“গরমে গরু ছাগল অসুস্থ হয়ে যাচ্ছে, খাওয়া দাওয়া কম করছে।”
Published : 16 Apr 2024, 09:58 PM
চুয়াডাঙ্গায় দেশের সর্বোচ্চ ৪০ দশমিক ৬ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে; যা এ মৌসুমের সর্বোচ্চ।
চুয়াডাঙ্গা আবহাওয়া অফিসের সিনিয়র আবহাওয়া পর্যবেক্ষক রাকিবুল হাসান জানান, ১২ এপ্রিল থেকে জেলায় তাপপ্রবাহ চলছে; বেশিরভাগ দিন সর্বোচ্চ তাপমাত্রা থেকেছে ৩৮ ডিগ্রির ওপরে।
“মঙ্গলবার বেলা ৩টায় জেলার সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ৪০.৬ ডিগ্রি সেলসিয়াস রেকর্ড করা হয়েছে ।
এদিকে এই আবহাওয়ায় চরম বিপাকে পড়েছেন খেটে খাওয়া মানুষেরা; বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে চুয়াডাঙ্গার জনজীবন। সকাল ৯টার পর থেকে তীব্র রোদের মধ্যেই শ্রমজীবী মানুষরা কাজের প্রয়োজনে ঘরের বাইরে বের হন। প্রচণ্ড রোদের মধ্যে রিকশা ও ভ্যান চালাতে হাঁফ ছুটেছে চালকদের।
তবে জরুরি প্রয়োজন ছাড়া যারা বেরিয়েছিলেন, তারা দ্রুত ঘরে ফিরে গেছেন। দুপুরের পর থেকে শহরে লোকজনের পাশাপাশি রিকশা ও ভ্যান কম চলতে দেখা গেছে।
কৃষি শ্রমিকরাও মাঠে গিয়ে বেশিক্ষণ কাজ করতে পারেননি। সকালে কাজ শুরু করলেও প্রচণ্ড রোদের কারণে অনেকেই বেলা ১১টার আগেই মাঠ ছেড়ে ঘরে ফিরে গেছেন।
চুয়াডাঙ্গা পৌর এলাকার কেদারগঞ্জ গ্রামের ভ্যানচালক আলমাছ আলী বলছিলেন, ভ্যান নিয়ে তিনি সকাল ১০টার দিকে বড়বাজারে এসেছিলেন। বেলা ১টা পর্যন্ত কিছু যাত্রী পাওয়া গেছে। তারপর থেকে যাত্রী মেলেনি। আশানুরুপ আয়ও হয়নি।
সদর উপজেলার গাড়াবাড়িয়া গ্রামের কৃষক শরীফউদ্দিন হাসু বলেন, “গৃহপালিত পশু নিয়ে আমাদের দুশ্চিন্তা আছে। গরমে গরু ছাগল অসুস্থ হয়ে যাচ্ছে, খাওয়া দাওয়া কম করছে।
“ধানে এসময় ঠিকমত সেচ দিতে না পারলে ধানে উৎপাদন কমে যাবে। চিটা হয়ে যাবে। পাট চাষে এ সময় ধুম পরার কথা। অথচ রোদের কারণে কাজ করতে পারছেন না কৃষকরা।”
চুয়াডাঙ্গার রিসো উন্নয়ন সংস্থার নির্বাহী পরিচালক জাহিদুল ইসলাম বলেন, “তীব্র গরমে স্বাভাবিক জীবনযাত্রা ব্যাহত হচ্ছে। খরার কারণে পানির স্তর নিচে নেমে গেছে। আমের গুটি ঝরে পড়ে যাচ্ছে।
“তাপমাত্রা উঠে গেছে ৪০ ডিগ্রিতে। এখন বৃষ্টি হওয়া খুব জরুরি।”
এদিতে তীব্র গরমে শিশু ও বৃদ্ধদের প্রতি বিশেষ যত্ন নেওয়ার পরামর্শ দিয়েছেন চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালের শিশু বিশেষজ্ঞ ডা. আসাদুর রহমান খোকন।
তিনি বলেন, “রোদ এড়িয়ে চলতে হবে; মাথা ঢেকে রাখাতে হবে। বেশি করে তরল ও পানি জাতীয় খাবার ও ফলমূল খেতে হবে। পচা ও বাসি খাবার খাওয়া যাবে না।
“অসুস্থ, বয়স্ক ও শিশুরা বাইরে না গেলেই ভাল। বাইরের তৈরি খাবার না খেয়ে বাড়ির তৈরি টাটকা খাবার খেতে হবে এ সময়।”