“পরিকল্পনা অনুযায়ী ঘরে কেরোসিন ঢেলে মশারির একপাশে আগুন দিয়ে দরজা লক করে চলে যান আরিফ।”
Published : 13 Jun 2023, 11:45 PM
পটুয়াখালীর দুমকিতে স্বামী ও শাশুড়িকে ফাঁসাতে নিজের দেওয়া আগুনে গৃহবধূ হালিমা আক্তার মীম পুড়ে মারা গেছেন বলে পুলিশের ভাষ্য।
মঙ্গলবার নিজ কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে পটুয়াখালী জেলা পুলিশ সুপার মো. সাইদুল ইসলাম জানান, এ ঘটনায় গ্রেপ্তার হালিমার চাচাত ভগ্নিপতি আরিফ হোসেন সিকদার আদালতে জবানবন্দিতে এ কথা বলেছেন।
আরিফ (৩০) উপজেলার কার্তিকপাশা এলাকার হামেদ সিকদারের ছেলে। তিনি সুন্দরবন কুরিয়ার সার্ভিসে চাকরি করেন।
নিহত হালিমা (২০) উপজেলার সাতানী গ্রামের মজিবর রহমানের মেয়ে। তার স্বামী জামাল হোসেন পটুয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় এলাকায় একটি প্রতিষ্ঠানের কম্পিউটার অপারেটর।
পুলিশ সুপার বলেন, “বিয়ের পর থেকে শাশুড়ির সঙ্গে হালিমার বনিবনা হতো না। এ নিয়ে স্বামীও তার সঙ্গে ভালো ব্যবহার করতেন না। এতে পারিবারে অশান্তি বিরাজ করছিল। শ্বশুর বাড়িতে থাকতে না পেরে হালিমা গত ২ জুন দুমকি উপজেলা শহরে বাসা ভাড়া নেন।
“সেখানে গিয়ে হালিমা তার শাশুড়ি ও স্বামীকে কীভাবে শায়েস্তা করা যায় সেই পরিকল্পনা করেন। এ কাজে সহযোগিতার জন্য হালিমা তার চাচাত দুলাভাই আরিফকে রাজি করান। পরিকল্পনা অনুযায়ী হালিমা নিজে কেরোসিন ও দড়ি সংগ্রহ করেন।”
আদালতে আরিফের দেওয়া বয়ানের বরাতে সাইদুল ইসলাম আরও বলেন, “পরিকল্পনা অনুযায়ী ঘরে কেরোসিন ঢেলে মশারির একপাশে আগুন দিয়ে বাইরে থেকে দরজা বন্ধ করে চলে যাবেন আরিফ। হালিমা ডাক-চিৎকার দিলে প্রতিবেশীরা গিয়ে তাকে উদ্ধার করবে।
“পরে তিনি প্রচার করবেন, তার শরীরে আগুন দিয়ে তাকে ও তার সন্তানকে হত্যার চেষ্টা করা হয়েছে। এতে প্রথমে শাশুড়িকে এবং পরে সুযোগ বুঝে স্বামীকেও অভিযুক্ত করার পরিকল্পনা করেন হালিমা।”
দুমকি থানার ওসি আবুল বাশার বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, গত ১১ জুন ঢাকা থেকে আরিফকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। সোমবার পটুয়াখালী আদালতে জবানবন্দি দিয়েছেন আরিফ। ঘটনার দিন আরিফ দুমকিতে গিয়ে ফের ঢাকা চলে যান। এ ঘটনার সঙ্গে আরও কেউ জড়িত ছিল কিনা তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে।
বৃহস্পতিবার হালিমার ডাক চিৎকার শুনে প্রতিবেশীরা গিয়ে তার ঘর থেকে পাঁচ মাস বয়সি ছেলেসহ হালিমাকে উদ্ধার করে।
হালিমাকে প্রথমে বরিশাল শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হয়। পরে সেখান থেকে ঢাকা শেখ হাসিনা বার্ন ইউনিটে নেওয়া হলে শুক্রবার তিনি মারা যান। আগুনে হালিমার ছেলের মাথার ৬ ভাগ দগ্ধ হয়েছে। তবে সে আশঙ্কামুক্ত।
আরও পড়ুন:
পটুয়াখালীতে ‘হাত-পা বেঁধে কেরোসিন ঢেলে’ আগুন, গৃহবধূর মৃত্যু