গাজীপুরে স্ত্রীকে বটি দিয়ে কুপিয়ে ও শ্বাসরোধে হত্যার পর ঘরের দরজায় তালা দিয়ে স্বামী পালিয়ে যাওয়ার অভিযোগ পাওয়া গেছে।
গাজীপুর মেট্রোপলিটন পুলিশের পূবাইল থানার ওসি জাহিদুর রহমান জানান, রোববার সকাল ১০টায় মহানগরের পূবাইল থানাধীন করমতলা (পশ্চিমপাড়া) এলাকার রিপন মিয়ার ভাড়া বাড়ি থেকে ওই নারীর লাশ উদ্ধার করেছে পুলিশ।
নিহত ৩৫ বছরের নাজমা খাতুন সিরাজগঞ্জের এনায়েতপুর উপজেলার পাকুরতলা গ্রামের মাসুদ আলীর মেয়ে। তার স্বামী ৩০ বছরের ওমর ফারুক ময়মনসিংহের নান্দাইল উপজেলার তেলিয়া গ্রামের সিদ্দিক মিয়ার ছেলে।
এ দম্পতি করমতলা এলাকার ওই বাড়িতে ভাড়া থেকে স্থানীয় সাতপোয়া নেক্সট কম্পোজিট কারখানায় চাকরি করতেন।
পাশেই আরেকটি ভাড়া বাসায় বসবাস করা নাজমার বাবা মাসুদ আলী জানান, প্রায় ১০ বছর আগে নাজমার প্রথম স্বামী মারা যান। ওই ঘরে সুমাইয়া (১০) নামে এক মেয়ে রয়েছে। সে মাসুদ আলীর সঙ্গে তার বাসাতেই থাকে।
“দুই বছর আগে নাজমা ভালোবেসে তার সহকর্মী ওমর ফারুককে বিয়ে করে। বিয়ের পর তাদের ভালোই চলছিল।”
তিনি আরও জানান, শনিবার সকাল সাড়ে ৭টার দিকে তিনি নাজমার ঘরের সামনে গেলে ফারুককে ঘরে তালা দিতে দেখতে পান। এ সময় তিনি নাজমার কথা জানতে চাইলে ফারুক বলে- “সে অফিসে চলে গেছে”।
নাজমার মা নূরজাহান জানান, শনিবার রাত ৮টার দিকেও তাদের ঘরে তালা দেখে তিনি মেয়ের মোবাইলে ফোনে কল দিলে ফোন কেটে দেওয়া হয়। পরে তিনি অন্য নম্বর থেকে মেয়ের মোবাইল ফোনে কল দিলে তা রিসিভ করার পর তার পরিচয় জেনে ফোন বন্ধ করে দেওয়া হয়।
এতে সন্দেহ হলে রোববার সকালে তারা প্রতিবেশিদের নিয়ে নাজমাদের ঘরের তালা ভেঙ্গে দরজা খোলেন। এ সময় ঘরের মেঝেতে উপুড় হয়ে নাজমার মরদেহ পড়ে থাকতে দেখেন তারা।
পরে খবর দিলে পুলিশ এসে ঘটনাস্থল থেকে মরদেহ উদ্ধার করে।
ওসি জাহিদুর রহমান বলেন, সুরতহালে নাজমার মরদেহের মাথায় ও পায়ের উরুতে বটি দিয়ে কোপানোর দাগ দেখা গেছে। মরদেহের পাশ থেকে রক্তমাখা বটি উদ্ধার করা হয়েছে। এ ছাড়া তার গলায় ওড়না পেচানো অবস্থায় ছিলো।
বেলা সাড়ে ১১টায় মরদেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য গাজীপুর শহীদ তাজউদ্দীন আহমদ মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল মর্গে পাঠানো হয়েছে বলে জানান তিনি।
ওসি বলেন, “ধারণা করা হচ্ছে নাজমাকে কুপিয়ে ও শ্বাসরোধে হত্যার পর তার স্বামী দরজায় তালা লাগিয়ে পালিয়ে গেছেন। এ ঘটনায় আইনগত ব্যবস্থা প্রক্রিয়াধীন।”