“শুক্রবার সদর উপজেলার গঞ্জপাড়ায় বিদ্যুতের তারে লজ্জাবতী বানরটিকে ঝুলন্ত অবস্থায় পাওয়া যায়।”
Published : 13 Apr 2025, 07:09 PM
খাগড়াছড়িতে বিপন্ন প্রজাতির বাংলা লজ্জাবতী বানর উদ্ধারের পর অবমুক্ত করেছে বন বিভাগ।
রোববার বিকালে বানরটি খাগড়াছড়ি বন বিভাগের আলুটিলা সংরক্ষিত বনে প্রাণীটি অবমুক্ত করেন বিভাগীয় বন কর্মকর্তা মো. ফরিদ মিঞা।
তিনি বলেন, “শুক্রবার সদর উপজেলার গঞ্জপাড়ায় বিদ্যুতের তারে লজ্জাবতী বানরটিকে ঝুলন্ত অবস্থায় পাওয়া যায়। স্থানীয়রা বন বিভাগকে খবর দিলে খাগড়াছড়ি সদর রেঞ্জের বনকর্মীরা গিয়ে বানরটি উদ্ধার করে রেঞ্জ কার্যালয়ে নিয়ে আসে।
“দুই দিন ধরে পরিচর্যা করে লজ্জাবতী বানরটিকে স্বাভাবিক অবস্থায় নিয়ে আসা হয়। পরে সেটিকে অবমুক্ত করা হয়।”
বাংলা লজ্জাবতী বানর বা Bengal Slow loris প্রাণিটি Primates বর্গের অন্তর্গত Loridae গোত্রের সদস্য। এর বৈজ্ঞানিক নাম Nycticebus bengalensis।
আন্তর্জাতিক প্রকৃতি ও প্রাকৃতিক সম্পদ সংরক্ষণ সংঘ বা আইইউসিএনের লাল তালিকায় বাংলা লজ্জাবতী বানরকে রাখা হয়েছে ‘বিপন্ন’ ক্যাটাগরিতে। এর মানে হল, এই প্রাণীর প্রজাতি প্রকৃতিতে বিলুপ্ত হয়ে যাবার সম্ভাবনা রয়েছে।
বিভাগীয় বন কর্মকর্তা ফরিদ মিঞা বলেন, “লজ্জাবতী বানরের মাথাসহ দেহ ৩৩ সেমি লম্বা এবং ওজন প্রায় ১.২ কেজি। এ বানরের দেহ হালকা বাদামি থেকে ধূসর রঙের ছোট নরম পশম দ্বারা আবৃত।
“এদের মাথা গোলাকৃতি, বাদামি রঙের বলয়যুক্ত পেঁচার মতো চোখ, পশমের মধ্যে প্রায় ঢেকে থাকা খাটো লেজ এবং মাথার ওপর থেকে পিঠ পর্যন্ত লম্বা বাদামি দাগ দেখতে পাওয়া যায়।”
বাংলা লজ্জাবতী বানর মূলত বাংলাদেশ, ভারত, ভূটান, কম্বোডিয়া, চিন, মায়ানমার থাইল্যান্ড, ভিয়েতনামে পাওয়া যায়। বাংলাদেশের পাহাড়ি চিরসবুজ বনে এদের দেখা যায়।
এরা মূলত নিশাচর প্রাণি। সাধারণত দিনে চলাচল করে না।
এ প্রজাতির বানর গাছের উঁচু শাখায় থাকতে পছন্দ করে। তাদের খাদ্যতালিকায় রয়েছে গাছের কচি পাতা, গাছের আঠা, ছোট ছোট পোকামাকড়, ছোট পাখি এবং বিভিন্ন প্রাণীর ডিম। শান্ত প্রকৃতির এই প্রাণী অন্যান্য বন্য প্রাণীর চেয়ে বেশ ধীরে চলে বলেও জানান এই বন কর্মকর্তা।