‘নলডাঙ্গার চেয়ারম্যানের’ পিটুনিতে আহত ছাত্রলীগ নেতার মৃত্যু

নিহত জামিউল আলীম জীবন নাটোরের নলডাঙ্গা ডিগ্রি কলেজের ছাত্র ও উপজেলা ছাত্রলীগের সহ-সাধারণ সম্পাদক ছিলেন।

রাজশাহী প্রতিনিধিনাটোর প্রতিনিধিবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 23 Sept 2022, 12:31 PM
Updated : 23 Sept 2022, 12:31 PM

নাটোরের ‘নলডাঙ্গা উপজেলা চেয়ারম্যানের’ পিটুনির চার দিন পর উপজেলা ছাত্রলীগ নেতা জামিউল আলীম জীবন হাসপাতালে মারা গেছেন।

শুক্রবার দুপুরে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে তিনি মারা যান বলে হাসপাতালের পরিচালিক বিগ্রেডিয়ার জেনারেল ডা. শামীম ইয়াজদানি জানান।

জামিউল আলীম জীবন (২২) নলডাঙ্গা ডিগ্রি কলেজের ছাত্র এবং উপজেলা ছাত্রলীগের সহ-সম্পাদক। জামিউলের বাড়ি নলডাঙ্গার রামশাকাজিপুর গ্রামে।

গত সোমবার সন্ধ্যায় নলডাঙ্গার রামশাকাজিপুর আমতলী বাজারে জীবনকে পিটিয়ে আহত করার অভিযোগে উপজেলা চেয়ারম্যান আসাদুজ্জামান আসাদের বিরুদ্ধে নলডাঙ্গা থানায় মামলা করেন তার মা।  

মসজিদের মাইক চুরির সালিশ নিয়ে ফেইসবুক লাইভ করার পর নলডাঙ্গা উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান আসাদুজ্জামান আসাদ ও তার সমর্থকদের পিটুনিতে তিনি গুরুতর আহত হন বলে মামলায় অভিযোগ করা হয়।  

নলডাঙ্গা থানার ওসি শফিকুল ইসলাম জানান, রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের আইসিইউতে লাইফ সাপোর্টে থাকা অবস্থায় দুপুর সোয়া ২টার দিকে তার মৃত্যু হয়। ময়নাতদন্তের জন্য তার মৃতদেহ বেলা সাড়ে ৩টার দিকে মর্গে নেওয়া হয়। ময়নাতদন্ত শেষে স্বজনদের কাছে লাশ হস্তান্তর করা হবে। 

মামলার বরাতে ওসি শফিকুল ইসলাম জানান, রোববার রাতে আমতলি বাজার মসজিদের মাইক চুরি নিয়ে উপজেলা চেয়ারম্যান আসাদুজ্জামান আসাদের নেতৃত্বে সালিশ অনুষ্ঠিত হয়। সালিশে উপজেলা ছাত্রলীগের সাবেক সহ-সাধারণ সম্পাদক জামিউল আলীম ওরফে জীবনকে ওই চুরির ঘটনায় জড়িত করে সন্দেহভাজনদের তালিকা করা হয়। 

“ওই রাতেই জামিউল আলীম ফেইসবুক লাইভে এসে সালিশ ষড়যন্ত্রমূলক ও আক্রোশবশত করা হয়েছে বলে অভিযোগ করেন। তিনি উপজেলা চেয়ারম্যানের সমালোচনাও করেন লাইভে।” 

অভিযোগে বলা হয়, এর জের ধরে সোমবার রাত সাড়ে ৮টার দিকে নলডাঙ্গার আমতলি বাজারে উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান আসাদুজ্জামান আসাদ (৪৫) ও তার সমর্থকরা জামিউলকে এলোপাথাড়ি পেটায়। এ সময় জামিউলের বাবা ফরহাদ হোসেন (৬০) উদ্ধার করতে গেলে তাকেও মারধর করা হয়। 

গুরুতর আহত অবস্থায় তাদের দুজনকে প্রথমে নাটোর সদর হাসপাতালে পরে (সোমবার রাতে) রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। সেখানে জামিউলকে লাইফ সাপোর্টে রাখা হয়। 

জামিউলের চাচা এস এম ফিরোজ দুপুরে বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে জানান, তিনি জামিউলের মৃতদেহ নেওয়ার জন্য মর্গের সামনে অপেক্ষা করছেন। 

ওসি জানান, এ ঘটনায় সোমবার রাতেই ফরহাদ হোসেনের স্ত্রী জাহানারা বেগম বাদী হয়ে নলডাঙ্গা থানায় মামলা করেছেন। মামলায় নলডাঙ্গা উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান আসাদুজ্জামান আসাদ ও তার দুই ভাই ফয়সাল সাহ (৫৩) ও আলিম আল রাজি সাহকে আসামি করা হয়েছে। 

“ঘটনার পর থেকে চেয়ারম্যান আসাদুজ্জামান আসাদ গা ঢাকা দিয়েছেন। পুলিশ আলিম আল রাজিকে গ্রেপ্তার করেছে।”