সেতু চালু হলে প্রতিদিন মালবাহীসহ ৮৮টি ট্রেন চলাচল করবে; ট্রেনগুলো প্রতি ঘণ্টায় ১০০-১২০ কিলোমিটার বেগে চলবে।
Published : 04 Jul 2023, 11:56 AM
যমুনা নদীর ওপর নির্মাণ হচ্ছে দেশের দীর্ঘতম ডুয়েল গেজ ডাবল ট্র্যাকের বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব রেলওয়ে সেতু।
প্রকল্প সংশ্লিষ্টরা জানিয়েছেন, বঙ্গবন্ধু সেতুর ৩০০ মিটার উজানে ৪ দশমিক ০৮ কিলোমিটার রেল সেতুর দেড় কিলোমিটার এখন দৃশ্যমান। এখন পর্যন্ত প্রকল্পের সার্বিক অগ্রগতি হয়েছে প্রায় ৬৫ শতাংশ।
৫০টি পিয়ারের ওপর ৪৯টি স্প্যান বসিয়ে এ সেতু তৈরি হবে। এরই মধ্যে পাইলিং শেষ হয়েছে; চলছে ৩১তম পিয়ার স্থাপনের কাজ। ভিয়েতনাম থেকে আনা স্টিলের তৈরি ১৮টি স্প্যানও বসে গেছে। দ্রুত এগিয়ে চলছে বাকি পিয়ারগুলোর কাজ।
জাপান ও বাংলাদেশের অর্থায়নে ১৬ হাজার ৭৮১ কোটি টাকা ব্যয়ে নির্মাণ হচ্ছে এই রেলসেতু। সব ঠিক থাকলে ২০২৪ সালের ডিসেম্বরে এই সেতুর উপর দিয়ে চলবে ট্রেন।
বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব রেলওয়ে সেতুর প্রকল্প পরিচালক আল ফাত্তাহ মো. মাসউদুর রহমান বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, ডুয়েল গেজ ডাবল ট্র্যাকের এই রেলসেতু নির্মাণের পাশাপাশি সেতুর দুই প্রান্তে সমানতালে চলছে অ্যাপ্রোচ রেলপথ নির্মাণের কাজ।
এরই মধ্যে রেলপথের ৭ দশমিক ০৬ কিলোমিটার এলাকায় মাটি ভরাট শেষে সেতুর পূর্ব প্রান্তে চলছে রেল ট্র্যাক বসানোর কাজ। এ ছাড়া সেতুর সঙ্গে রেল সংযোগ তৈরি করতে দুই পাড়ে ভায়াডাক্ট ও ৩০ কিলোমিটার ডাবল লাইনের রেলপথের কাজও দ্রুত এগিয়ে যাচ্ছে।
“এ সেতু চালু হলে উত্তরাঞ্চলের রেল যোগাযোগের ক্ষেত্রে যেমন নবদিগন্তের সূচনা হবে, তেমনি তৈরি হবে প্রতিবেশী দেশগুলোর সঙ্গে রেলে পণ্য পরিবহনের সক্ষমতা। সেইসঙ্গে উন্মুক্ত হবে ব্যবসা-বাণিজ্যসহ নানা সম্ভাবনার দুয়ার।”
১৯৯৮ সালে বঙ্গবন্ধু সেতু চালুর মধ্য দিয়ে রাজধানীর সঙ্গে উত্তর ও দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের সরাসরি রেল যোগাযোগ চালু হয়। তবে ২০০৮ সালে সেতুতে ফাটল দেখা দিলে কমিয়ে দেওয়া হয় ট্রেনের গতি।
বর্তমানে প্রতিদিন প্রায় ৩৮টি ট্রেন ঘণ্টায় ২০ কিলোমিটার গতিতে সেতু পার হচ্ছে। এতে সময় অপচয়ের পাশাপাশি ট্রেনের শিডিউল জটিলতা তৈরি হয়। বাড়তে থাকে যাত্রী ভোগান্তি।
সমস্যা সমাধানে সরকার যমুনা নদীর উপর আলাদা একটি রেল সেতু নির্মাণের উদ্যোগ নেয়। ২০২০ সালের ২৯ নভেম্বর ১৬ হাজার ৭৮০ কোটি টাকা ব্যয়ে বঙ্গবন্ধু রেল সেতু নির্মাণ কাজের ভিত্তি স্থাপন করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
২০২১ সালের মার্চে পাইলিংয়ের কাজ শুরু হয়। সিরাজগঞ্জ ও টাঙ্গাইল অংশে নদীর দুই পাড়ে দুটি প্যাকেজে দিন-রাত দেশি-বিদেশি প্রকৌশলী আর কর্মীদের তত্ত্বাবধানে নির্মাণ কাজ চলছে। নির্মাণে ব্যবহার করা হচ্ছে উন্নত প্রযুক্তির আধুনিক সরংঞ্জাম।
এই রেল সেতু চালু হলে প্রতিদিন মালবাহীসহ ৮৮টি ট্রেন চলাচল করবে; পাশাপাশি প্রতি ঘণ্টায় ১০০ থেকে ১২০ কিলোমিটার বেগে ট্রেন চলতে পারবে বলে জানিয়েছেন প্রকল্প সংশ্লিষ্টরা।