লিখিত বক্তব্যে তিনি দাবি করেন, ষড়যন্ত্র করে পরিকল্পিতভাবে তাকে ফাঁসানো হয়েছে।
Published : 20 Apr 2024, 10:22 PM
নিজেকে নির্দোষ দাবি করে নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জ উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান পদে লড়ার ঘোষণা দিয়েছেন ক্যাসিনোকাণ্ডে আলোচিত সেলিম প্রধান।
শনিবার নারায়ণগঞ্জ প্রেস ক্লাব ভবনের একটি রেস্তোরাঁয় সংবাদ সম্মেলনে আসেন তিনি।
এতে ক্যাসিনোকাণ্ডে জড়ানো, মামলা ও অবৈধ অর্থ উপার্জন, আসন্ন উপজেলা পরিষদের নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদে প্রার্থী হওয়াসহ বিভিন্ন বিষয়ে লিখিত বক্তব্য তুলে ধরেন তিনি।
নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জ উপজেলার ভুলতা এলাকার বাসিন্দা সেলিম প্রধান।
দেশব্যাপী আলোচিত ক্যাসিনোকাণ্ডে ২০১৯ সালের ৩০ সেপ্টেম্বর ব্যাংককগামী একটি উড়োজাহাজ থেকে গ্রেপ্তার হয়ে চার বছর জেল খাটার পর গেল বছরের ২৩ অক্টোবর জামিনে মুক্তি পান সেলিম।
তার দাবি, আইনের ব্যত্যয় ঘটিয়ে ক্ষমতার অপব্যবহার করে একটি মহল আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে কাজে লাগিয়ে তাকে হয়রানি করেছে।
সংবাদ সম্মেলনে সেলিম প্রধানের পক্ষে লিখিত বক্তব্য পড়েন তার আইনজীবী কামাল হোসেন।
এই সময় সেলিমের স্ত্রী আনা প্রধান ও তিন শিশু সন্তানও ছিল।
লিখিত বক্তব্যে তিনি দাবি করেন, ২০১৯ সালের ৩০ সেপ্টেম্বর ষড়যন্ত্র করে পরিকল্পিতভাবে তাকে ফাঁসানো হয়েছে।
ক্ষমতার অপব্যবহার করে একটি বাহিনীর সদস্যদের দিয়ে উড়োজাহাজ থেকে তাকে নামিয়ে আনা হয় বলেও দাবি তার।
তিনি বলেন, “আমি জেলে থাকাবস্থায় আমার শিশু সন্তানদের নিয়ে আদালতের বারান্দায় বারান্দায় ঘুরেছে আমার স্ত্রী। একজন বাবার কাছ থেকে তার সন্তানদের দূরে রাখার যে কী কষ্ট, তা একমাত্র একজন বাবাই অনুভব করতে পারবে।
“আমি জেল থেকে বেরিয়ে এইসব ষড়যন্ত্রের কথা গণমাধ্যমে বলে বলে এসেছি। আমি ওই ষড়যন্ত্রকারীদের বিচার চাই।”
সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে সেলিম বলেন, “আমাকে এত বার ক্যাসিনো ডন বলা হল কিন্তু আমার বিরুদ্ধে কোনো ক্যাসিনোর মামলা হয় নাই। আর ক্যাসিনোটা কোথায় আছে বলেন তো? আমিও জানতে চাই?”
কোনো ফৌজদারি মামলায় দুই বছরের অধিক সাজাপ্রাপ্ত ব্যক্তির নির্বাচনে প্রার্থী হওয়ার বিষয়ে বিধিনিষেধ রয়েছে; এমন প্রশ্নের জবাবে সেলিমের আইনজীবী বলেন, “দুদক যেমন সাজা বাড়ানোর জন্য আপিল করেছে, তেমনি আমরাও সাজা কমানোর আপিল করেছি। বিষয়টি চলমান রয়েছে। মামলা যতক্ষণ শেষ না হয়, ততক্ষণ কাউকে দোষী আপনি বলতে পারেন না।”
বর্তমানে তার বিরুদ্ধে মাদক, অর্থপাচারসহ চারটি মামলা আছে জানিয়ে সেলিম বলেন, “ওই দিন আমাকে উড়োজাহাজ থেকে নামানোর আগে কোনো মামলা ছিল না। বিমান থেকে নামানোর পরই সব মামলা দেওয়া হয়েছে।”
সেলিমের ভাষ্য, “সিভিল এভিয়েশনের আইন অনুযায়ী, কাউকে বিমান থেকে নামিয়ে আনতে হলে তার বিরুদ্ধে ওয়ারেন্ট থাকতে হয়। ওয়ারেন্ট না থাকলে কাউকে প্লেন থেকে নামিয়ে আনতে পারেন না। আমাকে প্লেন থেকে নামানোর আগে পর্যন্ত ওয়ারেন্ট তো দূরের কথা, কোনো জিডিও ছিল না। এইখানে আইনের ব্যত্যয় ঘটেছে।”
যারা তাকে ‘ফাঁসিয়েছে’ তাদের বিরুদ্ধে আইনি প্রক্রিয়া চালাচ্ছেন বলে জানান তিনি।
নিজের কাছে কোনো ‘অবৈধ অর্থ’ নেই দাবি করে আলোচিত এই ব্যক্তি বলেন, “আমি তো ছোটবেলা থেকেই দেশের বাইরে থেকে আসছি। জাপানে আমি বড় হয়েছি, জাপান থেকে আমেরিকা ও থাইল্যান্ডে থেকেছি। আমার টাকা তো দেশে থাকবে না, এইটাই স্বাভাবিক। আমি যা ইনকাম করেছি, তা সবই বিদেশে। আমার একটি টাকাও অবৈধ না।”