড়েও বৃষ্টির পরিমাণ প্রায় অর্ধেক হয়ে গেছে। অবাধে ধ্বংস করা হচ্ছে বন। এসব কারণে পাহাড়ের পানির প্রাকৃতিক জলাধার ও উৎসমুখ দিনে দিনে বন্ধ হয়ে যাচ্ছে। যার প্রভাব পড়ছে পাহাড়ি নৃ-গোষ্ঠীর জনস্বাস্থ্যের উপর।

বান্দরবান শহর থেকে রুমা-থানচি সড়কের পাশে চিম্বুক পাহাড়ের ম্রোলং পাড়া থেকে জীবননগর পাহাড় এলাকা পর্যন্ত প্রায় ১০০ ম্রো পাড়া রয়েছে। এসব পাড়ায় ১২ থেকে ১৩ হাজার মানুষের বসবাস। বেশিরভাগ পাড়ার অবস্থান পাহাড়ে চূঁড়ায়। কিছু পাড়া রয়েছে পাহাড়ের পাদদেশে।

বান্দরবান মৃত্তিকা সম্পদ কেন্দ্রের প্রধান বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা মাহবুবুল ইসলাম বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “পাহাড়ে পানির প্রধান উৎস বৃষ্টি। পাহাড়ে একসময় প্রচুর বৃষ্টিপাত হত। বছরে ২৫০০ মিলিমিটার থেকে ৩০০০ মিলিমিটার পর্যন্ত বৃষ্টি হত। সে জায়গায় গত বর্ষা মৌসুমে মাত্র ১৫০০ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছে। ঝিরি-ঝর্ণায় আগে যে পরিমাণ পানি থাকার কথা এখন সে পরিমাণে থাকে না।“

মধ্যরাত থেকে ‘পানিযুদ্ধ’

সম্প্রতি চিম্বুক পাহাড়ে ম্রোলং পাড়ায় গিয়ে দেখা যায়, পাড়ার ২৭টি পরিবারের জন্য পার্বত্য চট্টগ্রাম উন্নয়ন বোর্ডের করে দেওয়া একটা জিএফএস বা গ্র্যাভিটি ফ্লো সিস্টেম (পাহাড়ি ঝর্ণা ও ছড়ায় বাঁধ দেওয়ার পর পাইপের মাধ্যমে নিয়ে আসা হয়। পরে ট্যাংকে জমিয়ে পরিশোধন করে পানি সরবরাহ করার পদ্ধতি) রয়েছে। সেখানে ট্যাপ দিয়ে খুব অল্প করে পানি পড়ছে। কয়েক ঘণ্টা অপেক্ষার পরও এক কলসি পানি ভরবে না।

জিএফএস ট্যাংকের পাশে কয়েকটি খালি বোতল নিয়ে পানি ভরার চেষ্টা করছিলেন চামলে ম্রো।

পানি সংকটের কথা জিজ্ঞাসা করতেই তিনি বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, যে ছড়ার মুখ থেকে বাঁধ দিয়ে পাইপের মাধ্যমে পানি নিয়ে আসা হয়েছে সে পানির উৎস শুকিয়ে গেছে। খুব অল্প করে পানি আসে। কেউ কেউ বাধ্য হয়ে খুব অল্প হলেও খাওয়ার জন্য বোতলে ভরে নিতে আসে।

পাড়া থেকে দূরে দুইদিকে দুইটা ঝিরি আছে। শুষ্ক মৌসুমে এই ঝিরি দুটিই ২৭টি পরিবারের একমাত্র পানি সংগ্রহের উৎস। তবে দুই ঝিরির অবস্থাও করুণ। নামমাত্র পানি পাওয়া যায়।

চামলে ম্রো বলেন, একপাশের ঝিরি পাড়া থেকে ২০ মিনিটের হাঁটার দূরত্ব। পানি নিয়ে ফিরে আসতে সময় লাগে ৩০ মিনিট। কারণ আসার সময় পাহাড় বেয়ে উঠতে হয়। অন্যদিকে আরেকটি ঝিরিতে পানি পাওয়া গেলেও আসা-যাওয়া করতে এক-দেড় থেকে ঘণ্টা সময় চলে যায়।

“পাড়ার নারীরা প্রতিদিন রাত ১২টার পর থেকে পানি সংগ্রহ শুরু করেন। একবারে তিন-চারজন করে পানি আনতে যায়। তারা ফিরে আসার পর আরও তিন-চারজন যায়। এভাবে ভোর ৬টা পর্যন্ত পালাক্রমে পানি সংগ্রহ করি আমরা।”

