মানিকগঞ্জে পুড়ল পাটখড়ির ট্রলার, চাঁদা কম দেওয়ায় অগ্নিসংযোগের অভিযোগ

শ্রমিকদের অভিযোগ, চাঁদা কম দেওয়ায় মাঝিকে মারধর ও পাটখড়িতে আগুন ধরিয়ে দেয় দুর্বৃত্তরা।

মানিকগঞ্জ প্রতিনিধিবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 28 Sept 2022, 10:55 AM
Updated : 28 Sept 2022, 10:55 AM

মানিকগঞ্জের হরিরামপুর উপজেলার পদ্মা নদীতে আগুনে পুড়ে গেছে পাটখড়ি বোঝাই একটি ট্রলার। শ্রমিকরা অভিযোগ করেছেন, দাবি করা চাঁদা না দেওয়ায় পাটখড়িতে আগুন দিয়েছে দুর্বৃত্তরা।

বুধবার সকাল সাড়ে ৯টার দিকে উপজেলার বাহাদুরপুর বাজার এলাকায় এ ঘটনা ঘটে বলে ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্সের হরিরামপুর স্টেশনের টিম লিডার মো. শফিকুল ইসলাম।

তিনি বলেন, “সকাল পৌনে ১০টার দিকে অগ্নিকাণ্ডের খবর পেয়ে দ্রুত ঘটনাস্থলে গিয়ে দেখি পাট ও পাটখড়ি বোঝাই একটি ট্রলারে আগুন জ্বলছে। প্রায় তিন ঘণ্টার চেষ্টার পর বেলা দেড়টার দিকে আমরা আগুন পুরোপুরি নিয়ন্ত্রণে এনেছি।"

ট্রলারে থাকা কয়েকজন শ্রমিক ও মাঝি জানান, তাদের বাড়ি রাজবাড়ি সদর ও পাংশা উপজেলায়। সকালে রাজবাড়ি থেকে পাঁচটি ট্রলারে বোঝাই করে পাটখড়ি নিয়ে নারায়ণগঞ্জের কাঁচপুরের উদ্দেশে যাচ্ছিলেন তারা।

নদী পথে বাহাদুরপুর ঘাট এলাকায় পৌঁছালে বাহাদুরপুর বাজার থেকে তিনটা ট্রলারে করে ৯-১০ জন লোক একটি পাটবোঝাই ট্রলারের কাছে যায় এবং তিন হাজার টাকা চাঁদা দাবি করে।

কিন্তু তাদের দুই হাজার ২০০ টাকা দেওয়ায় রাগান্বিত হয়ে দুর্বৃত্তরা মাঝি আক্কাসকে মারধর করে এবং গ্যাসলাইট দিয়ে একটি ট্রলারের পাটখড়িতে আগুন ধরিয়ে দিয়ে সটকে পড়ে।

পরে মাঝি দ্রুত ট্রলার পাড়ে আনেন। ট্রলারে থাকা এক শ্রমিক ৯৯৯ নম্বরে ফোন দিলে ফায়ার সার্ভিসের একটি ইউনিট এসে আগুন নিয়ন্ত্রণে কাজ শুরু করে।

পুড়ে যাওয়া ট্রলারের মাঝি আক্কাস বলেন, "পদ্মায় চলাচল করা ট্রলার এবং বলগেট থেকে নিয়মিত চাঁদা নেয় কয়েকজন। দাবিকৃত টাকা না দিলে তারা মারধর করে। আমরাও তাই বাধ্য হয়ে তাদের চাঁদা দিয়ে থাকি।”

অগ্নিকাণ্ডে তাদের ট্রলার পুড়ে ১০ থেকে ১২ লাখ টাকা এবং ট্রলারে থাকা ১৫ লাখ টাকার পাটখড়ি পুড়ে গেছে বলে দাবি করেন তিনি।

স্থানীয় কৃষক কামাল হোসেন বলেন, "বাহাদুরপুর এলাকায় ৪-৫টি নৌকায় করে ৯-১০ জন লোক প্রতিনিয়ত পদ্মায় চলাচলকৃত বলগেট ও ট্রলার থেকে চাঁদা উত্তোলন করে।"

ফরিদপুরের কোতোয়ালী নৌ-পুলিশের ইনচার্জ এসআই শহিদুল ইসলাম বলেন, “চাঁদাবাজির বিষয়টা আমার জানা নেই। কেউ জানায়নি।”

হরিরামপুর থানার ওসি সৈয়দ মিজানুর ইসলাম বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “খবর পেয়ে পুলিশ পাঠিয়েছি। তবে এ ঘটনায় এখনও কেউ অভিযোগ দেয়নি। অভিযোগ পেলে তদন্ত সাপেক্ষে আমরা আইনগত ব্যবস্থা নিবো।”

চাঁদাবাজির বিষয়ে তিনি বলেন, “অপরাধীদের ধরতে নৌ-পুলিশের সঙ্গে আমরা কয়েকবার যৌথ অভিযান পরিচালনা করেছি, অভিযান আরও বৃদ্ধি করবো।”