আসামি পক্ষের লোকজন আপসের জন্য চাপ দিচ্ছে; রাজি না হওয়ায় চলাচলের রাস্তায় বেড়া দিয়েছে বলে অভিযোগ ভুক্তভোগী পরিবারের।
Published : 28 Feb 2024, 11:00 PM
ঠাকুরগাঁও সদরে প্রথম শ্রেণির এক শিক্ষার্থীকে ধর্ষণের চেষ্টার ঘটনায় মামলা করায় ভুক্তভোগী পরিবারকে একঘরে করে রাখার অভিযোগ উঠেছে; বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে চলাচলের রাস্তা।
বিষয়টি স্থানীয় চেয়ারম্যান বা ইউপি সদস্যকে অবগত করলেও তারা কোনো ব্যবস্থা নেননি; এতে চরম নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছেন বলে জানিয়েছে শিশুর পরিবার।
যাতায়াতের রাস্তা খুলে না দিলে কাউকে ছাড় দেওয়া হবে না বলে জানিয়েছেন চিলারং ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মো. ফজলুল হক।
সদর উপজেলার চিলারং ইউনিয়নের কুড়ালিপাড়া গ্রামে গিয়ে দেখা যায়, বাদীর বাড়ির পশ্চিম পাশে যাতায়াতের রাস্তাটি বাঁশের বেড়া দিয়ে বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। এতে বাদীর পরিবারসহ স্থানীয় কয়েকটি পরিবারের যাতায়াত বন্ধ হয়ে গেছে।
মামলার তথ্যে জানা গেছে, ১৬ জানুয়ারি বিকালে গাছ থেকে পেঁয়ারা পেড়ে দেওয়ার লোভ দেখিয়ে প্রথম শ্রেণিতে পড়ুয়া এক শিশুকে বাড়িতে ডেকে নেয় ১৭ বছরের এক কিশোর। পরে ঘরে নিয়ে শিশুটিকে ধর্ষণের চেষ্টা করে সে।
সেখান থেকে শিশুটি বাড়িতে ফিরে কান্নাজড়িত কণ্ঠে পরিবারকে বিষয়টি জানায়। পরে এ ঘটনায় ১৮ জানুয়ারি ওই কিশোরকে আসামি করে সদর থানায় নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে মামলা করেন শিশুটির বাবা।
মামলার পর পুলিশ তাৎক্ষণিক অভিযান চালিয়ে ওই কিশোরকে গ্রেপ্তার করে আদালতে সোপর্দ করে। সেইসঙ্গে ভুক্তভোগী শিশুটি আদালতে ২২ ধারায় জবানবন্দি দেয়।
তবে ওই কিশোর এসএসসি পরীক্ষার্থী হওয়ায় কয়েকদিন পর তাকে জামিন দেয় আদালত।
ভুক্তভোগী পরিবারের অভিযোগ, “ওই কিশোর কারাগার থেকে বেরিয়ে আসার পর তার পরিবারের লোকজন মামলাটি আপসের জন্য চাপ প্রয়োগ করতে থাকেন। এতে রাজি না হলে তাদের চলাচলের রাস্তা বন্ধ করে দিয়ে একঘরে করে দেওয়া হয়েছে।”
নির্যাতিত শিশুটির মা বলেন, “আসামি পক্ষের লোকজন আপসের জন্য চাপ দিচ্ছে। রাজি না হলে তারা আমাদের যাতায়াতের রাস্তা বন্ধ করে দিয়েছে। আমি এর বিচার চাই।”
স্থানীয় বাসিন্দা গৃহবধূ শিরিন বলেন, “দুই পরিবারের মধ্যে মামলা নিয়ে বিরোধ চলছে; এখন আসামি পক্ষের লোকজন রাস্তা বন্ধ করে দিয়েছে। এতে বাদীর পরিবারসহ আমাদের যাতায়াত বন্ধ হয়ে গেছে। আমরা চাই রাস্তা খুলে দেওয়া হোক।”
মামলার বাদী শিশুটির বাবা বলেন, “বিষয়টি স্থানীয় চেয়ারম্যান ও ইউপি সদস্যকে জানালেও তারা কোনো পদক্ষেপ গ্রহণ করছেন না। এ অবস্থায় চরম নিরাপত্তাহীনতায় রয়েছি।”
ওই কিশোরের মা বলেন, “আমার ছেলের বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলা করা হয়েছে। তারা আমাদের পরিবারের অন্য সদস্যদের নামেও মামলা করতে পারেন; এজন্য যাতায়াতের রাস্তা বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে।”
বিষয়টি দেখার কথা জানিয়ে ইউপি চেয়ারম্যান ফজলুল হক বলেন, রাস্তা খুলে না দিলে কাউকে ছাড় দেওয়া হবে না।
ঠাকুরগাঁও সদর থানার ওসি ফিরোজ ওয়াহিদ বলেন, রাস্তা বন্ধের বিষয়ে কেউ অভিযোগ দেয়নি; পেলে বিষয়টি আদালতের নজরে আনা হবে।