বিচারক ‘মানবিক দিক বিবেচনায়’ জামিন মঞ্জুর করেন বলে আদালতের নিবন্ধনকারী কর্মকর্তা মো. ফুয়াদ জানান।
Published : 16 Dec 2023, 07:51 PM
১৭ হাজার টাকা ক্ষুদ্রঋণ বকেয়া থাকায় বরিশালের আগৈলঝাড়া উপজেলার এক গৃহবধূকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। এ সময় ওই গৃহবধূর ২ বছরের শিশুসন্তান ও শাশুড়িকেও থানা হাজতে রাত কাটাতে হয়েছে।
শুক্রবার গভীর রাত ১টার দিকে উপজেলার গৈলা ইউনিয়নের তালতারমাঠ গ্রামের বাসিন্দা সৌদি প্রবাসী শ্যামল হালদারের স্ত্রী নুপুর মধুকে (২৬) গ্রেপ্তার করে পুলিশ।
শনিবার নুপুরকে বরিশালের জ্যেষ্ঠ বিচারিক হাকিম আদালতে হাজির করা হলে বিচারক ‘মানবিক দিক বিবেচনায়’ জামিন মঞ্জুর করেন বলে আদালতের নিবন্ধনকারী কর্মকর্তা মো. ফুয়াদ জানান।
গৃহবধূর শাশুড়ি শ্রীমতি হালদার বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, এক বছর আগে তারা বাংলাদেশ ডেভলপমেন্ট সোসাইটি-বিডিএস এনজিও থেকে ৪০ হাজার টাকা ঋণ নেন। পাঁচ মাস আগে ছেলে শ্যামল সৌদি আরবে গিয়েছে।
“সেখানে গিয়ে ছেলে দুই মাস বেকার ছিল। তাই ঋণের বাকি ১৭ হাজার টাকা সময়মত পরিশোধ করা যায়নি। এ কারণে এনজিও নুপুরের বিরুদ্ধে মামলা করেছে।
শ্রীমতি হালদার অভিযোগ করে বলেন, “মামলার নোটিশ পেয়ে পাঁচ হাজার টাকা নিয়ে এনজিওতে দিয়েছি। তখন এনজিও থেকে জানানো হয়, তিন হাজার টাকা কিস্তি হিসেবে জমা দেবে। বাকি দুই হাজার টাকা দিয়ে মামলা উঠিয়ে (প্রত্যাহার) নিতে খরচ করবে।
কিন্তু শুক্রবার রাত ১টার দিকে পুলিশ এসে পুত্রবধূকে গ্রেপ্তার করে জানিয়ে শ্রীমতি আরও বলেন, নুপুরের সঙ্গে নাতি ও তাকেও পুলিশ নিয়ে থানায় নিয়ে যায়। সারারাত তারা থানা হাজতে ছিলেন।
শনিবার সকালে শ্রীমতি হালদারকে ছেড়ে দিয়ে নুপুরকে আদালতে পাঠায় পুলিশ।
আগৈলঝাড়া থানার এসআই আমিরুল ইসলাম বলেন, পরোয়ানা থাকায় নুপুরকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। তখন সঙ্গে নারী পুলিশ সদস্য না থাকায় নুপুরের শাশুড়িকে সঙ্গে নিয়ে আসা হয়।
“সকালে শ্রীমতি হালদারকে ছেড়ে দিয়ে নুপুরকে সন্তানসহ আদালতে পাঠানো হয়েছে”, বলেন এসআই আমিরুল।
আদালতের নিবন্ধনকারী কর্মকর্তা মো. ফুয়াদ বলেন, “জ্যেষ্ঠ বিচারিক হাকিম শারমিন সুলতানা সুমী মানবিক কারণে ওই গৃহবধূকে জামিন দিয়েছেন।”
গৈলা ইউনিয়নের ৩ নম্বর ওয়ার্ডের সদস্য মানিক সরদার বলেন, “ক্ষুদ্রঋণের কিস্তি না দেওয়ায় গৃহবধূকে পুলিশ গ্রেপ্তার করেছে। তাকে আদালত জামিন দিয়েছে বলেও শুনেছি।”
ক্ষুদ্রঋণ প্রদানকারী প্রতিষ্ঠান বিডিএসের মাঠকর্মী মো. সুমন হোসেন বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “ঋণ নিয়েছে এক বছর পার হয়েছে। তাই ঋণ খেলাপীর মামলা করা হয়েছে।
মামলার নোটিশ দেওয়ার পর নুপুরের পরিবার ৫ হাজার টাকা দিয়েছে- এমন তথ্যের বিষয়ে জানতে চাইলে মাঠকর্মী সুমন তা অস্বীকার করেন।