চামলে ম্রোর ভাষায়, “একসঙ্গে গেলে পানি পাওয়া যায় না। একজন এক-দুই মগ পানি নেওয়ার পর মাঝখানে ঘণ্টাখানেক পানি জমার সুযোগ দিতে হয়। এ পানি দিয়ে নাহলে আশপাশের ভেজা মাটিতে কাঁকড়া গর্ত করে থাকে। কখনও কখনও কাঁকড়া গর্ত পর্যন্ত খুঁড়ে পানি নিয়ে আসতে হয়।”

পাড়া থেকে ২০ মিনিট হাঁটার দূরে ঝিরিতে যাওয়ার পথে দেখা যায়, মাথায় থুরুংয়ে (ঝুড়ি) করে পানিভর্তি বোতল নিয়ে খাড়া পাহাড়ে উঠে ঘরে ফিরছিলেন তিন ম্রো নারী। তখন ঘড়ির কাঁটায় সকাল ১০টা ৩০ মিনিট।

তারা বলেন, একসঙ্গে পাঁচ-ছয়জন গেলে দুই-তিন ঘণ্টা অপেক্ষা করতে হয়। এ কারণে পর্যায়ক্রমে দুই-তিনজন করে পানি আনতে যায়। সকালে অন্য কাউকে পানি নেওয়ার সুযোগ দিয়ে ঘরে অন্যান্য কাজ সেরে একটু দেরি করে পানি সংগ্রহ করতে যান তারা।

ঝিরিটি একটু স্যাঁতস্যাঁতে ও ভেজা। পাথরের মাঝখান দিয়ে খুব অল্প করে পানি বের হয়। পানি জমতে একটু সময় লাগে। সেখান থেকে প্রথমে মগে পানি তোলা হয়, তারপর ছেঁকে কলসিতে সংগ্রহ করা হয়। পরপর দুই মগ পানি নেওয়ার পর অনেকক্ষণ অপেক্ষা করতে হয়। এক লিটার, দুই লিটারের বোতলে ঝিরির পানি ভরে থুরুংয়ে (ঝুড়ি) করে উঁচু-নিচু পাহাড় বেয়ে ঘরে ফেরেন নারীরা।

এই ঝিরিতে পানি সংগ্রহ করতে আসা রুমপাও ম্রো বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “এখানে এসে দিনে দুই-তিনবার পানি সংগ্রহ করতে হয়। এই পানি মূলত রান্না ও খাবারের জন্য ব্যবহার করা হয়। পানি এখন যেটুকু পাওয়া যাচ্ছে একমাস পর আরও কম পাওয়া যাবে। তখন কষ্ট আরও বাড়বে। আরও দূরে গিয়ে পানি আনতে হবে।”

এরই মধ্যে ঝিরির নিচে ছোট একটা গর্তের পানি নিয়ে হাত-মুখ পরিষ্কার করছিলেন রাংকইসা ম্রো নামে এক বাগানি।

তিনি বলেন, “আমাদের গোসল বলতে এটটুকুই। কোনো রকমে হাতমুখ ধুইয়ে থাকা। তবে কাপড় ধোয়ার জন্য আরেকটু দূরে যেতে হবে। ওই ঝিরিতে কিছু পানি রয়েছে। সেখানে একটু গোলস ও কাপড় ধোয়ার মত পানি আছে। কিন্তু দিন যত যাচ্ছে সেখানেও পানি কমছে। খুব কষ্ট করে আরও দুই মাস এভাবে থাকতে হবে।”

চিম্বুকে ১১ মাইল এলাকায় পাহাড় থেকে এক কিলোমিটার নিচে রয়েছে ক্রামাদি পাড়া। ৪৪টি ম্রো পরিবার বসবাস করছে এই পাড়ায়। ম্রোদের নিজস্ব ক্রামা ধর্মের প্রতিষ্ঠাতা ও ম্রো বর্ণমালার উদ্ভাবক মেনলে ম্রোর জন্ম এই পাড়ায়। সেখানে রয়েছে ম্রো ভাষা কমিটির কার্যালয়ও।

প্রতিবছর ডিসেম্বরে ক্রামা ধর্মের বার্ষিক সম্মেলন হয়ে থাকে এই ক্রামাদি পাড়াতেই। ঐতিহ্যে ভরা পাড়াটিও মারাত্মক পানি সংকটে ভুগছে বলে জানালেন উন্নয়নকর্মী ও পাড়ার বাসিন্দা পাকো ম্রো।

পাড়ায় পানি সংকটের কথা তুলে ধরে পাকো ম্রো বলেন, এ পাড়াতেও রাত ১২টার পর থেকে পানি সংগ্রহের কাজ শুরু হয়। মূলত রাত ১২টা, রাত ২টা ও ভোর ৬টায় পালাক্রমে পানি সংগ্রহ করা হয়। একটি ঝিরিতে পাথরের ফাঁকে অল্প করে পানি বের হয়। জমা হওয়ার সময় দিতে হয়। চাপ যাতে না পড়ে এ কারণে নারীরা নিজেরাই রাত ১২টা থেকে পালাক্রমে পানি সংগ্রহ করার পদ্ধতি বেছে নিয়েছেন।

