কক্সবাজারে ভোক্তা অধিকার কর্মকর্তার টাকা আত্মসাৎ চেষ্টার অভিযোগ

অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট আবু সুফিয়ান বলেন, বিষয়টি ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের মহাপরিচালককে লিখিতভাবে জানানো হয়।

কক্সবাজার প্রতিনিধিবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 8 Sept 2022, 07:24 PM
Updated : 8 Sept 2022, 07:24 PM

অভিযানে আদায় করা টাকা দালালের মাধ্যমে আত্মসাতের চেষ্টার অভিযোগ উঠেছে ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের এক কর্মকর্তার বিরুদ্ধে।

বৃহস্পতিবার দুপুরে এ ঘটনা ঘটে বলে রামু উপজেলার নাহার ফিলিং

স্টেশনের ম্যানেজার মোহাম্মদ আব্দুল্লাহ অভিযোগ করেন।

এ ঘটনায় কক্সবাজারের অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট মো. আবু সুফিয়ান একজনকে আটক করে পুলিশে দিয়েছেন, যাকে ওই কর্মকর্তার সহযোগী ‘দালাল’ বলা হচ্ছে।

জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তর কক্সবাজার জেলা কার্যালয়ের দায়িত্বপ্রাপ্ত সহকারী পরিচালক মো. ইমরান হোসাইনের বিরুদ্ধে এ অভিযোগ উঠেছে।

পুলিশে সোপর্দ করা ব্যক্তির নাম মো. রিদুয়ান। তবে তার বিস্তারিত পরিচয় জানা যায়নি।

অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট আবু সুফিয়ান জানিয়েছেন, ইমরান হোসাইনের বিরুদ্ধে জরিমানার নামে ‘দালালের’ মাধ্যমে টাকা আদায় করে আত্মাসাৎ করার অভিযোগ সন্দেহাতীতভাবে প্রমাণিত হয়েছে।

“এ বিষয়ে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের মহাপরিচালককে লিখিতভাবে জানানো হচ্ছে।”

নাহার ফিলিং স্টেশনের ম্যানেজার মোহাম্মদ আব্দুল্লাহ বলেন, মঙ্গলবার দুপুর ২টা ১৫ মিনিটে মো. ইমরান হোসাইন নেতৃত্বে একটি দল নাহার ফিলিং স্টেশনে আসে। এ সময় তার সঙ্গে কিছু আনসার সদস্য আর রিদুয়ান নামের এক ব্যক্তি ছিলেন। আর কেউ ছিলেন না। পরে ইমরান হোসাইন একটি জ্বালানি তেলের পরিমাপ যন্ত্র নিয়ে পরিমাপ করেন এবং সামান্য ক্রটি রয়েছে বলে ফিলিং স্টেশন বন্ধ করে দেন। পরে অফিসে যোগাযোগ করতে বলেন।

“এরপর সন্ধ্যায় জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তর কক্সবাজার জেলা কার্যালয়ে আসলে ইমরান হোসাইনকে অফিসে পাওয়া যায়নি। পরবর্তীতে ফোনে যোগাযোগ করলে ইমরান হোসাইন ১ লাখ টাকা রিদুয়ানকে এবং ২০ হাজার টাকা অফিসে জমা দিতে বলেন। তারপর রিদুয়ানকে ডেকে তার হাতে ১ লাখ টাকা জমা দেওয়া হয়। আর বাকি ২০ হাজার টাকা অফিসের ভেতরে গিয়ে এক কর্মকর্তার কাছে জমা দিয়ে একটি রশিদ সংগ্রহ করি।”

২০ হাজার রশিদ দেওয়ায় সন্দেহ লাগে উল্লেখ করে তিনি বলেন, “পরদিন বুধবার পুনরায় রিদুয়ানকে ১ লাখ টাকা দেওয়ার

বিষয়টি মোবাইল ফোনে কথোপকথনের মাধ্যমে রেকর্ড করি আর সহকারী পরিচালক মো. ইমরান হোসাইনের সঙ্গে কথা বলে তারও কল রেকর্ড করি।”

এ ব্যাপারে ইমরান হোসাইনের সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও তিনি ফোন রিসিভ করেননি।

এ ব্যাপারে মো. রিদুয়ান বলেন, ইমরান হোসাইনের সঙ্গে ক্যাব প্রতিনিধি হিসেবে তিনি অভিযানে যান। ওখানে অতিরিক্ত টাকা নেওয়ার বিষয়টি সত্য নয়।

কক্সবাজার জেলা প্রশাসক মো. মামুনুর রশীদের সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, বিষয়টি শুনেছেন। বিষয়টি নিয়ে অভিযোগকারী কর্মকর্তার সঙ্গে সরাসরি আলাপ করার জন্য অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেটকে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে।

নাহার ফিলিং স্টেশনের ম্যানেজার মোহাম্মদ আব্দুল্লাহ আরও বলেন, “বিষয়টি বৃহস্পতিবার সন্ধ্যা সাড়ে ৬টায় অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট (এডিএম) আবু সুফিয়ান স্যারের কক্ষে ইমরান হোসাইন ও আমি যাই। ইমরান হোসাইন প্রথমে বিষয়টি অস্বীকার করার চেষ্টা করেন; কিন্তু পরবর্তীতে কল রেকর্ড শোনার পর ১ লাখ টাকা নেওয়ার বিষয়টি স্বীকার করেন। তার মধ্যে রিদুয়ানকে ১০ হাজার টাকা এবং ইমরান হোসাইন ৯০ হাজার টাকা নেন বলেও স্বীকার করেন।”

পরে তিনি ১ লাখ টাকা ফেরত দেন।