ধর্মঘটের কারণে ফরিদপুরে বাস ও মিনিবাস চলাচল বন্ধ হয়ে যাওয়ায় বিপাকে পড়েছেন সাধারণ জনগণ।
শুক্রবার সকাল ৬টা থেকে শনিবার রাত ৮টা পর্যন্ত বাস চলাচল বন্ধের ঘোষণা দিয়েছে ফরিদপুর জেলা বাস মালিক-শ্রমিক ঐক্য পরিষদ। তারা বলছে, মহাসড়কে সব ধরনের তিন চাকার অবৈধ যান চলাচল বন্ধের দাবিতে এ ধর্মঘট।
তবে জেলা বিএনপির অভিযোগ, শনিবার ফরিদপুরে তাদের বিভাগীয় গণসমাবেশে নেতাকর্মীদের যাওয়া ঠেকাতে সরকার ও প্রশাসনের ইন্ধনে এই বাস ধর্মঘট ডাকা হয়েছে।
এর আগে গত ২২ অক্টোবর খুলনার এবং ৩০ অক্টোবর বিএনপির বিভাগীয় গণসমাবেশের আগেও সেখানকার পরিবহন মালিক ও শ্রমিকরা একই দাবিতে বাস ধর্মঘটের ডাক দেন।
ধর্মঘটের দিনের সকাল থেকে চরম দুর্ভোগে পড়েছেন সাধারণ যাত্রীরা। শুক্রবার সকাল ৯টা থেকে সাড়ে ১০টা পর্যন্ত ফরিদপুর শহরের পুরাতন বাসস্ট্যান্ড, নতুন বাসস্ট্যান্ড এবং শহরের ইমামুদ্দিন স্কয়ার এলাকা ঘুরে যাত্রীদের যানবাহনের জন্য অপেক্ষা করতে দেখা গেছে।
নতুন বাসস্ট্যান্ডে গিয়ে দেখা যায়, বাসগুলো টার্মিনালে সারিবদ্ধ করে রাখা হয়েছে। আর পরিবহন শ্রমিকরা কেরাম-লুডু খেলছেন।
সেখানে হাবিবুর নামের এক শ্রমিক বলেন, “আমরা ধর্মঘট করছি, আমাদের নেতারা বলছেন তাই। আমাদের নেতাদের কথায় চলতে হয়। তবে আমাদের তো টাকা আয় না করলে প্রতিদিন ঘরে চাল জোটে না।”
পুরোনো বাসস্ট্যান্ডে নাটোরের কৃষি শ্রমিক গুলজার মিয়া বাসের অপেক্ষায় বসে থাকতে দেখা যায়। তিনি ফরিদপুর সদরের ডিক্রির চর ইউনিয়নে এসেছিলেন ভুট্টার ক্ষেতে কাজ করতে। মালিকের কাছে খবর এসেছে এক স্ত্রী ও দুই ছেলেমেয়ে জ্বরে আক্রান্ত।
খবর পাওয়ার পরপরেই বাড়ির উদ্দেশ্য বের হয়ে নতুন বাসস্ট্যান্ড এসে বাস চলাচল বন্ধ জানতে পারেন।
তিনি বলেন, “এতটা পথ ইজিবাইকে ভেঙে ভেঙে যাওয়া সম্ভব নয়। তা ছাড়া ভাড়াও লাগবে অনেক বেশি, তাই বাসের অপেক্ষায় বসে আছি।”
গত ৭ নভেম্বর ফরিদপুর বাস মালিক শ্রমিক ঐক্য পরিষদ ঢাকা বিভাগীয় কমিশনার বরাবর চিঠি দিয়ে মহাসড়কে সব ধরনের অবৈধ তিন চাকার যান চলাচল বন্ধের বিষয়ে দাবি জানায় ।
চিঠিতে বলা হয়, ১০ নভেম্বরের মধ্যে দাবি মানা না হলে পরদিন সকাল ৬টা থেকে ৩৮ ঘণ্টা সব ধরনের বাস চলাচল বন্ধ রাখা হবে।
বাস মালিক শ্রমিক ঐক্য পরিষদের সাধারণ সম্পাদক গোলাম নাসির বলেন, দাবির বিষয়ে প্রশাসনের কাছ থেকে কোনো ইতিবাচক সাড়া না পাওয়ায় ধর্মঘটে যেতে বাধ্য হয়েছেন তারা।