সাত খুনে দণ্ডিত নূর হোসেনের ‘পৌনে ৩ কোটি টাকার অবৈধ সম্পদ’

নারায়ণগঞ্জের আলোচিত সাত খুন মামলার মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত আসামি নূর হোসেনের নামে পৌনে তিন কোটি টাকার অবৈধ সম্পদ রয়েছে বলে দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) এক মামলার তদন্তে উঠে এসেছে।

নিজস্ব প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 2 May 2019, 04:54 PM
Updated : 2 May 2019, 04:54 PM

এসব সম্পদের মধ্যে তিনটি প্রাইভেটকার, ১৬টি বাসসহ অন্যান্য স্থাবর ও অস্থাবর সম্পদ রয়েছে।

এছাড়া দুদকে দাখিল করা নূর হোসেনের সম্পদ বিবরণীতে দুই কোটি ৪৫ লাখ চার হাজার ১৭২ টাকার সম্পদের তথ্য গোপন করা হয়েছে বলে তদন্তে বেরিয়ে এসেছে।

এসব অবৈধ সম্পদ অর্জন ও সম্পদের তথ্য গোপনের অভিযোগের মামলায় কমিশন অভিযোগপত্র অনুমোদন দিয়েছে বলে দুদকের এক কর্মকর্তা জানিয়েছেন।

তিনি বৃহস্পতিবার বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “শিগগিরই এ অভিযোগপত্র আদালতে উপস্থাপন করা হবে।”

এর আগে ২০১৬ সালের ১ অগাস্ট অবৈধ সম্পদ অর্জনের অভিযোগে নূর হোসেনের বিরুদ্ধে রাজধানীর রমনা থানায় দুদকের তৎকালীন উপ-পরিচালক মো. জুলফিকার আলী (বর্তমানে পরিচালক) বাদী হয়ে মামলা দায়ের করেন।

পরে কমিশনের সহকারী পরিচালক মো. শফি উল্লাহ মামলাটি তদন্তের দায়িত্ব পান। আড়াই বছর মামলাটি তদন্ত করে অভিযোগপত্র অনুমোদন চেয়ে সম্প্রতি কমিশনে তিনি প্রতিবেদন জমা দেন।

ওই প্রতিবেদনে বলা হয়, নূর হোসেন এক কোটি ৪৩ লাখ ৪৩ হাজার ৬৯৭ টাকার সম্পদ রয়েছে বলে দুদকে সম্পদ বিবরণী দাখিল করেন। কিন্তু তদন্তে তার নামে তিন কোটি ৮৮ লাখ ৪৭ হাজার ৮৬৯ টাকার সম্পদের তথ্য পাওয়া যায়। এখানে তিনি দুই কোটি ৪৫ লাখ চার হাজার ১৭২ টাকার সম্পদের তথ্য গোপন করেছেন, যা দুর্নীতি দমন কমিশন আইন-২০০৪ এর ২৬(২) ধারায় অপরাধ করেছেন বলে তদন্ত প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়।

অপরদিকে নূর হোসেনের আয়কর নথিতে তার সম্পদের মধ্যে এক কোটি সাত লাখ ৩৬ হাজার ৫৬ টাকার সম্পদ অর্জনের উৎস পাওয়া গেলেও বাকি দুই কোটি ৮১ লাখ ১১ হাজার ৮১৩ টাকার সম্পদ অর্জনের কোনো বৈধ উৎস পাওয়া যায়নি, যা তার অবৈধ সম্পদ বলে প্রতিবেদনে বলা হয়। এতে তিনি দুদক আইনের ২৭ (১) ধারায় অপরাধ করেছেন বলে তদন্ত প্রতিবেদনে বলা হয়েছে।

তদন্ত প্রতিবেদনে বলা হয়, নূর হোসেন সম্পদ বিবরণীতে তার তিনটি প্রাইভেটকারের কথা উল্লেখ করলেও এগুলোর মূল্য উল্লেখ করেননি। এছাড়া তিনি এবিসি পরিবহন নামে ইফাদ অটোস থেকে কিস্তিতে ১৬টি বাস ক্রয় করেন। এসব বাস একটি বালুর মাঠে পরিত্যক্ত অবস্থায় পাওয়া যায়। কিন্তু এগুলো সম্পদ বিবরণীতে উল্লেখ করেননি তিনি। বাসগুলোর কিস্তি ও ডাউন পেমেন্টসহ এক কোটি ৭৩ লাখ ৮৯ হাজার ৮৩৬ টাকা ইফাদ অটোসকে পরিশোধ করেন নূর হোসেন। এছাড়া তার অন্যান্য স্থাবর ও অবস্থাবর সম্পদের হিসাবে গড়মিল পাওয়া যায়।