গাজীপুরে ইজিবাইক চালক হত্যা ও ছিনতাই মামলার চার বছর পর তিনজনকে গ্রেপ্তার করেছে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী।
বৃহস্পতিবার বিকালে গাজীপুর পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশনের (পিবিআই) পুলিশ সুপার মোহাম্মদ মাকছুদের রহমান স্বাক্ষরিত সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়।
গ্রেপ্তাররা হলেন- মুন্সীগঞ্জের লৌহজং উপজেলার মাওয়া এলাকার মো. শাহিন (৪৭), ব্রাহ্মণবাড়িয়ার বাঞ্চারামপুর উপজেলার ছয়আনি গ্রামের মো. সালাম ওরফে চঞ্চল (৪০) এবং ফরিদপুরের সালথা উপজেলার ফুলবাড়িয়া এলাকার মো. জাহাঙ্গীর (৪০)।
ওই বিজ্ঞপ্তিতে পিবিআইয়ের পুলিশ সুপার মোহাম্মদ মাকছুদ জানান, ২০১৯ সালের ২৪ মার্চ বিকালে গাজীপুরের পূবাইল থানার তালটিয়া পূর্বপাড়া এলাকার নবাব আলীর ছেলে রবিউল ইসলাম (৪০) ব্যাটারিচালিত ইজিবাইক নিয়ে বাড়ি থেকে বের হয়ে নিখোঁজ হন। স্বজনরা বিভিন্ন স্থানে খোঁজাখুঁজি করে তার কোনও সন্ধান পাননি।
পরে ওই বছরের ১৩ এপ্রিল বিকালে স্থানীয় বিন্দান এলাকায় এক খালের পানিতে ভাসমান অবস্থায় অজ্ঞাত এক পুরুষের মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ। খবর পেয়ে রবিউলের স্ত্রী মরিয়ম আক্তার ও তার পরিবারের সদস্যরা মরদেহটি দেখে শনাক্ত করেন।
তিনি আরও বলেন, এ ব্যাপারে রবিউলের স্ত্রী মরিয়ম বাদী হয়ে অজ্ঞাত আসামিদের বিরুদ্ধে একটি মামলা করেন। থানা পুলিশ ঘটনার রহস্য উদঘাটন করতে না পারায় মামলাটির পিবিআইয়ের কাছে হস্তান্তর করা হয়।
এরপর পিবিআই তদন্ত শুরু করে। গোয়েন্দা তথ্যের ভিত্তিতে এবং অত্যাধুনিক প্রযুক্তি ব্যবহার করে ঢাকার বিভিন্ন এলাকায় অভিযান চালিয়ে বুধবার ভোরে ওই তিনজনকে গ্রেপ্তার করা হয়।
মামলাটির বিষয়ে তদন্ত কর্মকর্তা পিবিআইয়ের এএসআই মো. জামাল উদ্দিন জানান, ওই তিনজনকে প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে জানা যায়, তারা ইজিবাইক চুরিসহ বিভিন্ন অপরাধের সঙ্গে জড়িত। তারা পরস্পর যোগসাজশে ২০১৯ সালের ২৪ মার্চ বিকালে রবিউল ইসলামের ইজিবাইক ভাড়া নেন।
এএসআই আরও জানান, সবাই মিলে স্থানীয় মীরের বাজার হতে ইজিবাইকে উঠে পূবাইলগামী রাস্তার দিকে যান। এ সময় রাস্তার পাশে ইজিবাইক থামিয়ে সবাই জুসসহ অন্যান্য জিনিস খেতে থাকেন। তখন রবিউলকে জুসের সঙ্গে নেশাজাতীয় দ্রব্য মিশিয়ে খেতে দেন তারা। জুস খেয়ে রবিউল তাদেরকে নিয়ে আবার রওনা হয়ে কিছুদূর যাওয়ার পর রবিউল অচেতন হয়ে পড়েন।
পরে জাহাঙ্গীর চালকের আসনে বসে নিজেই ইজিবাইক চালাতে থাকেন। এক পর্যায়ে রাস্তার পাশের একটি ডোবার মধ্যে রবিউল ইসলামকে ফেলে দিয়ে তারা ইজিবাইক নিয়ে পালিয়ে যান।
বুধবার তাদের গাজীপুর মহানগর আদালতে পাঠানো হয়। সেখানে তারা রবিউলে হত্যাকাণ্ডের ১৬৪ ধরায় জবানবন্দি দেন। পরে আদালত তাদের কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেয় বলে জানান পিবিআইয়ের এই কর্মকর্তা।