ঝালকাঠির ওস্তাগার মাঝি বাড়ি থেকে সেতু পেরিয়ে পিরোজপুরের ছাগলকান্দা শশীর হাটে বৌভাত অনুষ্ঠানে যাচ্ছিলেন কনের পরিবারের লোকজন।
Published : 17 Apr 2024, 05:28 PM
বিয়ের বৌভাত অনুষ্ঠানে অংশ নিতে ঝালকাঠি থেকে চারটি ইজিবাইকে কনের বাড়ির লোকজন পিরোজপুরের নেছারাবাদের ছাগলকান্দার শশীর হাটে বরের বাড়ি যাচ্ছিলেন। পথে গাবখান সেতুতে দুর্ঘটনার কবলে পড়েন দুটি ইজিবাইকের যাত্রী। এতে ওই পরিবারের বেশ কয়েকজনের প্রাণ গিয়েছে; বাকিরা হাসপাতালে গুরুতর অবস্থায় চিকিৎসাধীন।
বুধবার দুপুর ২টার দিকে খুলনা-ঝালকাঠি মহাসড়কে গাবখান ব্রিজের টোলপ্লাজায় এই দুর্ঘটনায় সবশেষ ১৪ জনের মৃত্যু হয়েছে বলে পুলিশ জানায়।
সেখানে ঝালকাঠি শহরমুখী একটি সিমেন্টবাহী ট্রাক নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে সামনে থাকা তিনটি ব্যাটারিচালিত ইজিবাইক ও একটি প্রাইভেট কারকে ধাক্কা দেয়। এবং বাহনগুলিসহ ট্রাকটি পাশের খাদে পড়ে যায়।
আহতদের মধ্যে ১১ জনকে বরিশাল শের-ই বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে এবং কয়েকজনকে ঝালকাঠি সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। তাদের অনেকের অবস্থাই গুরুতর বলে জানিয়েছেন চিকিৎসক।
আহতদের মধ্যে বরিশাল শের-ই বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা গেছেন দুজন। বাকিরা ঝালকাঠিতেই মারা গেছেন।
বরিশালে মারা যাওয়া দুজন হলেন- পিরোজপুরের স্বরূপকাঠী উপজেলার মেসন্ডা এলাকার সুবিদ আলী হাওলাদারের ছেলে মো. রুহুল আমিন (৭০) এবং ঝালকাঠি সদর উপজেলার রামনগর এলাকার বাদশা মিয়ার প্রতিবন্ধী ছেলে মো. শহীদুল ইসলাম (৩৫)।
পরিবারের লোকজনের সঙ্গে বৌভাত অনুষ্ঠানে যাচ্ছিলেন রুবেল হোসেন (৩০)। তিনি দুর্ঘটনার কবলে পড়লেও প্রাণে বেঁচে যান। পরে আহত স্বজনদের নিয়ে তিনি বরিশাল শের-ই বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে আসেন।
রুবেল হোসেন বলেন, “গাবখান ধানসিঁড়ি ইউনিয়নের ওস্তকার মাঝি বাড়ি থেকে পিরোজপুরের ছাগলকান্দা শশীর হাটে যাইতেছিলাম বিয়ের বৌভাত অনুষ্ঠানে। গাবখান ব্রিজ পার হইয়া চারডা অটো (ইজিবাইক) নিয়া যাইতেছিলাম। দুইটা অটো পাশ কইরা গেছে। দুইটা টোল দিতেছিল।
“পেছন থেকে ট্রাক আইসা আমরার ওই দুইটা অটো প্লাস আরও দুইটা গাড়িড়ে মাইরা দিছে। ব্রেক ফেইল কইরা মাইরা দিয়া ও নিজে গর্তে পইড়া গেছে।”
রুবেল বলেন, নিজেদের পরিবারের তিনজনের মৃত্যু হয়েছে; আহত আছে আরও সাতজন।
দুর্ঘটনায় সব মিলিয়ে কতজন মারা গেছে এটা জানেন না রুবেল। তবে তার ধারণা গাড়ির নিচে লোক আছে।
বরিশাল শের-ই বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিহত রুহুল আমিনের মরদেহের পাশে দাঁড়িয়েছিলেন তার মেয়েজামাই গাবখানের বাসিন্দা হেমায়েত উদ্দিন।
তিনি বলছিলেন, “ছাগলকান্দায় আমরা ভাইঝি বিয়া দিছি। সেইখানে আমরা মেলা করছি (রওনা দিয়েছি)। আমরা সামনের গাড়িতে, তারা পিছের গাড়িতে, অটোতে।
“চারডা অটোতে মেলা করছি; দুইডা অটো সামনে গেছে। দুইডা পিছে টোল দেয়; আর ট্রাক আইয়া মাইরা দিছে। আমাগো লোক মারা গেছে পাঁচ-ছয়জন।”
ঝালকাঠির রামনগরের বাদশা মিয়ার ছেলে সাইদুল বলেন, তার প্রতিবন্ধী ভাই শহীদুল (৪৫) গাবখানে ভিক্ষা করেন। তিনি দুর্ঘটনায় মারা গেছেন।