Published : 27 Oct 2022, 06:47 PM
রংপুরে বিএনপির বিভাগীয় গণসমাবেশের আগে দুই দিনের পরিবহন ধর্মঘট ডেকেছে রংপুর মটর মালিক সমিতি।
শুক্রবার (২৮ অক্টোবর) ভোর থেকে শনিবার সন্ধ্যা পর্যন্ত এই ধর্মঘট চলবে বলে বৃহস্পতিবার সমিতির এক সংবাদ প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়।
তবে এই ধর্মঘটে সমাবেশে কোনো প্রভাব ফেলবে না বলে দলের নেতাদের ভাষ্য। আগামী শনিবার (২৯ অক্টোবর) রংপুর কালেক্টরেট ঈদগাহ মাঠে বিএনপির গণসমাবেশের ঘোষণা রয়েছে।
রংপুর জেলা মটর মালিক সমিতির সভাপতি একেএম মোজাম্মেল হক বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে জানান, মহাসড়কে নিরাপত্তার জন্য পরিবহন মালিকদের দাবির পরিপ্রেক্ষিতে সরকার আইন করেছে। কিন্তু রংপুরের মহাসড়কগুলোতে এখনও নছিমন, করিমন, ভটভটিসহ বিভিন্ন অবৈধ যানবাহন চলাচল করছে। এজন্য প্রায়ই দুর্ঘটনা ঘটছে।
“মহাসড়কে এসব যান চলাচল বন্ধের জন্য কয়েকটি সংগঠন মিলে সভা করে শুক্রবার ভোর থেকে শনিবার সন্ধ্যা পর্যন্ত রংপুরের সকল রুটে পরিবহন ধর্মঘট আহ্বান করা হয়েছে।”
তিনি বলেন, “মহাসড়কে নছিমন, করিমন, ভটভটি বন্ধে আমরা দীর্ঘদিন ধরে দাবি করছি। এ দাবি আদায়ের লক্ষ্যে বুধবার সন্ধ্যায় মটর মালিক সমিতি, ট্রাক মালিক সমিতি, কার-মাইক্রোবাস মালিক সমিতি ও সাধারণ পরিবহন মালিকদের বৈঠকে ধর্মঘটের এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।”
মহামান্য হাইকোর্টের নির্দেশ অমান্য করে মহাসড়কে থ্রি হুইলার, নসিমন, করিমনসহ লাইসেন্সবিহীন ও অন্যান্য অবৈধ যানবাহন চলাচল বন্ধের দাবিতে এবং রংপুর-কুড়িগ্রাম রুটে প্রশাসনিক হয়রানির প্রতিবাদে শুক্র ও শনিবার বাস, মিনিবাস, ট্রাক ও মাইক্রোবাস চলাচল বন্ধ থাকবে।
এদিকে, এমন ধর্মঘটের আশঙ্কা করে আগে থেকেই রংপুর কালেক্টরেট ঈদগাহ মাঠে বিভাগের বিভিন্ন জেলা থেকে বিএনপির নেতাকর্মীরা আগাম আসতে শুরু করেছেন। যেকোনো উপায়ে গণসমাবেশ সফল করতে নেতাকর্মীরা নিজ নিজ উপায়ে মাঠে অবস্থান করছেন।
নির্বাচনকালীন তত্ত্বাবধায়ক সরকার, খালেদা জিয়ার মুক্তিসহ নানা দাবিতে বিএনপি দেশের প্রতিটি বিভাগীয় শহরে গণসমাবেশ করছে। ৮ অক্টোবর চট্টগ্রাম, ১৫ অক্টোবর ময়মনসিংহ ও ২২ অক্টোবর খুলনায় সমাবেশ করেছে দলটি।
এর ধারাবাহিকতায় ২৯ অক্টোবর রংপুর কালেক্টরেট ঈদগাহ মাঠে চতুর্থ গণসমাবেশ করার ঘোষণা দেন তারা।
রংপুর বিভাগীয় সমাবেশের সমন্বয়কারী ও বিএনপির কেন্দ্রীয় ভাইস চেয়ারম্যান এ জেড এম জাহিদ হোসেন বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “বিভাগীয় সমাবেশ নিয়ে আমরা প্রস্তুত। এজন্য গত ৬ অক্টোবর থেকে রংপুর বিভাগের সব জেলা, উপজেলায় আমরা বৈঠক করেছি, সভা করেছি। সরকার ধর্মঘটসহ কোনো বাধা দিয়েও গণসমাবেশে গণজোয়ার ঠেকাতে পারবে না। আমরা সমাবেশ সফল করব, আমাদের নেতাকর্মী সমর্থক সবাই এখন ২৯ অক্টোবরের দিকে তাকিয়ে।”
রংপুর বিভাগের দায়িত্বপ্রাপ্ত সাংগঠনিক সম্পাদক আসাদুল হাবিব দুলু বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “আমরা আশঙ্কা করছিলাম সরকারের পক্ষ থেকে বাধা আসতে পারে। কারণ এর আগেও সেটা হয়েছে। এ কারণে সমাবেশের দুদিন আগে থেকেই মানুষজন রংপুরে আসতে শুরু করেছে। প্রয়োজনে মানুষজন হেঁটে, বাইসাইকেলে, ভ্যানে করে হলেও সমাবেশে এসে যোগ দেবেন।”
রংপুর মহানগর পুলিশের উপ-পুলিশ কমিশনার (অপরাধ) আবু মারুফ হোসেন বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম বলেন, “আমরা বিএনপির এই সমাবেশ নিয়ে কোনো বাধা দিচ্ছি না। আমাদের গোয়েন্দা তৎপরতা রয়েছে। তবে রাজনৈতিক এই সমাবেশকে ঘিরে অন্য কোনো পরিকল্পনা থাকলে আমরা কঠোর হস্তে সেটি দমন করব, আমরা প্রস্তুত রয়েছি।”
রংপুর মহানগর পুলিশ কমিশনার নুরে আলম মিনা বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “বিএনপি তাদের সমাবেশ করবে তাতে প্রশাসনের পক্ষ থেকে বাধা নেই; তবে তারা যদি বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করে তাহলে আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”