মৃতের স্বজনের ভাষ্য, অপারেশনের জন্য হাফিজুর চৌধুরীর ১১টি স্বাস্থ্য পরীক্ষা করা হয়; রিপোর্ট ঠিক থাকায় তাকে অপারেশন থিয়েটারে নেওয়া হয়।
Published : 08 Jul 2023, 01:18 PM
গোপালগঞ্জ শহরের একটি বেসরকারি হাসপাতালে নাকের পলিপাস অপারেশন করাতে আসা এক রোগীর মৃত্যুর পর দুই চিকিৎসক আত্মগোপনে গেছেন।
স্বজনদের ভাষ্য, দুই চিকিৎসকের ‘ভুলে’ এই মৃত্যু হয়েছে। হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ রোগীর মৃত্যুর ঘটনায় দুই চিকিৎসকের দায়ের কথা জানিয়েছে; তদন্ত করে ব্যবস্থা নেওয়ার কথা বলেছে।
শহরের পোস্ট অফিস এলাকার ডিজিটাল ডায়াগনস্টিক সেন্টার ও হেলথকেয়ার ক্লিনিকে এই ঘটনা ঘটে।
৪২ বছর বয়সী সেই রোগীর নাম হাফিজুর চৌধুরী। তার বাড়ি গোপালগঞ্জ সদর উপজেলার রঘুনাথপুর ইউনিয়নের সিংগারকুল গ্রামে।
মারা যাওয়া রোগীর ছোট ভাই শহিদুল চৌধুরী জানান, গত ৩ জুলাই রাত ৮টার দিকে ডিজিটাল ডায়াগনস্টিক সেন্টার ও ক্লিনিকে ভর্তি হন হাফিজুর চৌধুরী। অপারেশনের জন্য তার ১১টি স্বাস্থ্য পরীক্ষা করা হয়। রিপোর্ট ঠিক থাকায় রাত সাড়ে ১১টার দিকে তাকে অপারেশন থিয়েটারে নেওয়া হয়।
“সেখানে তাকে চেতনানাশক ইনজেকশন দেন দুই চিকিৎসক হিরম্ব রায় ও গোলাম সরোয়ার। তার জ্ঞান আর ফেরেনি।”
তিনি বলেন, “বিষয়টি আমরা বুঝে উঠতে পারিনি। চিকিৎসার কথা বলে তারা অ্যাম্বুলেন্স ভাড়া করে আমার ভাইকে খুলনার একটি ক্লিনিকে নিয়ে যায় । সেখানকার চিকিৎসক মৃত বুঝতে পেরে তাকে ফেরত পাঠায় ।
“পরে এ নিয়ে আমরা অভিযোগ তুললে ক্লিনিক কর্তৃপক্ষ জানায়, প্রেসার বেড়ে আমার ভাইয়ের মুত্যু হয়েছে। কিন্তু স্বাস্থ্য পরীক্ষায় তার প্রেসার ঠিক ছিল। তাদের ভুল চিকিৎসায় আমার ভাইয়ের মৃত্যু হয়েছে।”
হাফিজুরের আরেক ছোট ভাই জিল্লাল চৌধুরী বলেন, “তারা বিষয়টি ধামাচাপা দেওয়ার জন্য আমাদের মোটা অংকের টাকার প্রস্তাব দিয়েছে । কিন্তু আমরা সেটি নাকচ করি। এতে বোঝা যায় তাদের গাফিলতির কারণে আমার ভাইয়ের মৃত্যু হয়েছে।”
অপারেশন থিয়েটারে কী হয়েছিল জানতে চিকিৎসক গোলাম সরোয়ার ও হিরম্ব রায়ের বক্তব্য পাওয়া যায়নি। তাদের মোবাইল ফোনে কয়েকবার কল করলেও তারা রিসিভ করেননি। পরে এসএমএস পাঠিয়েও জবাব মেলেনি।
এ বিষয়ে জানতে ক্লিনিকের মালিক অমর কান্তি রায়ের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, “ফোনে কিছু বলা যাবে না। সাক্ষাতে সামনাসামনি বলতে হবে।”
কিন্তু ক্লিনিকে গেলে দেখা না করে তিনি কৌশলে সটকে পড়েন।
পরে ক্লিনিকের ম্যানেজার মো. শামিম বলেন, “অপারেশন করতে গিয়ে রোগীর মৃত্যুর ঘটনায় ম্যানেজমেন্টের কোনো ভুল নেই। যা হয়েছে তা চিকিৎসকের ভুলে।”
যোগাযোগ করা হলে গোপালগঞ্জের সিভিল সার্জন নিয়াজ মোহাম্মদ বলেন, “আমরা এ বিষয়ে তদন্ত করে ব্যবস্থা গ্রহণ করব। সেটা শিগগিরই করা হবে।”