স্বতন্ত্র প্রার্থীর প্রধান নির্বাচনি এজেন্ট ও বেড়া পৌরসভার সাবেক মেয়র আব্দুল বাতেন বলেন, “আমাদের নির্বাচনি প্রচার দেখে নৌকা প্রার্থীর মাথা নষ্ট হয়ে গেছে।”
Published : 29 Dec 2023, 07:50 PM
এক দিনের ব্যবধানে আবারও পাবনা-১ আসনের স্বতন্ত্র প্রার্থী আবু সাইয়িদের নির্বাচনি প্রচারে হামলার অভিযোগ উঠেছে।
সাঁথিয়া উপজেলার সাঁথিয়া পাইলট উচ্চ বিদ্যালয়ের সামনে শুক্রবার সন্ধ্যায় এ ঘটনা ঘটে।
এতে স্বতন্ত্র প্রার্থীর সমর্থক বেড়া উপজেলা আওয়ামী লীগের ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক আব্দুর রশিদ দুলালসহ অন্তত ১০ জন আহত হওয়ার খবর পাওয়া গেছে।
এ ঘটনায় স্বতন্ত্র প্রার্থীর সমর্থকরা নৌকার প্রার্থীর লোকজনকে দুষছেন। নৌকার সমর্থকরাও পাল্টা হামলার অভিযোগ তুলেছেন।
আহত আব্দুর রশিদ দুলাল ঘটনার বর্ণনায় বলেন, সন্ধ্যায় সাবেক তথ্য প্রতিমন্ত্রী স্বতন্ত্র প্রার্থী আবু সাইয়িদ বোয়ালমারী মাদ্রাসা মাঠে একটি নির্বাচনি জনসভা করেন। জনসভা শেষে আমরা একটি মিছিল নিয়ে সাঁথিয়া বাজার ঘুরে সাঁথিয়া পাইলট উচ্চ বিদ্যালয়ের সামনে যাই।
“সেখানে নৌকার প্রার্থী জাতীয় সংসদের ডেপুটি স্পিকার শামসুল হক টুকুর সমর্থক সাঁথিয়া উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান সোহেল রানা, সাবেক ছাত্রলীগ নেতা হাসিবুল ইসলাম ছানা ও রুবেলের নেতৃত্বে দেশীয় অস্ত্রশস্ত্র নিয়ে আমাদের ওপর হামলা চালানো হয়। এ সময় আমিসহ আমাদের কমপক্ষে দশ নেতাকর্মী আহত হন। “
এর আগে বৃহস্পতিবার দুপুরে সাঁথিয়া উপজেলার সেলন্দা বাজারে আবু সাইয়িদের গাড়িবহরে হামলা ও ভাঙচুরের ঘটনা ঘটে। এতে অভিযোগ ওঠে নৌকার সমর্থকদের বিরুদ্ধে।
স্বতন্ত্র প্রার্থীর প্রধান নির্বাচনি এজেন্ট ও বেড়া পৌরসভার সাবেক মেয়র আব্দুল বাতেন বলেন, “আমাদের নির্বাচনি প্রচার দেখে নৌকার প্রার্থীর মাথা নষ্ট হয়ে গেছে। তিনি জ্ঞানহীন হয়ে তার পেটোয়া বাহিনী দিয়ে একের পর এক হামলা চালিয়ে যাচ্ছেন।
কিন্তু আমরা আইনের প্রতি শ্রদ্ধাশীল হওয়ায় পাল্টা আক্রমণ করছি না। বার বার অনুরোধ করছি প্রশাসনকে নিরপেক্ষভাবে কাজ করার জন্য। প্রশাসন এক পাক্ষিক অবস্থানে থাকায় এ ধরনের কর্মকাণ্ড ঘটিয়ে চলছে তারা। এমন সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড
করে নির্বাচনে জয়ী হওয়া যায় না।”
স্বতন্ত্র প্রার্থী আবু সাইয়িদ বলেন, “নৌকার প্রার্থী শামসুল হক টুকুর আমাদের নির্বাচনি জোয়ার দেখে মাথা খারাপ হয়ে গেছে। তারা যেকোনো মূল্যে আমাদের মাঠ ছাড়া করতে চায়।
“আমরা বৃহস্পতিবারের হামলার ঘটনায় রিটার্নিং কর্মকর্তা, অনুসন্ধান কমিটি ও পুলিশের কাছে লিখিত অভিযোগ করেছি। কিন্তু তারা তো নিরপেক্ষভাবে কাজ করছে না।”
অভিযোগের বিষয়ে জানতে সাঁথিয়া থানার ওসি আনোয়ার হোসেন বলেন, “কিছু অতি উৎসাহী লোকজন নির্বাচনি মিছিলে ইট-পাটকেল ছুঁড়ে পালিয়ে যায়। এখানে হামলার মতো তেমন কোন ঘটনা ঘটেনি। পরিবেশ একদম স্বাভাবিক রয়েছে।”
এদিকে স্বতন্ত্র প্রার্থীর সমর্থকদের বিরুদ্ধে পাল্টা হামলার অভিযোগ করেছেন সাঁথিয়া পৌরসভার সাধারণ সম্পাদক সোহেল রানা খোকন।
পাবনায় স্বতন্ত্রের গাড়িবহরে হামলা-ভাঙচুর, অভিযোগ নৌকার বিরুদ্ধে
বিডিনিউজ টোয়োন্টিফোর ডটকমকে তিনি বলেন, “আমরা পার্টি অফিসের সামনে বসে ছিলাম। এ সময় স্বতন্ত্র প্রার্থীর মিছিল থেকে আমাদের লক্ষ্য করে ইট-পাটকেল ছোড়া হয়। এ সময় আমাদের একটি শোভাযাত্রায়ও হামলা করে তারা। আমাদের লোকজন বাধা দিলে দুই পক্ষের মধ্যে ‘হালকা উত্তেজনা’ সৃষ্টি হয়।”
স্বতন্ত্র প্রার্থীর হামলার তাদের পাঁচ কর্মী আহত হয়েছেন বলেও দাবি খোকনের।
স্বতন্ত্র প্রার্থী হওয়া সাঁথিয়া উপজেলা চেয়ারম্যান আব্দুল্লাহ আল মাহমুদ দেলোয়ার বলেন, “স্বতন্ত্র প্রার্থীর লোকজনের ওপর দোষ চাপাতে উপজেলা আওয়ামী লীগ কার্যালয়ে বাতি নিভিয়ে নিজেরাই বঙ্গবন্ধুর ছবিসহ বিভিন্ন আসবাবপত্র ভাঙচুর করছেন বলে আমরা খবর পেয়েছি। তারাই এই ঘটনার দায় আমাদের উপর চাপানোর চেষ্টা করছেন।”