“পাড়া থেকে ৩০ মিনিট হাঁটার দূরত্বে আরেকটি ঝিরি রয়েছে। সেখানে কিছুটা পানি আছে। তবে পানি নিয়ে চরম খাড়া পাহাড় বেয়ে উঠতে হয়। বেশি পরিমাণ পানি নিয়ে আসার সুযোগ নেই। গরমের তীব্রতা যত বাড়বে পানির পরিমাণ কমে যাচ্ছে।

তিনি আরও বলেন, “অনেক নারী-পুরুষ জুমক্ষেতে যাওয়ার সময় কাপড়গুলো থুরুংয়ে (ঝুড়ি) ভরে নিয়ে যায়। আসার সময় সেখানে গোসল করে আসে। কাপড়গুলোও ধুইয়ে আসে। এ ছাড়া আর কোনো উপায় নেই।”

“এক হাজার লিটার পানি ৮০০ টাকা”

চিম্বুক পাহাড়ের বাইট্যা পাড়ার বাসিন্দা, ম্রো ভাষার লেখক ও গবেষক ইয়াঙান ম্রো বলেন, ১০০টির মধ্যে দু-একটি ছাড়া সবগুলো পাড়াই পানির সংকটে ভোগছে। ওয়াইজংশন এলাকায় একটি পাহাড়ি ছড়ায় কিছুটা পানি রয়েছে। সেখান থেকে কয়েকজন যুবক পানি সংগ্রহ করে বিক্রি করছে।

“গত বছর ৬০০ টাকায় এক হাজার লিটার পানি পাওয়া যেত। এ বছর থেকে এক হাজার লিটার ৮০০ টাকা হয়ে গেছে। চিম্বুক পাহাড়ে লোকজনদের পানি কিনে খেতে হবে এটা কেউ কোনোদিন কল্পনাও করেনি।”

রোববার চিম্বুক পাহাড়ে পানি সংকট নিয়ে আলোচনা সভার আয়োজন করেছিল কয়েকটি পাড়াবাসী। বিভিন্ন পাড়ার প্রতিনিধিরা সেখানে পানি সংকটের কথা তুলে ধরেন।

রামরি পাড়ার কারবারী (পাড়াপ্রধান) চিংতুই ম্রো বলেন, তার পাড়ায় একটি ছাত্রাবাস আছে। শিক্ষার্থীদের পাহাড়ের নিচে একটা ছড়ায় গিয়ে কাদা-ময়লা পানিতে গোসল করে আসতে হয়। অথচ ওই ছড়ায় গত বছরও পানি ছিল। এখন দিন দিন কমে যাচ্ছে।

“বিভিন্ন বেসরকারি সংগঠন পানি সংরক্ষণের জন্য একসময় পাড়ায়-পাড়ায় যে ট্যাংকগুলো দিয়েছিল, সেগুলো এখন খালি পড়ে রয়েছে। দিন দিন জনসংখ্যা বাড়ার পাশাপাশি বাগান-বাগিচা করার সংখ্যাও বাড়ছে।

সংকট সমাধানে ঝিরির আশপাশে বাঁশঝাড় ও গাছ লাগানো দরকার। ঝিরি-ঝর্ণা ও ছড়া থেকে গাছ, বাঁশ কাটা নিষিদ্ধ করার জন্য পাড়ায় পাড়ায় কমিটি করা দরকার আছে বলে জানান চিংতুই ম্রো।

বসন্তপাড়ার বাসন্দিা তয়ো ম্রো বলেন, চিম্বুক পাহাড়ে রাত ১২টা থেকে পানি সংগ্রহের জন্য প্রতিযোগিতা হবে এটা কেউ কল্পনাও করতে পারেনি।

তার মতে, ঝিরির আধ কিলোমিটারের মধ্যে গাছ ও বাঁশঝাড় রাখতে হবে। অনেকেই না বুঝে পানির উৎসের ধারে বাগান করা শুরু করেছে। ছড়া ও ঝিরির আধ কিলোমিটারের মধ্যে বাগান করা যাবে না- এমন নিয়ম করতে হবে।

সভায় বেসরকারি সংস্থা ‘হিউম্যানিটারিয়ান ফাউন্ডেশন’- এর নির্বাহী পরিচালক মংমংসিং মারমাও ছিলেন।

তিনি বলেন, চিম্বুকে লংবাইটং পাহাড়ে কয়েকটি বড় গাছ রয়েছে। ওই গাছের কারণে পাড়াবাসী এখনও পানি পাচ্ছে। কোন ঝিরিতে কোন ধরনের বাগান করলে পানির উৎস শুকিয়ে যায় এখন তা ভাবা দরকার। ঝিরির পাশে বাগান থাকলে কীটনাশক স্প্রে করা হয়। এগুলো ঝিরিতে গিয়ে পড়ে। কীটনাশকের কারণে শামুক, চিংড়ি ও কাঁকড়া পর্যন্ত মারা যায়। অনেক সময় এগুলোর কারণে পানির উৎস মারা যাচ্ছে। আয়ের জন্য যেমন ফলদ বাগান করতে হবে তেমনি পানির উৎসও টিকিয়ে রাখতে হবে।

“পানি থাকলে তবে তো দূষিত-বিশুদ্ধের আলাপ”

চিম্বুক পাহাড়ের বিশুদ্ধ পানি না পেয়ে অনেকেই দূষিত পানি পান করতে বাধ্য হন। এর ফলে ডায়রিয়ায় আক্রান্ত হন। দুর্গম এলাকা থেকে যাতায়াতের সুব্যবস্থা না থাকায় অনেকে চিকিৎসা পর্যন্ত পান না; মৃত্যুর মুখে পড়েন। 

এ ব্যাপারে দৃষ্টি আকর্ষণ করা হলে জেলা সিভিল সার্জন নীহার রঞ্জন নন্দী বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, দূষিত পানি খেয়ে প্রধানত পানিবাহিত রোগ ডায়রিয়া, টাইফয়েড ও কলেরা হতে পারে। বিশুদ্ধ পানি না খেলে পাহাড় অথবা বিল্ডিং ঘরে যেখানেই থাকুক ডায়রিয়া হবেই। গহীন ও দুর্গম এলাকায় যতদিন পর্যন্ত বিশুদ্ধ পানি পাবে না ততদিন পর্যন্ত পানিবাহিত রোগের স্বাস্থ্যগত ঝুঁকি থাকবে।

“ডায়রিয়ার খবর পেলে আমরা সেবা দেব। কিন্তু এমন কিছু দুর্গম এলাকা রয়েছে যেখানে ডায়রিয়ায় আক্রান্ত হয়ে মারা যাওয়ার পরও খবর পাই না। সোমবার নীলগিরি এলাকা পর্যন্ত ৯০টি পাড়ায় বিশুদ্ধকরণ ট্যাবলেট বিতরণ করা হয়েছে।“

সিভিল সার্জন আক্ষেপ করে বলেন, “বিশুদ্ধ পানি খেতেই বলব কীভাবে। এখন চিম্বুক পাহাড়ে পানিও তো নেই। আগে পানি থাকতে হবে, তারপর দূষিত কী বিশুদ্ধ বিষয় আসবে। কোন জায়গায় কী করলে পানি পাওয়া যাবে সেটা ভাবতে হবে। এ নিয়ে ব্যাপক আকারে কাজ না করলে সমস্যা দূর হবে না।”

বান্দরবান মৃত্তিকা সম্পদ কেন্দ্রের প্রধান বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা মাহবুবুল ইসলাম বলেন, “মাটি অনবরত আলগা হয়ে ধুয়ে ঝিরি-ঝর্ণায় গিয়ে পড়ছে, ভরাট হচ্ছে। ফলে ঝিরি-ঝর্ণার গভীরতা হ্রাস পাচ্ছে। যে বন থাকলে স্বাভাবিকভাবে পানি থাকার কথা সে বনও তো কমে যাচ্ছে এখন।

পাহাড়কে বেশি নাড়াচাড়া না করে, চাষাবাদ পদ্ধতি আধুনিকায়ন করে, ঝিরি-ঝর্নাতে প্রাকৃতিক পাথর উত্তোলন না করে, গাছ লাগিয়ে বনায়ন বৃদ্ধির ওপর গুরুত্ব দেওয়া হলে পানির উৎস ফিরবে বলে জানান এই বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা।

পানি সংকটের বিষয়ে জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তরে সহকারী প্রকৌশলী খোরশেদ আলম প্রধান বলেন, পাহাড়ি এলাকার মাটি পাথুরে। গভীর নলকূপ ও রিংওয়েল বসানো যায় না। যেসব জায়গায় পানির উৎস রয়েছে সেখানে বরাদ্দ সাপেক্ষে জিএফএসের মাধ্যমে পানি দেওয়া হচ্ছে। এরপর আরও পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে কোথায় কোন প্রযুক্তি দিয়ে পানির সমস্যা দূর করা যায় সে ব্যাপারে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।