আক্তার হোসেনের দাবি- তার কাছ থেকে ৪০ হাজার টাকা ধার নেন মাহমুদা। তা ফেরত না দিয়ে টাল-বাহানা করতে থাকেন তিনি।
Published : 08 Sep 2024, 11:47 AM
কুমিল্লার হোমনায় এক যুবকের ধারের টাকা পরিশোধ না করায় মা-ছেলেসহ তিন জনকে খুন করা হয়েছে বলে জানিয়েছে পুলিশ।
নিহত নারীর ‘পরকীয়া প্রেমিক’ হিসেবে উল্লেখ করা ওই যুবককে গ্রেপ্তারের পর শনিবার বিকালে এই তথ্য জানিয়েছেন হোমনা থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) জয়নাল আবেদীন।
আলোচিত এই হত্যাকাণ্ডে জড়িত থাকার অভিযোগে গ্রেপ্তার আক্তার হোসেনের (২৭) হোমনার শ্রীমদ্দি চরেরগাঁও এলাকায়। তিনি ওই গ্রামের হক মিয়ার ছেলে।
শুক্রবার রাতে অভিযান চালিয়ে নিজ বাড়ি থেকে আক্তারকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ।
শনিবার বিকালে ওসি জয়নাল আবেদীন বলেন, গ্রেপ্তারের পর জিজ্ঞাসাবাদে আক্তার হোসেন নিহত মাহমুদার সঙ্গে তার পরকীয়া প্রেমের সম্পর্ক ছিল বলে জানান। এর সূত্র ধরে আক্তার হোসেনের কাছ থেকে ৪০ হাজার টাকা ধার নেন মাহমুদা। কিন্তু টাকা ফেরত না দিয়ে ‘দেব-দিচ্ছি ‘ করে টাল-বাহানা করতে থাকেন মাহমুদা।
আক্তার হোসেনের বরাতে ওসি বলেন, এ নিয়ে দুজনের মধ্যে কয়েক দফা বাগবিতণ্ডা হয়। সবশেষ বুধবার সন্ধ্যায় আক্তারকে তার পাওনা টাকা ফেরত দেবেন বলে বাড়িতে ডাকেন মাহমুদা। পরে রাতে মাহমুদা, তার ছেলে সাহাব উদ্দিন এবং মাহমুদার স্বামীর ভাতিজি তিশা আক্তারসহ একসঙ্গে খাওয়া-দাওয়া করেন।
“তিশা ও সাহাব ঘুমিয়ে গেলে গভীর রাতে মাহমুদা ও আক্তারের মধ্যে ঝগড়া বাঁধে। একপর্যায়ে মাহমুদাকে মাথায় আঘাত করে গলায় ওড়না পেঁচিয়ে হত্যা করেন আক্তার।
“পরে তিনি ভাবতে থাকেন তিশা ও সাহাব তো তাকে দেখেছে। তারা যদি আক্তারের কথা বলে দেয়- সেই আশঙ্কা থেকে তাদের দুজনকেও গলায় ওড়না পেঁচিয়ে হত্যা করেন। এবং মরদেহ তিনটি শোবার ঘরের খাটের ওপর রেখে পালিয়ে যান।”
ওসি জয়নাল আরও বলেন, বৃহস্পতিবার সকালে হোমনা উপজেলার ঘাগুটিয়া ইউনিয়নের বড় ঘাগুটিয়া গ্রামের ভূঁইয়া বাড়ি থেকে নিহত তিনজনের মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ।
নিহতরা হলেন, ওই গ্রামের শাহপরানের স্ত্রী মাহমুদা আক্তার (৩৫), তাদের ৯ বছরের ছেলে সাহাব উদ্দিন এবং শাহপরানের মামাতো ভাই ও প্রতিবেশী রেজাউল করিমের মেয়ে তিশা আক্তার (১৪)।
শাহপরান ঢাকায় একটি প্রতিষ্ঠানে চাকরি করেন। তিনি মাসে দু-একবার করে বাড়িতে আসতেন। স্থানীয় একটি বিদ্যালয়ের নবম শ্রেণীর শিক্ষার্থী তিশা আত্মীয়তার সুবাদে প্রায় সময় ওই বাড়িতে মাহমুদার সঙ্গে থাকতেন।
ওসি বলেন, এ ঘটনায় নিহত মাহমুদার বাবা বাদী হয়ে হত্যা মামলা করার পর ঘটনার রহস্য উদঘাটনে নামে পুলিশ এবং হত্যাকারী আক্তারকে শনাক্ত করতে সক্ষম হয়।
আক্তার হোসেনকে শনিবার বিকালে আদালতে তোলা হলে ঘটনার দায় স্বীকার করে তিনি ১৬৪ ধারায় জবানবন্দি দিয়েছেন বলেও জানান ওসি।
আগের খবর
হত্যার পর গলায় ওড়না পেঁচিয়ে ফেলে রাখা হয় মা-ছেলেসহ ৩ জনকে