নারায়ণগঞ্জের আলোচিত সাত খুনের ফাঁসির দণ্ডপ্রাপ্ত আসামি নূর হোসেনের বিরুদ্ধে আরেকটি অস্ত্র ও মাদক মামলার বিচার শুরু হয়েছে; এতে আসামি হিসেবে তার ভাই ও ভাতিজাসহ ১১ জন রয়েছেন।
এর মধ্য দিয়ে দীর্ঘ আট বছর পর রোববার দুপুরে জেলা ও দায়রা জজ মুন্সি মশিয়ার রহমানের আদালতে এই মামলার অভিযোগ গঠনের মধ্য দিয়ে বিচারকাজ শুরু হয়েছে বলে রাষ্ট্রপক্ষের কৌঁসুলি মনিরুজ্জামান বুলবুল জানান৷
এ সময় নূর হোসেনসহ মামলার অন্য আসামিরাও আদালতে উপস্থিত ছিলেন৷ এর আগে সকালে পুলিশি নিরাপত্তার মধ্য দিয়ে গাজীপুরের কাশিমপুর কারাগার থেকে আদালতে আনা হয় তাকে৷
রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী মনিরুজ্জামান বুলবুল বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, ২০১৪ সালের ২৯ মে পুলিশ সিদ্ধিরগঞ্জের শিমরাইল এলাকায় নূর হোসেনের নিয়ন্ত্রিত ট্রাকস্ট্যান্ডের পেছন থেকে বিপুল পরিমাণ ফেনসিডিল, ধারালো দেশীয় অস্ত্র উদ্ধার করে৷
ওই বছরের ১৯ অক্টোবর এ মামলায় নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশনের (নাসিক) সাবেক কাউন্সিলর নূর হোসেন, তার ভাই নাসিকের ৪ নম্বর ওয়ার্ডের বর্তমান কাউন্সিল নূর উদ্দিন ও ভাতিজা ৩ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর শাহজালাল বাদলসহ ১১ জনকে আসামি করে আদালতে অভিযোগপত্র দেয় পুলিশ৷
মনিরুজ্জামান বুলবুল বলেন, “মামলা জটের কারণে শুনানি পিছিয়ে ছিল৷ আজ অভিযোগ গঠনের মধ্য দিয়ে এই মামলার বিচার শুরু হয়েছে৷ দ্রুত মামলাটি নিষ্পত্তি করতে রাষ্ট্রপক্ষ কাজ করছে।”
গত ৪ আগস্ট একটি অস্ত্র মামলার রায়ে পৃথক দুটি ধারায় নূর হোসেনকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড প্রদান করেন অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ দ্বিতীয় আদালতের বিচারক সাবিনা ইয়াসমিন৷ একই আদালত গত বছরের ৬ জানুয়ারি আরেকটি অস্ত্র মামলায় নূর হোসেনকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড প্রদান করেন৷
২০১৪ সালের ২৭ এপ্রিল ঢাকা-নারায়ণগঞ্জ লিংকরোড থেকে নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশনের প্যানেল মেয়র নজরুল ইসলামসহ সাতজন অপহৃত হন। এর তিন দিন পর ৩০ ও ৩১ এপ্রিল শীতলক্ষ্যা নদী থেকে ওই সাতজনের লাশ উদ্ধার করে পুলিশ।
ওই অপহরণ ও হত্যা মামলায় ২০১৭ সালের ১৬ জানুয়ারি নারায়ণগঞ্জ জেলা ও দায়রা জজ আদালত নূর হোসেন ও র্যাবের সাবেক তিন কর্মকর্তাসহ ২৬ জনকে মৃত্যুদণ্ড দেয়।
তাদের মধ্যে নূর হোসেনসহ ১৫ জনের মৃত্যুদণ্ড হাই কোর্টেও বহাল থাকে। বাকি ১১ জনের সাজা কমিয়ে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দেওয়া হয়।
মৃত্যুদণ্ডাদেশ থেকে খালাস চেয়ে নূর হোসেনসহ কয়েকজন হাই কোর্টের রায়ের বিরুদ্ধে আপিল করেছেন। নূর হোসেনকে এখন রাখা হয়েছে গাজীপুরের কাশিমপুর কারাগারে।
আরও পড়ুন