এ ঘটনায় তাদের বিরুদ্ধে জেলা ডিবি পুলিশের এক এসআই বাদী হয়ে মামলা করেছেন।
Published : 01 Feb 2024, 08:50 PM
যশোরে ভারপ্রাপ্ত জেলা ও দায়রা জজকে হুমকি দিয়ে উড়োচিঠি পাঠানোর অভিযোগে আইনজীবীসহ তিনজনকে গ্রেপ্তার করেছে গোয়েন্দা পুলিশ।
বৃহস্পতিবার দুপুরে যশোর শহরের পুরাতন কসবার ভাড়া বাসা থেকে ওই আইনজীবীকে গ্রেপ্তার করা হয় বলে জেলা ডিবি পুলিশের এসআই মো. মফিজুল ইসলাম জানান।
অন্য দুজনকে বুধবার রাতে ও বৃহস্পতিবার বেলা সাড়ে ১১টার দিকে গ্রেপ্তার করা হয়।
গ্রেপ্তাররা হলেন- আইনজীবী নব কুমার কুণ্ডু, চিঠি পোস্টকারী যশোর শহরের কাজীপাড়ার রবিউল ইসলাম রুবেল ও চিঠি কম্পোজকারী ষষ্ঠীতলা পাড়ার মিহির কুমার সাহা।
এ ঘটনায় তাদের বিরুদ্ধে ডিবি পুলিশের এসআই মো. মফিজুল ইসলাম বাদী হয়ে মামলা করেছেন।
মফিজুল ইসলাম জানান, ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের নির্দেশে ওই চিঠি পাঠানোর সঙ্গে জড়িতদের শনাক্ত ও আটকের জন্য মাঠে নামে জেলা ডিবি পুলিশ।
যশোর প্রধান ডাকঘরের সিসি ক্যামেরায় ধারণকৃত ভিডিও ফুটেজ পর্যালোচনা করে সন্দেহভাজন হিসেবে রবিউল ইসলাম রুবেলকে শনাক্ত করা হয়।
পরে প্রযুক্তির সাহায্যে বুধবার রাতে শহরের কাজীপাড়া থেকে তিনি গ্রেপ্তার হন।
ডিবি কর্মকর্তা মফিজুল ইসলামের দাবি, জিজ্ঞাসাবাদে আটক রুবেল ডাকঘরে গিয়ে চিঠি পোস্ট করার কথা স্বীকার করে জানান, পূর্ব পরিচিত আইনজীবী নব কুমার কুণ্ডু ওই চিঠি পোস্ট করে দেওয়ার জন্য তাকে গত রোববার ডাকঘরে পাঠিয়েছিলেন।
পরে রুবেলের দেওয়া তথ্যে নব কুমার কুণ্ডুকে গ্রেপ্তার করা হয়।
জিজ্ঞাসাবাদের এক পর্যায়ে নব কুমার বিপ্লবী কমিউনিস্ট পার্টির কথিত সদস্য মো. নজরুল ইসলাম পরিচয়ে ভারপ্রাপ্ত জেলা ও দায়রা জজকে (অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ) উড়োচিঠি পাঠানোর কথা স্বীকার করেন বলে দাবি ডিবি পুলিশের।
ডিবি বলছে, নব কুমার কুণ্ডুকে জিজ্ঞাসাবাদে জানা যায়, দলবেঁধে ধর্ষণের মামলার তিন আসামি কারাগারে আছেন। নব কুমারের কাছে ওই তিনজনের বিষয়ে আইনগত সহায়তা পাওয়ার জন্য যায় আসামিপক্ষ।
কিন্তু পরে আসামিপক্ষ নব কুমারকে বাদ দিয়ে অন্য এক আইনজীবীকে নিয়োগ করেন।
এতে ক্ষুব্ধ নব কুমার আসামিদের ক্ষতি করতে তাদের পক্ষে চরমপন্থি পরিচয়ে বিচারককে হুমকি দিয়ে উড়োচিঠি পাঠান।
ডিবি পুলিশ জানায়, বিচারককে পাঠানো চিঠিতে ওই মামলার কথা উল্লেখ করে লেখা হয়, ‘আপনাকে (বিচারক) বিশেষভাবে অনুরোধ করিতেছি যে, সকল আসামিকে জামিন দিবেন। অন্যথায় আপনার জীবনের শেষ করে দেওয়া হবে’।”
শহরের সিভিল কোর্ট মোড় এলাকার ভাই ভাই ফটোস্ট্যাট ও কমপিউটারের দোকান থেকে ওই চিঠি কম্পোজ করেছিলেন বলে জিজ্ঞাসাবাদে নব কুমার ডিবি পুলিশকে জানান।
ডিবি পুলিশ জানায়, কমপিউটর অপারেটর মিহির কুমার সাহাকে আটকের পাশাপাশি বৃহস্পতিবার দোকান থেকে সিপিইউ ও হার্ডডিস্ক জব্দ করা হয়েছে।
মামলার তদন্ত কর্মকর্তা ডিবি পুলিশের এসআই মো. আব্দুল্লাহ আল-মামুন জানান, আইনজীবী নব কুমার কুণ্ডুসহ আটক তিনজনকে বৃহস্পতিবার আদালতে তোলা হলে তারা ১৬৪ ধারায় জবানবন্দি দেন।
বিচারিক হাকিম মো. ইমরান আহম্মেদ জবানবন্দি নেওয়া শেষে আসামিদের কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন।
এ বিষয়ে যশোর আইনজীবী সমিতির সাধারণ সম্পাদক শাহীনুর রহমান বলেন, “অপরাধমূলক কর্মকাণ্ডের অভিযোগ পাওয়া গেলে নব কুমার কুণ্ডুর বিরুদ্ধে সমিতির গঠনতন্ত্র অনুযায়ী পদক্ষেপ নেওয়া হবে।”