নেত্রকোণার বারহাট্টা উপজেলায় বখাটের হাতে খুন হওয়া স্কুলছাত্রী মুক্তি বর্মণের পরিবারের সদস্যদের সমবেদনা জানাতে তার বাড়িতে গেলেন সমাজকল্যাণ প্রতিমন্ত্রী।এ সময় মুক্তি বর্মণের বাবা মেয়ের হত্যাকারীর ফাঁসি দাবি করেন।
রোববার দুপুরে উপজেলার প্রেমনগর ছালিপুরা গ্রামে স্কুলছাত্রীর বাড়িতে প্রতিমন্ত্রী আশরাফ আলী খান খসরু পৌঁছলে মুক্তির বাবা, মা ও স্বজনদের আহাজারিতে শোকাবহ পরিবেশের সৃষ্টি হয়।
প্রতিমন্ত্রীকে পেয়ে মুক্তির বাবা কান্নায় ভেঙে পড়েন। তিনি বলেন, “আমি কাউসারের ফাঁসি চাই। এই ফাঁসি যাতে দ্রুত হয়। মামলার পর মাসের পর মাস, বছরের পর বছর চইল্যা যায় রায় হয় না।
“আমার আকুল আবেদন, মেয়েটার আত্মার শান্তির জন্যে। আমার সন্তান হারাইছে। আর যাতে কোনো মায়ের সন্তান এই ভাবে না হারায়।”
সমাজকল্যাণ প্রতিমন্ত্রী পরিবারকে সান্ত্বনা দিয়ে বলেন, “কেউ আইনের ঊর্ধ্বে নয়।কোনো দুষ্কৃতকারী অপকর্ম করে পার পাবে না। তাকে শাস্তি পেতেই হবে। ঘটনার পরপরই প্রশাসনের দায়িত্বে থাকা কর্মকর্তাদের নির্দেশনা দিয়েছি। ২৪ ঘণ্টার মধ্যেই আসামি ধরা পড়েছে। দেশে আইনের শাসন আছে। আইন অনুযায়ী তার শাস্তি হবে।”
সংসদ সদস্য আশরাফ আলী খান খসরু বলেন, “এ ঘটনায় একটা ঐতিহাসিক রায়ই হবে বলে বিশ্বাস করি। আমরা এই পরিবারকে সমবেদনা জানাই। আমরা তাদের পাশে থাকব; যখন যা প্রয়োজন হয় আমরা তাদের সাহায্য করতে চেষ্টা করব।”
প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনা উল্লেখ করে তিনি বলেন, “প্রধানমন্ত্রী সব সময়েই বলেন, ইভটিজিং, মাদক, জুয়া সমাজ থেকে নির্মূল করতে হবে। আমরা চাই, সব ছেলে-মেয়েরা লেখাপড়া করুক। স্বাভাবিক জীবনযাপন করুক। আগামী দিনে তারা এই দেশকে নেতৃত্ব দিবে।তাই সবাইকে শিক্ষিত করার জন্যে প্রত্যেক জেলাতেই বিশ্ববিদ্যালয়, মেডিকেল কলেজ করা হচ্ছে। সবাইকে স্বাবলম্বী করাই আমাদের লক্ষ্য।”
এ সময় মুক্তির বাবা-মাকে আর্থিক সহায়তা দেন এবং মুক্তির বোনদের চাকরি দেওয়ার ব্যবস্থা করবেন বলে আশ্বস্ত করেন প্রতিমন্ত্রী।
এ ছাড়া নেত্রকোণা জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান অসিত সরকার সজলও মুক্তির বাবা-মায়ের হাতে জেলা পরিষদের পক্ষ থেকে আর্থিক সহায়তার চেক প্রদান করেন।
মঙ্গলবার দুপুরে মুক্তি বিদ্যালয় ছুটির পর তার দুই বান্ধবীর সঙ্গে বাড়ি ফিরছিল। পথে একই গ্রামের মো. কাউছার মিয়া অতর্কিতে তার ওপর দেশীয় অস্ত্র নিয়ে হামলা চালায়। এতে সে গুরুতর আহত হয়।
স্থানীয়রা তাকে উদ্ধার করে বারহাট্টা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যান। উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের চিকিৎসা কর্মকর্তা সাইদুল ইসলাম প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়ে উন্নত চিকিৎসার জন্য মুক্তাকে ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে স্থানান্তর করেন। বিকাল ৫টায় পথেই তার মৃত্যু হয়।
এরপর বুধবার বিকাল ৩টার ওই এলাকার একটি জঙ্গল থেকে জেলা ডিবি পুলিশের একটি টিম আসামি কাওসারকে গ্রেপ্তার করে।
তার বিরুদ্ধে মামলা দায়েরের পর আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিলে বিচারক কাউসারকে জেলহাজতে পাঠান।
আরও পড়ুন