Published : 16 Jul 2023, 06:08 PM
এক সপ্তাহ ধরে বন্যার পানিতে ডুবে আছে একটি বেইলি সেতু। আর এতে বিপাকে পড়েছেন কুড়িগ্রামের ফুলবাড়ী উপজেলায় ৩ ইউনিয়নের হাজারো মানুষ।
ঝুঁকি নিয়ে কলাগাছের ভেলায় পারাপার হচ্ছেন লোকজন। এ ছাড়া সরাসরি বন্ধ হয়ে গেছে উপজেলার সদরের সঙ্গে তিন ইউনিয়নের যানচলাচল। পণ্য পরিবহনে সৃষ্টি হয়েছে অচলবস্থা।
সেতুটির অবস্থান উপজেলা সদর থেকে এক কিলোমিটার দূরে নাওডাঙ্গা পুলের পাড় এলাকার নীলকমল নদে। কয়েক মাস আগে ভেঙে নতুন করে সেতুর কাজ শুরু করা হয়। মানুষের চলাচলে ভোগান্তি কমাতে নির্মাণাধীন সেতুর পাশে তৈরি করা হয় একটি বিকল্প সেতু।
উপজেলার ফুলবাড়ী, বড়ভিটা ও ভাঙ্গামোর ইউনিয়নের কয়েক হাজার মানুষ প্রতিদিন এই বিকল্প সেতু দিয়ে যাতায়াত করেন।
স্থানীয়দের অভিযোগ, প্রকৌশল বিভাগ এবং ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান স্থানীয় ও অভিজ্ঞদের মতামত উপেক্ষা করে নিচু জায়গায় বিকল্প সেতু নির্মাণ করে। ফলে নিচু সেতু দিয়েই মালামাল পরিবহনে নানা ভোগান্তির শিকার হতে হয় মানুষকে।
আর এখন সাধারণ বন্যায় বিকল্প সেতুটি ডুবে গেছে। পারাপারে ভরসা এখন কলাগাছের ভেলা। বন্ধ হয়ে গেছে যানচলাচল।
কুড়িগ্রাম সড়ক ও জনপদ বিভাগের তথ্য মতে, সাত কোটি টাকা ব্যয়ে ৩১ মিটার দৈর্ঘ্য ও ১০ দশমিক ৩ মিটার প্রস্থের গার্ডার সেতু নির্মাণের কাজ শুরু করে ঢাকার ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান হাসান টেকনো।
চুক্তি মোতাবেক ১৫ নভেম্বর ২০২২ সাল থেকে কাজ শুরু করে ৩০ জুন ২০২৪ সালে সেতুর নির্মাণ কাজ শেষ করার কথা।
তবে সড়ক বিভাগ বলছে, কাজের যে অগ্রগতি হয়েছে তাতে নির্ধারিত সময়ের অনেক আগেই সেতুর নির্মাণ কাজ পুরোপুরি শেষ হবে।
স্থানীয় মোস্তাফিজুর রহমান ও আব্দুর রহিম জানান, নির্মাণাধীন সেতুর বিকল্প সেতুটি দায়সারা ভাবে করা হয়েছে। এলাকার মানুষের মতামতকে অবজ্ঞা করা হয়েছে।
তারা আরও জানান, অনিয়ম ও দুর্নীতির আশ্রয় নেওয়ায় সামান্য বন্যার পানিতে ডুবে গেছে বিকল্প সেতু। এতে করে ভোগান্তির শিকার হচ্ছে হাজার হাজার মানুষ।
সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ দ্রুত প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেবে এমনটাই দাবি ভুক্তভোগীদের।
এ ব্যাপারে কুড়িগ্রামের সড়ক ও জনপদ বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী নজরুল ইসলাম বলেন, “ফুলবাড়ী উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান ও উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাকে সঙ্গে নিয়ে সেখানকার পরিস্থিতি পরিদর্শন করেছি।”
তিনি বলেন, “আচমকা পানি বৃদ্ধির ফলে বিকল্প সেতুটি তলিয়ে গিয়ে মানুষের যাতায়াতের ভোগান্তির সৃষ্টি হয়েছে। বন্যার পানি কিছুটা কমছে। এখনও সেতুর উপর দুই ফিট পর্যন্ত পানি রয়েছে। আমরা আশা করছি দু-এক দিনের মধ্যেই সেতু থেকে পানি নেমে যাবে।”
প্রয়োজনীয় ব্যবস্থার কথা জানিয়ে প্রকৌশলী নজরুল ইসলাম বলেন, বন্যার পানি নেমে গেলে মানুষের দুর্ভোগ কমাতে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
মূলত সেতুর পাশে জায়গা না থাকায় বিকল্প সেতু নিচু স্থানে করতে হয়েছে বলে জানান সড়ক ও জনপদ বিভাগের এই কর্মকর্তা।