হোটেল কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে অভিযোগ, খেতে না দিয়ে শিক্ষার্থীকে বের করে দেওয়া হয়েছিল।
Published : 04 Oct 2022, 09:35 PM
হরিজন সম্প্রদায়ের মানুষ বলে খেতে না দিয়ে রংপুরের যে হোটেল থেকে শিক্ষার্থীকে বের করে দেওয়া হয়েছিল সেখানেই পুলিশ তাকে নিয়ে গিয়ে মিষ্টিমুখ করিয়েছে।
মঙ্গলবার দুপুর আড়াইটার দিকে মৌবন হোটেলের ব্যবস্থাপক আরিফুজ্জামান এবং রংপুর মেট্রোপলিটন পুলিশের সহকারী কমিশনার (কোতোয়ালী জোন) আরিফুজ্জামান শিক্ষার্থী জীবন বাসফোরকে মিষ্টিমুখ করান।
এর আগে পুলিশ বিরোধ মীমাংসার জন্য কোতোয়ালী থানায় হরিজন সম্প্রদায়ের নেতা ও মৌবন হোটেল কর্তৃপক্ষকে নিয়ে আলোচনায় বসে। সভায় দুঃখ প্রকাশ করে ভবিষ্যতে এ ধরনের ঘটনা ঘটবে না বলে হোটেল কর্তৃপক্ষ আশ্বস্ত করেন। তার মধ্য দিয়ে এ ঘটনার সমাধান হয়েছে বলে জানান হরিজন নেতারা।
শনিবার সন্ধ্যায় শহরের কাচারী বাজার এলাকার বাসিন্দা নবম শ্রেণির ছাত্র জীবন বাসফোর মৌবন হোটেলে নাশতা খেতে যায়। এ সময় হোটেলের ব্যবস্থাপকসহ কয়েকজন কর্মচারী জীবনকে হোটেল থেকে ধাক্কা মেরে বের করে দেন। একপর্যায়ে হোটেলের কর্মকর্তা আতিকুল ইসলাম হোটেলের প্যাডে ‘এই হোটেলে খাওয়া নিষেধ সুইপারের’ লিখে সই দিয়ে জীবনের হাতে ধরিয়ে দেন।
এর পর হরিজন সম্প্রদায়ের নেতারা ‘জাতিগত বর্ণবৈষম্যের’ অভিযোগ এনে রংপুর মেট্রোপলিটন পুলিশের কোতোয়ালী থানায় একটি লিখিত অভিযোগ দেন। হোটেল কর্তৃপক্ষের এ ধরনের আচরণে সমাজের নানা শ্রেণি-পেশার মানুষ ক্ষোভ প্রকাশ করেন।
আজ আলোচনার মাধ্যমে বিষয়টি সমাধান করে পুলিশ। এজন্য হারিজন সম্প্রদায়ের নেতারা সবার প্রতি ধন্যবাদ জানান।
হরিজন সম্প্রদায়ের নেতা সুরেশ বাসফোর বলেন, “মীমাংসার পর মৌবন হোটেলে গিয়ে আমরা এক সঙ্গে মিষ্টি খেয়েছি। আগামীতে এ ধরনের ঘটনা ঘটবে না বলে হোটেল কর্তৃপক্ষ আমাদের আশ্বস্ত করেছে। আমাদের পাশে যারা দাঁড়িয়েছিলেন আমি সবাইকেই ধন্যবাদ জানাই।”
“বাংলাদেশ এমন একটি দেশ যেখানে কোনো মানুষের প্রতি অন্যায় হলে সবাই সেই অন্যায়ের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়ায়। এই ঐক্যবদ্ধতার ফল স্বরূপ আজ আমাদের অধিকার আমাদেরকে ফিরিয়ে দেওয়া হলো।”
মৌবন হোটেলের ব্যবস্থাপক আরিফুজ্জামান বলেন, “গত শনিবার যে ঘটনাটি ঘটেছে সেখানে মালিকপক্ষের কেউ জড়িত ছিলেন না। কোনো কাস্টমার হয়তো প্যাডের পাতায় ‘এই হোটেলে খাওয়া নিষেধ সুইপারের’ লিখে দিয়েছিল।”
“প্রশাসনের মাধ্যমে হরিজনদের সঙ্গে হোটেল কর্তৃপক্ষ বসে আলোচনার মাধ্যমে এই বিরোধ মিটমাট করা হয়েছে। আমি নিজেই জীবন বাসফোরকে মিষ্টি খাইয়ে দিয়েছি।“
রংপুর মেট্রোপলিটন পুলিশের কোতোয়ালী থানার ওসি মাহফুজার রহমান বলেন, “হোটেল কর্তৃপক্ষ ও হরিজন সম্প্রদায়ের নেতাদের নিয়ে আলোচনার ভিত্তিতে বিরোধটি মীমাংসা করা হয়েছে।”
আলোচনায় আরও উপস্থিত ছিলেন হরিজন অধিকার আদায় সংগঠনের নেতা রাজা বাসফোর, রাজু বাসফোর, সাজু বাসফোর।
আরও পড়ুন: