খিচুড়ির ভাগাভাগি নিয়ে ঝগড়া হলে নেয়ামত আলামিনকে দেখে নেওয়ার হুমকি দেয়।
Published : 31 Mar 2024, 09:19 PM
বোনের সঙ্গে খিচুড়ি নিয়ে ঝগড়ার জেরে তৃতীয় শ্রেণির ছাত্রকে হত্যার দায়ে এক তরুণকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দিয়েছে কুমিল্লার একটি আদালত।
রোববার কুমিল্লার অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ পঞ্চম আদালতের বিচারক ফরিদা ইয়াসমিন এ রায় ঘোষণা করেন বলে আদালতের রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী মো. জাকির হোসেন জানান।
দণ্ডিত মো. নেয়ামত উল্লাহ (১৮) কুমিল্লা আদর্শ সদরের শালধর গ্রামের মো. মোসলেম সরদারের ছেলে। রায় ঘোষণার সময় তিনি আদালতের কাঠগড়ায় উপস্থিত ছিলেন।
যাবজ্জীবনের পাশাপাশি তাকে ৫০ হাজার টাকা অর্থদণ্ডও দিয়েছেন বিচারক। অনাদায়ে তাকে আরও ছয়মাসের বিনাশ্রম কারাদণ্ড ভোগ করতে হবে।
মামলার বিবরণে বলা হয়, ২০১৩ সালের ২২ ফেব্রুয়ারি একই এলাকার ফয়েজ আহমেদের ছেলে শালধর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের তৃতীয় শ্রেণির ছাত্র নয় বছর বয়সী আলামিন বাড়ি থেকে বের হয়। পরে আর ফিরে না আসায় স্বজনরা তাকে বিভিন্নস্থানে খোঁজাখুঁজি শুরু করেন। তাকে না পেয়ে পরদিন কুমিল্লা কোতয়ালি মডেল থানায় একটি নিখোঁজের সাধারণ ডায়েরি করা হয়।
পরদিন শালধরের দেলোয়ার হোসেন নামে এক ব্যক্তির পুকুরে আলামিনের মরদেহ ভাসতে দেখেন স্থানীয়রা। তার ঘাড়ে ধারাল অস্ত্রের আঘাতের চিহ্ন ছিল। এ ঘটনায় ২৪ ফেব্রুয়ারি নিহতের বাবা বাদী হয়ে অজ্ঞাত পরিচয় ব্যক্তিদের আসামি করে কোতোয়ালি মডেল থানায় একটি হত্যা মামলা করেন।
মামলার তদন্ত কর্মকর্তা পিবিআই পুলিশ পরিদর্শক মো. সারওয়ার আলম তথ্যপ্রযুক্তির সহায়তায় শালধর গ্রামের মো. মোসলেম সরদারের দুই ছেলে আসামি মো. নেয়ামত উল্লাহ ও মো. শাহ জাহানকে আটক করে আদালতে তোলে।
২০১৫ সালের ১২ ডিসেম্বর নেয়ামত, শাহ জাহান এবং তাদের মা পলাতক আসামি ৫৫ বছর বয়সী মোর্শেদার বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র দাখিল করে পিবিআই। সেখানে উল্লেখ করা হয়- আলামিন ও নেয়ামতের ছোট বোনসহ কয়েকজন চাঁদা তুলে খিচুড়ি রান্না করে।
পরে খিচুড়ি ভাগাভাগি নিয়ে আলামিন ও নেয়ামতের ছোট বোনের ঝগড়া হয়। এ সময় নেয়ামত আলামিনকে দেখে নেওয়ার হুমকি দেয়; পরে তাকে হত্যা করা হয়।
এ মামলার বাকি আসামিদের বিরুদ্ধে অভিযোগ প্রমাণিত না হওয়ায় তাদের বেকসুর খালাস দেওয়া হয়েছে।
রায়ে সন্তোষ প্রকাশ করে রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী মো. জাকির হোসেন বলেন, “আশা করছি উচ্চ আদালত এই রায় বহাল রাখবেন।”